চন্দননগর, 11 নভেম্বর: চন্দননগরের জগদ্ধাত্রী পুজোর শোভাযাত্রার নাম দেশজোড়া। আজ দশমী ৷ রীতি মেনেই 117টি প্রতিমার 69টি পুজো রাতের শোভাযাত্রায় অংশ নিতে চলেছে ৷ তারমধ্যে ভদ্রেশ্বর তেঁতুলতলা বারোয়ারির প্রতিমাও রয়েছেন ৷ সোমবার দুপুরে নিয়মরীতি মেনে বারোয়ারি কর্তৃপক্ষ প্রতিমা বরণ করে ৷ 232 বছরের এই পুজোয় মহিলা সেজে পুরুষরাই মা জগদ্ধাত্রীর বরণ করে আসছেন । শাড়ি পরে, মাথায় ঘোমটা দিয়ে, লাল টিপ পরে পুজো উদ্যেক্তারা মা হৈমন্তিকাকে বরণ করেন ৷
জগদ্ধাত্রী প্রতিমার বরণ-
পুজো উদ্যোক্তারাই বলছেন, "শোনা যায় ইংরেজ ছাউনি ছিল ভদ্রেশ্বর গৌরহাটি এলাকায়। সেই সময় নিরাপত্তার কারণে বাড়ির মহিলারা বেরতে পারতেন না। তাঁদের অন্দরমহলেই রাখা হত।
তাই তৎকালীন সময়ে জগদ্ধাত্রী পুজোর আচার অনুষ্ঠান পুরুষরাই সামলাতেন। সেই ঐতিহ্য মেনে এখনও মহিলাদের মতোই শাড়ি পরে, মাথায় সিঁদুর দিয়ে, আজও তাঁরা বরণডালা হাতে তুলে নেন ৷ তা দেখতে ভিড় জমান বহু মানুষ।
তেঁতুলতলা বারোয়ারির জগদ্ধাত্রী পুজো-
তেঁতুলতলা বারোয়ারি জগদ্ধাত্রী পুজোর ইতিহাস সুগভীর। প্রায় 250 বছর আগে কৃষ্ণনগরের রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের দেওয়ান দাতারাম সুর গৌরহাটিতে বাস করতেন। তিনি রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের অনুমতি নিয়ে দুই বিধবা কন্যার সঙ্গে নিজবাড়িতে জগদ্ধাত্রী পুজো করতেন। কালের নিয়ে সেই পুজো থমকে যায়। আর সেই জগদ্ধাত্রী পুজো পরে শুরু হয় তেঁতুলতলা বারোয়ারি নামে। ইংরেজ শাসনকালেই এই অঞ্চল জঙ্গলে ভরা ছিল।
মহিলারা বাড়ির অন্দরে থাকতেন। অত্যাচারের আতঙ্কে বাড়ি থেকে বেরতেন না। সেই পরিস্থিতিতে শুরু হওয়া পুরুষদের বরণের রীতি আজও চলে আসছে। তেঁতুলতলা বারোয়ারি সদস্য প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় বলেন, "মহিলারা সাধারণত যেভাবে বরণ করেন সেই রীতি আমরা ছেলেরাও মেনে চলি ৷ এবছর মোট 17 জন পুরুষ মিলে তেঁতুলতলা জগদ্ধাত্রী মায়ের বরণ করছি।"