ওয়াশিংটন, 14 ফেব্রুয়ারি: বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে কথা বললেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ৷ এই বিষয়ে ভারতের উদ্বেগের কথা জানানোর পাশাপাশি দিল্লি কীভাবে এই পরিস্থিতিকে দেখছে সেই বিষয়টিও মার্কিন প্রেসিডেন্টকে জানিয়েছেন মোদি ৷ ট্রাম্প তাঁকে জানিয়েছেন, বাংলাদেশের বিষয়টি তিনি মোদির উপরই ছাড়ছেন ৷ সে দেশ নিয়ে আমেরিকার কোনও বিশেষ ভূমিকা নেই বলেও জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ৷ বাংলাদেশ নিয়ে মোদি ও ট্রাম্পের আলোচনার বিষয়টি শুক্রবার জানিয়েছেন বিদেশসচিব বিক্রম মিস্রি ।
বৃহস্পতিবার (ভারতীয় সময়ে শুক্রবার) হোয়াইট হাউসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে আলোচনায় দু দেশের দ্বিপাক্ষিক, আঞ্চলিক এবং বিশ্বের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা হয় । সাংবাদিক সম্মেলনে বিদেশসচিব মিস্রি বলেন, দুই নেতার মধ্যে আলোচনার বিষয়গুলির মধ্যে ছিল বাংলাদেশের পরিস্থিতিও ।

তাঁর কথায়, "প্রধানমন্ত্রী তাঁর মতামত এবং বাংলাদেশের সাম্প্রতিক ঘটনাবলী ও ভারত সেখানকার পরিস্থিতিকে কীভাবে দেখছে তা জানিয়ে এবিষয়ে তাঁর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ৷" বিদেশসচিব আরও বলেন, "আমরা আশা করি বাংলাদেশের পরিস্থিতি এমন একটি দিকে এগিয়ে যাবে যেখানে আমরা তাদের সঙ্গে গঠনমূলক এবং স্থিতিশীলভাবে সম্পর্ক চালিয়ে যেতে পারব ৷ তবে সেখানকার পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে এবং প্রধানমন্ত্রী প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে সেই মতামত ভাগ করে নিয়েছেন ৷"
এর আগে, প্রধানমন্ত্রী মোদির সঙ্গে সাক্ষাতের পর হোয়াইট হাউসে বক্তব্য রাখার সময় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন যে, বাংলাদেশের পরিস্থিতি মার্কিন 'ডিপ স্টেট'-এর সঙ্গে সম্পর্কিত নয় ৷ এ বিষয়টি উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশের বিষয়টি তিনি প্রধানমন্ত্রী মোদির উপরই ছাড়ছেন । তাঁর কথায়, "আমাদের ডিপ স্টেটের কোনও ভূমিকা ছিল না...এটি এমন একটি বিষয় যা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছেন...সত্যি বলতে, আমি এই বিষয়টি সম্পর্কে পড়ছি, বাংলাদেশের বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর উপরই ছেড়ে দেব ৷"
প্রসঙ্গত, আগস্ট মাসে সরকারবিরোধী বিশাল বিক্ষোভের মুখে পদচ্যুত বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঢাকা ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার পর ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কে তীব্র অবনতি দেখা দেয় । সে দেশে হিংসার জেরে 600-রও বেশি মানুষের প্রাণ গিয়েছে ৷ হাসিনা ভারতে চলে আসার পর মহম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সংখ্যালঘুদের, বিশেষ করে হিন্দুদের উপর আক্রমণ বন্ধ করতে ব্যর্থ হয় ৷ এর ফলে প্রতিবেশী দুই দেশের সম্পর্কের আরও অবনতি ঘটে । গত বছরের ডিসেম্বরে বাংলাদেশ সফরে গিয়েছিলেন বিদেশসচিব বিক্রম মিস্রি । তাঁর সফরকালে 'ভালো কর্ম-সম্পর্ক' বজায় রাখতে সম্মত হয় ভারত ও বাংলাদেশ ।