ETV Bharat / international

কোনও পোশাকেই দেশে থাকবে না ভারতীয় সেনা, মুইজ্জুর হুঁশিয়ারিতে ফের সংকটে ভারত-মলদ্বীপ সম্পর্ক

No Indian Troops To Stay In Maldives: ভারত-মলদ্বীপ জটিলতা ক্রমশ বাড়ছে ৷ এর আগে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল, মলদ্বীপে থাকা ভারতীয় সেনা কর্মীদের বেসামরিক কর্মীদের দ্বারা প্রতিস্থাপিত করা হবে ৷ তারপরেই রাষ্ট্রপ্রধান মুইজ্জু জানিয়ে দেন, কোনও পোশাকেই ভারতীয় সেনা সেদেশে থাকতে পারবে না ৷ ফলে আরও কঠিন হল ভারত-মালদ্বীপ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ৷ লিখলেন ইটিভি ভারতের অরুণিম ভুঁইঞা...

Etv Bharat
Etv Bharat
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Mar 5, 2024, 6:16 PM IST

মাল, 5 মার্চ: দেশে থাকতে পারবে না কোনও ভারতীয় সেনা, ফের একবার হুঁশিয়ারি মলদ্বীপের রাষ্ট্রপ্রধানের ৷ দু’দেশের চুক্তির পর ভারত ইতিমধ্যেই মলদ্বীপে নিযুক্ত সামরিক কর্মীদের প্রতিস্থাপনের প্রক্রিয়া শুরু করেছে ৷ তারমধ্যেই ফের একবার সে দেশের রাষ্ট্রপ্রধান মহম্মদ মুইজ্জু জানিয়ে দিলেন, ‘ভারতীয় সেনাদের কোনও পোশাকেই’ তাঁর দেশে থাকতে দেওয়া হবে না ।

এর আগে রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের পাবলিক পলিসি সেক্রেটারি আবদুল্লাহ নাজিম ইব্রাহিম জানিয়েছিলেন, রাষ্ট্রপতি মুইজু আনুষ্ঠানিকভাবে 15 মার্চের মধ্যে ভারতকে সেনাবাহিনী প্রত্যাহার করতে বলেছেন ৷ তারপরেই দু’দেশের দু’টি বৈঠকের পর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে এই সামরিক কর্মীদের বেসামরিক ভারতীয় কর্মীদের দ্বারা প্রতিস্থাপিত করা হবে ৷ প্রথম ব্যাচটি 10 মার্চ এবং শেষ ব্যাচটি 10 মে বদলানো হবে । ফেব্রুয়ারির শেষ সপ্তাহে ভারতীয় নাগরিকদের প্রথম ব্যাচ মলদ্বীপে পৌঁছেছিল । তারপরেই মুইজ্জুর এই দাবি ফের জটিলতা বাড়াল ৷

মলদ্বীপের একটি সংবাদ সংস্থা এডিশন.এমভি’কে মুইজু বলেন, ‘‘10 মে’র পর দেশে কোনও ভারতীয় সৈন্য থাকবে না ৷ ইউনিফর্ম ছাড়াও বেসামরিক পোশাকেও তারা থাকবে না । ভারতীয় সামরিক বাহিনী এদেশে কোনও পোশাকেই থাকবে না । আমি আত্মবিশ্বাসের সঙ্গেই এটা বলছি ।” মুইজ্জু আইধাফুশিতে এক বক্তৃতায় বলেন, “এই লোকেরা (ভারতীয় সামরিকবাহিনীর সদস্য) চলে যাচ্ছে না, তারা তাদের পোশাক পরিবর্তন করে ফিরে আসছে ৷’’

গত কয়েক মাস ধরেই নয়াদিল্লি ও মালের মধ্যে উত্তেজনা বাড়ছে । মুইজ্জু 2023 সালের নভেম্বরে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব গ্রহণ করেন । তাঁর নির্বাচনী প্রচারে তিনি বলেছিলেন যে, তিনি তাঁর দ্বীপরাষ্ট্র থেকে প্রায় 75 জন ভারতীয় সামরিক কর্মীদের একটি ছোট দলকে সরিয়ে দেবেন এবং মালদ্বীপের 'ভারত প্রথম' নীতি পরিবর্তন করবেন ।

এরপরেই স্বাস্থ্যখাতকে লক্ষ্য করে নয়াদিল্লির ওপর চাপ সৃষ্টি করছে মাল । চিকিৎসার জন্য মলদ্বীপের সার্বজনীন স্বাস্থ্যবীমা প্রকল্প, ‘আসান্ধা’র (Aasandha) অধীনে তালিকাভুক্ত হাসপাতালগুলি শুধুমাত্র ভারত এবং শ্রীলঙ্কায় থাকলেও তার সিংহভাগ ছিল ভারতে । বিদেশী হাসপাতালে আসান্ধার বিতরণ করা সবচেয়ে বেশি অর্থ ভারতীয় হাসপাতালে গিয়েছে । মুইজ্জুর নির্দেশের পরেই এখন তাইল্যান্ড এবং সংযুক্ত আরব আমিরশাহীর (ইউএই) সঙ্গেও আলোচনা করছে সেদেশ । দু’দেশই চিকিৎসা পরিষেবা প্রদানকারীদের মধ্যে শীর্ষে থাকলেও সেদেশ খরচ অপেক্ষাকৃত বেশি ।

সর্বশেষ সরকারি পরিসংখ্যান অনুসারে, মলদ্বীপে 88 জন ভারতীয় সামরিক কর্মী রয়েছেন । সান অনলাইন সংবাদপত্র জানিয়েছে, ভারতীয় সেনারা মলদ্বীপে থাকতে পারবেন না । এটি রাষ্ট্রপতি মুইজু ও তাঁর প্রশাসনের ঘোষিত সিদ্ধান্ত। মহম্মদ মুইজু 2023 সালের নভেম্বরে মলদ্বীপের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন ৷ নির্বাচনী প্রচারেই তাঁর ভারত বিরোধী মনোভাব প্রকাশ্যে এসেছিল ৷ মুইজু জানিয়েছিলেন, ক্ষমতায় এলে তিনি মলদ্বীপ থেকে প্রায় 75 জন ভারতীয় সামরিক কর্মীদের ছোট দলকে দেশ থেকে সরিয়ে দেবেন এবং মলদ্বীপের 'প্রথম ভারত' নীতিতেও পরিবর্তন আনবেন ৷ সেনা প্রত্যাহারের সময় ঠিক করে দিয়ে তারই শুরুটা হয়ে গেল বলে মত কূটনৈতিক মহলের একটা বড় অংশের।

অতীতে মলদ্বীপের রাষ্ট্রপ্রধানরাই বিস্তৃত দ্বি-পাক্ষিক সম্পর্ক এবং ভারতের সঙ্গে সে দেশের সম্পর্ক বিবেচনা করে প্রথমেই ভারত সফর করেছিলেন ৷ তারপরে চিন সফরে যান ৷ চিন মলদ্বীপে বড় প্রকল্পে বিনিয়োগ করে দ্বীপরাষ্ট্রে তার প্রভাব বিস্তার করেছে । মুইজুই প্রথম রাষ্ট্রপ্রধান যিনি প্রথমে চিন সফরে যান ৷

সম্প্রতি লাক্ষাদ্বীপ সফরে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ৷ তাঁর এই সফরকে ঘিরে অবমাননাকর মন্তব্য করেন মলদ্বীপের তিন মন্ত্রী ৷ এরপরেই এই দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক চাপানউতোর তৈরি হয় । পরে অবশ্য ওই তিন মন্ত্রীকে সাসপেন্ড করেছে মলদ্বীপ সরকার ৷

আরও পড়ুন:

মাল, 5 মার্চ: দেশে থাকতে পারবে না কোনও ভারতীয় সেনা, ফের একবার হুঁশিয়ারি মলদ্বীপের রাষ্ট্রপ্রধানের ৷ দু’দেশের চুক্তির পর ভারত ইতিমধ্যেই মলদ্বীপে নিযুক্ত সামরিক কর্মীদের প্রতিস্থাপনের প্রক্রিয়া শুরু করেছে ৷ তারমধ্যেই ফের একবার সে দেশের রাষ্ট্রপ্রধান মহম্মদ মুইজ্জু জানিয়ে দিলেন, ‘ভারতীয় সেনাদের কোনও পোশাকেই’ তাঁর দেশে থাকতে দেওয়া হবে না ।

এর আগে রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের পাবলিক পলিসি সেক্রেটারি আবদুল্লাহ নাজিম ইব্রাহিম জানিয়েছিলেন, রাষ্ট্রপতি মুইজু আনুষ্ঠানিকভাবে 15 মার্চের মধ্যে ভারতকে সেনাবাহিনী প্রত্যাহার করতে বলেছেন ৷ তারপরেই দু’দেশের দু’টি বৈঠকের পর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে এই সামরিক কর্মীদের বেসামরিক ভারতীয় কর্মীদের দ্বারা প্রতিস্থাপিত করা হবে ৷ প্রথম ব্যাচটি 10 মার্চ এবং শেষ ব্যাচটি 10 মে বদলানো হবে । ফেব্রুয়ারির শেষ সপ্তাহে ভারতীয় নাগরিকদের প্রথম ব্যাচ মলদ্বীপে পৌঁছেছিল । তারপরেই মুইজ্জুর এই দাবি ফের জটিলতা বাড়াল ৷

মলদ্বীপের একটি সংবাদ সংস্থা এডিশন.এমভি’কে মুইজু বলেন, ‘‘10 মে’র পর দেশে কোনও ভারতীয় সৈন্য থাকবে না ৷ ইউনিফর্ম ছাড়াও বেসামরিক পোশাকেও তারা থাকবে না । ভারতীয় সামরিক বাহিনী এদেশে কোনও পোশাকেই থাকবে না । আমি আত্মবিশ্বাসের সঙ্গেই এটা বলছি ।” মুইজ্জু আইধাফুশিতে এক বক্তৃতায় বলেন, “এই লোকেরা (ভারতীয় সামরিকবাহিনীর সদস্য) চলে যাচ্ছে না, তারা তাদের পোশাক পরিবর্তন করে ফিরে আসছে ৷’’

গত কয়েক মাস ধরেই নয়াদিল্লি ও মালের মধ্যে উত্তেজনা বাড়ছে । মুইজ্জু 2023 সালের নভেম্বরে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব গ্রহণ করেন । তাঁর নির্বাচনী প্রচারে তিনি বলেছিলেন যে, তিনি তাঁর দ্বীপরাষ্ট্র থেকে প্রায় 75 জন ভারতীয় সামরিক কর্মীদের একটি ছোট দলকে সরিয়ে দেবেন এবং মালদ্বীপের 'ভারত প্রথম' নীতি পরিবর্তন করবেন ।

এরপরেই স্বাস্থ্যখাতকে লক্ষ্য করে নয়াদিল্লির ওপর চাপ সৃষ্টি করছে মাল । চিকিৎসার জন্য মলদ্বীপের সার্বজনীন স্বাস্থ্যবীমা প্রকল্প, ‘আসান্ধা’র (Aasandha) অধীনে তালিকাভুক্ত হাসপাতালগুলি শুধুমাত্র ভারত এবং শ্রীলঙ্কায় থাকলেও তার সিংহভাগ ছিল ভারতে । বিদেশী হাসপাতালে আসান্ধার বিতরণ করা সবচেয়ে বেশি অর্থ ভারতীয় হাসপাতালে গিয়েছে । মুইজ্জুর নির্দেশের পরেই এখন তাইল্যান্ড এবং সংযুক্ত আরব আমিরশাহীর (ইউএই) সঙ্গেও আলোচনা করছে সেদেশ । দু’দেশই চিকিৎসা পরিষেবা প্রদানকারীদের মধ্যে শীর্ষে থাকলেও সেদেশ খরচ অপেক্ষাকৃত বেশি ।

সর্বশেষ সরকারি পরিসংখ্যান অনুসারে, মলদ্বীপে 88 জন ভারতীয় সামরিক কর্মী রয়েছেন । সান অনলাইন সংবাদপত্র জানিয়েছে, ভারতীয় সেনারা মলদ্বীপে থাকতে পারবেন না । এটি রাষ্ট্রপতি মুইজু ও তাঁর প্রশাসনের ঘোষিত সিদ্ধান্ত। মহম্মদ মুইজু 2023 সালের নভেম্বরে মলদ্বীপের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন ৷ নির্বাচনী প্রচারেই তাঁর ভারত বিরোধী মনোভাব প্রকাশ্যে এসেছিল ৷ মুইজু জানিয়েছিলেন, ক্ষমতায় এলে তিনি মলদ্বীপ থেকে প্রায় 75 জন ভারতীয় সামরিক কর্মীদের ছোট দলকে দেশ থেকে সরিয়ে দেবেন এবং মলদ্বীপের 'প্রথম ভারত' নীতিতেও পরিবর্তন আনবেন ৷ সেনা প্রত্যাহারের সময় ঠিক করে দিয়ে তারই শুরুটা হয়ে গেল বলে মত কূটনৈতিক মহলের একটা বড় অংশের।

অতীতে মলদ্বীপের রাষ্ট্রপ্রধানরাই বিস্তৃত দ্বি-পাক্ষিক সম্পর্ক এবং ভারতের সঙ্গে সে দেশের সম্পর্ক বিবেচনা করে প্রথমেই ভারত সফর করেছিলেন ৷ তারপরে চিন সফরে যান ৷ চিন মলদ্বীপে বড় প্রকল্পে বিনিয়োগ করে দ্বীপরাষ্ট্রে তার প্রভাব বিস্তার করেছে । মুইজুই প্রথম রাষ্ট্রপ্রধান যিনি প্রথমে চিন সফরে যান ৷

সম্প্রতি লাক্ষাদ্বীপ সফরে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ৷ তাঁর এই সফরকে ঘিরে অবমাননাকর মন্তব্য করেন মলদ্বীপের তিন মন্ত্রী ৷ এরপরেই এই দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক চাপানউতোর তৈরি হয় । পরে অবশ্য ওই তিন মন্ত্রীকে সাসপেন্ড করেছে মলদ্বীপ সরকার ৷

আরও পড়ুন:

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.