কিভ, 20 নভেম্বর: বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ল রাশিয়া ৷ ইউক্রেনের পূর্ব-মধ্যে অবস্থিত নিপ্রো শহরকে নিশানা করে ইন্টার কনটিনেন্টাল ব্যালিস্টিক মিসাইল (আইসিবিএম) নিক্ষেপ করেছে পুতিনের দেশ। এমনই দাবি ইউক্রেন সরকারের ৷ এই খবর সত্যি হলে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে প্রথম এমন ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করলেন প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ৷
মঙ্গলবার, 19 নভেম্বর রাশিয়া নয়া নিউক্লিয়ার নীতিতে স্বাক্ষর করেছে ৷ তাতে ইউক্রেনকে অস্ত্র সাহায্য করা নিয়ে আমেরিকা-সহ পশ্চিমি দেশগুলিকে সতর্ক করেছিলেন পুতিন ৷ এরপরই পরমাণু অস্ত্র বহন করতে পারে এমন ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের খবর সামনে এল ৷
হামলার ফলাফল
মেসেজিং অ্যাপ টেলিগ্রাম-এ ইউক্রেনের বায়ুসেনা জানিয়েছে, এই ক্ষেপণাস্ত্রটি রাশিয়ার আসত্রাখান অঞ্চল থেকে ছোড়া হয়েছে ৷ জায়গাটি কাসপিয়ান সাগরের সীমান্তে অবস্থিত ৷ এই আইসিবিএম ক্ষেপণাস্ত্র ছাড়া আরও 8টি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে রাশিয়া ৷ তার মধ্যে 6টি ক্ষেপণাস্ত্র গুলি করে ধ্বংস করতে পেরেছে ইউক্রেন ৷ স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে খবর, এই হামলায় 2 জন আহত হয়েছেন ৷ একটি কারখানা, একটি বিশেষভাবে সক্ষম মানুষের জন্য নির্মিত রিহ্যাব সেন্টারও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে হামলায় ৷
কেন হামলা?
বিশেষজ্ঞদের মতে, ইন্টার কনটিনেন্টাল ব্যালিস্টিক মিসাইল (আইসিবিএম) ইউক্রেনের জন্য যথেষ্ট বিপজ্জনক ৷ এই ধরনের ক্ষেপণাস্ত্রগুলিকে এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে যাতে পরমাণু অস্ত্র রাখা যেতে পারে ৷ আইসিবিএম ছুড়ে রাশিয়া কার্যত ইউক্রেন-সহ পশ্চিমি দুনিয়া, বিশেষত আমেরিকাকে সতর্ক করল ৷ যুদ্ধ কতটা ভয়াবহ হতে পারে এবং রাশিয়ার অস্ত্রভাণ্ডার কতটা শক্তিশালী তারও একটা ইঙ্গিত দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট পুতিন ৷
রাশিয়ার নয়া নীতি
17 নভেম্বর জানা যায় আমেরিকার বিদায়ী প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইউক্রেনকে রাশিয়ার বিরুদ্ধে আমেরিকায় তৈরি দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারে অনুমতি দিয়েছেন ৷ এরপরই 19 নভেম্বর নিউক্লিয়ার যুদ্ধ নিয়ে রাশিয়ার নয়া নীতিতে স্বাক্ষর করেন প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ৷ ওই নীতিতে সাফ জানানো হয়েছে-
- পরমাণু অস্ত্র নেই এমন কোনও দেশ রাশিয়ার উপর বিধ্বংসী আক্রমণ শানালে এবং তাতে কোনও পরমাণু শক্তিধর দেশ মদত জোগালে, সেই হামলাকে দু'টি দেশের যৌথ আক্রমণ বলেই গণ্য করবে রাশিয়ান ফেডারেশন ৷
- বিশ্বের কোনও সামরিক জোটের সদস্যভুক্ত একটি দেশ যদি রাশিয়াকে আক্রমণ করে তাহলে মনে করা হবে পুরো জোটই এই হামলার সঙ্গে জড়িত ৷ তবে সেক্ষেত্রে রাশিয়া পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার করবে কি না, তা অবশ্য স্পষ্ট জানা যায়নি ৷ এদিন রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের সহস্রতম দিন ছিল ৷
এদিকে 19 নভেম্বর রাশিয়া জানায়, ইউক্রেন আমেরিকার সরবরাহ করা দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র এটিএসিএমএস (আর্মি ট্যাকটিকাল মিসাইল সিস্টেম) ছুড়েছে বেলারুস, ইউক্রেন ও রাশিয়া- তিনটি দেশের সীমান্তে ব্রায়ানস্ক অঞ্চলের কারাচেভ এলাকায় ৷ ইউক্রেনের ছোড়া 6টি এটিএসিএমএস ক্ষেপণাস্ত্রের মধ্যে মাত্র দু'টি ধ্বংস করতে পেরেছিল রাশিয়া ৷ এর উত্তরে শক্তিশালী আইসবিএম ছুড়ল রাশিয়া ৷