জেরুজালেম, 23 এপ্রিল: ইজরায়েলি হানায় কোনও ক্ষতি হয়নি ৷ এমন দাবি বারবার করা হচ্ছে তেহরানের পক্ষ থেকে ৷ কিন্তু স্যাটেলাইট থেকে তোলা ছবি অবশ্য অন্য কথা বলছে ৷ ওই ছবিতে স্পষ্ট হয়েছে যে ইরানের ইস্ফাহান শহরে রাশিয়ার তৈরি বিমান প্রতিরক্ষা ব্যাটারির জন্য একটি রাডার সিস্টেম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৷ ইজরায়েলের হানায় ওই রাডার সিস্টেম ক্ষতিগ্রস্থ হয় বলে মনে করা হচ্ছে ৷
তেহরান থেকে 320 কিলোমিটার দক্ষিণে ইস্ফাহানে বিমানবন্দর ও এয়ার বেস একসঙ্গে রয়েছে ৷ তারই কাছাকাছি রয়েছে বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ৷ সেই এলাকার ছবি সোমবার প্ল্যানেট ল্যাবস পিবিসি-র স্যাটেলাইট ছবিতে ধরা পড়ে ৷ ছবিতে ওই বিমান প্রতিরক্ষা ব্য়বস্থার কিছু অংশ পুড়ে যাওয়ার চিহ্ন রয়েছে ৷
গত 13 এপ্রিল ইজরায়েলে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছিল ইরান ৷ সেই হামলায় যা ক্ষতি হয়েছিল, তার থেকে বেশি ক্ষতি এস-300 রাডারে ইজরায়েলি হামলায় হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে ৷ তবে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি অবশ্য এই ধরনের কোনও হামলা ইরানে হওয়ার কথা অস্বীকার করেছেন ৷
ইরান ও ইজরায়েলকে মধ্যপ্রাচ্যে বরাবরই দুই প্রতিদ্বন্দ্বী দেশ হিসেবে দেখেন বিশেষজ্ঞরা ৷ বছরের পর বছর ধরে এই দুই দেশে ছায়াযুদ্ধ চলে আসছে ৷ কিন্তু এখন বেশ কয়েকবার আক্রমণ প্রতি আক্রমণের পর তারা উত্তেজনা প্রশমনের চেষ্টা করছে ৷ এর সম্ভাব্য় কারণ, ইজরায়েল এখনও গাজা স্ট্রিপে তাদের অভিযান থামায়নি ৷ সেখানে এখনও উত্তেজনা রয়েছে ৷
তার পরও ইরানের উপর ইজরায়েলের এই হামলার অন্য তাৎপর্য রয়েছে ৷ কারণ, ইরান তার পারমাণবিক অস্ত্র সম্ভার রক্ষা করতে শক্তিশালী বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা তৈরি করে রেখেছে ৷ আর সেই প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার উপরই হামলা চালিয়েছে ইজরায়েল ৷ এই হামলা প্রমাণ করছে যে ইজরায়েল ইরানের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় আঘাত হানতে সক্ষম, এমনটাই জানিয়েছেন নিকোলে গ্রাজেওস্কি ৷ তিনি কারনেজ এনডাউমেন্টস নিউক্লিয়ার প্রোগ্রামের ফেলো ৷
শুক্রবারও একটি স্যাটেলাইট ছবিতে এই ধরনের পোড়া এলাকা ধরা পড়েছিল ৷ কিন্তু সেই ছবি স্পষ্ট ছিল না ৷ তবে সোমবারের ছবিতে বিষয়টি আরও স্পষ্ট হয়েছে ৷ ক্রিস বিগার্স নামে এক বিশেষজ্ঞ জানিয়েছেন যে সেখান থেকে মিসাইল সিস্টেম সরিয়ে নিয়েছে ইরান ৷ তবে তাদের পারমাণবিক অস্ত্র এখনও পর্যাপ্ত সুরক্ষার মধ্য়ে রাখা হয়েছে ৷
শুক্রবার ইজরায়েলের তরফে এই হামলা চালানো হয় ৷ সেদিন ইরান বাণিজ্য়িক উড়ান বন্ধ করে দেওয়া হয় ৷ তার পরও ইরানের বিদেশমন্ত্রী হোসাইন আমির আব্দুল্লাহিয়ান জানিয়েছেন, তাদের দেশে কোনও হামলা হয়নি ৷ কিন্তু স্যাটেলাইট ছবি থেকে যে তথ্য পাওয়া গিয়েছে, তার থেকে এটা স্পষ্ট যে এস-300 বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার জন্য ব্যবহৃত রাডার মেরামতিতে রাশিয়ার সাহায্য প্রয়োজন হবে ইরানের ৷ তারা সেই সাহায্য চাইলেই ইজরায়েলি হানায় ক্ষতির বিষয়টি স্পষ্ট হবে ৷
আরও পড়ুন: