অটোয়া, 24 অক্টোবর: লিবারেল নেতা হিসেবে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর পদত্যাগের দাবি জোড়াল হচ্ছে নিজের দলের ভিতরেই ৷ লিবারেল দলের অন্দরেই তীব্র হয়েছে ট্রুডোর পদত্যাগের দাবি ৷ এমনকী বুধবার লিবারেল সাংসদরা পার্লামেন্ট হিলে এই ইস্যুতে একজোটও হয়েছিলেন বলে খবর।
রুদ্ধদ্বার এক বৈঠক চলাকালীন দলের অন্যান্য সাংসদরা ট্রুডোর কাছে তাঁদের অভিযোগ জানান ৷ ফলে ট্রুডোর দলের মধ্যে যে ক্রমবর্ধমান অসন্তোষ দানা বাঁধছে তাঁকে ঘিরে তা ফের স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে ৷ হাউস অফ কমন্সের অধিবেশন চলাকালীন এই বৈঠকটি সাপ্তাহিক এক বৈঠকের অংশ ছিল বলে জানা গিয়েছে। বুধবারের বৈঠকে সাংসদরা তাঁদের উদ্বেগ এবং হতাশা সরাসরি প্রধানমন্ত্রী ট্রুডোর কাছে প্রকাশ করেন ৷
সরাসরি দলের শীর্ষ নেতা তথা দেশের প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে দলেরই অনাস্থা প্রকাশের জেরে স্পষ্ট ট্রুডো তাঁর নিজের দলের মধ্যেই যথেষ্ট চাপে রয়েছেন ৷ জানা গিয়েছে, লিবারেল সাংসদরা ট্রুডোকে 28 অক্টোবরের মধ্যে তাঁর ভবিষ্যৎ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য চূড়ান্ত সময়সীমাও বেঁধে দিয়েছেন। বুধবার ককাস বৈঠকের সময়, ট্রুডোর পদত্যাগের রূপরেখা দিয়ে একটি নথিও সামনে আনা হয়েছিল ৷ একই সঙ্গে, সাংসদদের বেঁধে দেওয়া নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে ট্রুডো পদত্যাগ না হলে পরিণতি কী হবে, তা নিয়েও ধন্ধ বেড়েছে ৷ সূত্রের খবর, 24 জন এমপি ট্রুডোকে লিবারেল নেতার পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর জন্য সর্বসম্মতিতে একটি চুক্তিতেও স্বাক্ষর করেছেন ৷
বৈঠকের সময় ব্রিটিশ কলম্বিয়ার সাংসদ প্যাট্রিক ওয়েইলার একটি নথিও উপস্থাপন করেন বলে জানা যায় ৷ নথিতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন দেশে আসন্ন রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা থেকে সরে দাঁড়িয়েছে ৷ ডেমোক্র্যাটরা যা দেখেছে তার অনুরূপ লিবারেল পার্টিতেও পুনরুত্থান হতে পারে। তিন ঘণ্টার বৈঠকে সংসদ সদস্যদের কক্ষে ভাষণ দেওয়ার জন্য প্রত্যেককে দুই মিনিট সময় দেওয়া হয়েছিল। প্রায় 20 জন ট্রুডোকে পরবর্তী নির্বাচনের আগে সরে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করেছেন ৷ তবে বেশ কয়েকজন সাংসদও প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে সমর্থন জানিয়েছিলেন বলেও খবর ৷
দেশের অভিবাসন মন্ত্রী মার্ক মিলার কিছু লিবারেল এমপিদের হতাশার কথা স্বীকার করেছেন ৷ যাঁরা বৈঠকে সরাসরি ট্রুডোর কাছে তাঁদের উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ৷ কানাডার রাজনৈতিক ফাটল প্রকৃতপক্ষে ভারত ও কানাডার মধ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনা দ্বারা ইন্ধন দেওয়া হয়েছে। গত বছর কানাডিয়ান পার্লামেন্টে ট্রুডো অভিযোগ করার পর ভারত ও কানাডার মধ্যে সম্পর্ক খারাপ হয়েছে ৷ খালিস্তানি সন্ত্রাসী হরদীপ সিং নিজ্জার হত্যায় ভারতের হাত রয়েছে বলে অভিযোগ ট্রুডোর ৷ ভারত অবশ্য সব অভিযোগ অস্বীকার করেছে ৷ পাল্টা কানাডাকে তাদের দেশে চরমপন্থী এবং ভারত-বিরোধীদের স্থান দেওয়ার অভিযোগ করেছে।