নয়াদিল্লি, 20 মার্চ: প্রতিবেশী দেশকে ফের সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করল ভারত ৷ শ্রীলঙ্কাকে 61.5 মিলিয়ন মার্কিন ডলার অনুদান দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নয়াদিল্লি ৷ এই টাকায় শ্রীলঙ্কার উত্তরাঞ্চলে অব্সথিত কানকেসান্থুরাই (কেকেএস) বন্দরকে নতুনভাবে গড়ে তোলার কাজ সম্পন্ন হবে । শ্রীলঙ্কার বন্দর, নৌপরিবহণ এবং বিমান পরিবহণ মন্ত্রী নিমাল সিরিপালা ডি সিলভা ও শ্রীলঙ্কায় ভারতীয় হাইকমিশনার সন্তোষ ঝা-এর মধ্যে বৈঠক হয় ৷ সেই বৈঠকে প্রকল্প নিয়ে দু'দেশের সহযোগিতার বিষয়ে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে । এমনটাই ডেইলি মিরর নিউজ ওয়েবসাইটের রিপোর্টে প্রকাশিত হয়েছে ৷
ওই রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, প্রকল্পের অংশ হিসেবে জোয়ার-ভাটা, স্রোত, ঢেউ এবং ঝড় থেকে রক্ষা করার জন্য একটি ব্রেক ওয়াটার বা স্থায়ী কাঠামো নির্মাণ করা হবে । বন্দরটি 30 মিটার গভীরতায় ড্রেজ করা হবে ৷ তার ফলে গভীর-খসড়া জাহাজও সেখানে দাঁড়াতে পারে । আলোচনার সময় ভারতীয় হাইকমিশনার দুই দেশের মধ্যে আঞ্চলিক সহযোগিতা বাড়ানোর জন্য নয়াদিল্লির প্রতিশ্রুতির খতা জানিয়েছেন এবং শ্রীলঙ্কায় যেতে আরও বেশি সংখ্যক ভারতীয় পর্যটক যাতে আকৃষ্ট হন সেই ব্যাপারে সর্বাত্মক সহায়তার প্রতিশ্রুতিও দেন ৷
সন্তোষ ঝা জানান, কেন্দ্রীয় সরকার শ্রীলঙ্কাকে ভারতীয় পর্যটকদের জন্য শীর্ষ ভ্রমণ ক্ষেত্র হিসাবে গণ্য করেছে । জবাবে, শ্রীলঙ্কার মন্ত্রী তাঁদের সরকার এবং তাঁর মন্ত্রকের পক্ষ থেকে বিমান ও নৌপরিবহণের ক্ষেত্রে ভারত সরকার কর্তৃক প্রদত্ত সহায়তার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন । তিনি বিশেষভাবে চেন্নাই এবং জাফনার মধ্যে বিমান পরিষেবা শুরুর প্রশংসা করেছেন ।
শ্রীলঙ্কার মন্ত্রী আরও জানান, ভারতীয় পর্যটকদের সুবিধার্থে বন্দরে 600 মিলিয়ন এসএলআর ব্যয়ের একটি নতুন টার্মিনালও নির্মাণ করা হবে । গত 9 মাসে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ভারতীয় পর্যটক দ্বীপরাষ্ট্রে এসেছেন । শ্রীলঙ্কার উত্তরাঞ্চলে অবস্থিত কেকেএস বন্দরটি প্রায় 16 একর এলাকা জুড়ে রয়েছে । বন্দরটি ভারতের পন্ডিচেরির কারাইকাল বন্দর থেকে 56 নটিক্যাল মাইল দূরে অবস্থিত । ওভারল্যান্ড ভ্রমণের ক্ষেত্রে বন্দর এবং নিকটতম ভূমির মধ্যে দূরত্ব প্রায় 23 কিমি ।
শ্রীলঙ্কা পোর্ট অথরিটি অনুসারে, কেকেএস বন্দরের সমৃদ্ধ এবং দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে ৷ এই বন্দরটি 1950 সালে কানকেসান্থুরাইতে সিমেন্ট কারখানার প্রতিষ্ঠার সঙ্গে সঙ্গে বাণিজ্যিক বন্দর হিসাবে তার কার্যক্রম শুরু করে । এই বন্দর একসময় শ্রীলঙ্কা নৌবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে ছিল ৷ গৃহযুদ্ধের সময়ে জাতিকে সেবা দিয়েছিল । শ্রীলঙ্কা সরকার বন্দরের অপার সম্ভাবনার কথা স্বীকার করে এটিকে ভারত ও শ্রীলঙ্কার মধ্যে একটি পর্যটন বন্দরে রূপান্তর করার সিদ্ধান্ত নেয় । সেই কাজেই সাহায্য করছে ভারত।
আরও পড়ুন: