নয়াদিল্লি, 25 জানুয়ারি: পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই (ইন্টার-সার্ভিসেস ইনটেলিজেন্স) তাদের চার শীর্ষ সদস্যকে গোপনে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় পাঠিয়েছে। এই তথ্য দিয়ে ভারতের বিদেশ মন্ত্রক জানিয়েছে, ভারত তার পড়শি দেশগুলিতে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলির উপর নজর রাখছে। বিশেষ করে, ভারত সেই সব ঘটনায় নজর রাখছে, যেগুলি তার দেশের নিরাপত্তাকে প্রভাবিত করতে পারে। এর কড়া প্রতিক্রিয়ায় বিদেশ মন্ত্রক বলেছে, প্রয়োজনে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে।
ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল এদিন বলেন, "ভারতের চারপাশে কী কী হচ্ছে, তাতে আমরা নজর রাখছি। দেশের সুরক্ষায় প্রভাব পড়বে, এমন কোনও কার্যকলাপ হলে, প্রযোজন পড়লে 'উপযুক্ত ব্যবস্থা' নেওয়া হবে। বাংলাদেশের প্রতি ভারতের দৃষ্টিভঙ্গি বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখা। তিনি বলেন, "আমরা একটি গণতান্ত্রিক, প্রগতিশীল বাংলাদেশকে সমর্থন করি। আমরা আমাদের সম্পর্ক জোরদার করতে চাই, যাতে ভারত ও বাংলাদেশের মানুষ মানুষের উপকার হয়।"
উল্লেখ্য, কিছুদিন আগে পাকিস্তানি গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই-এর বিশ্লেষণ বিভাগের ডিরেক্টর জেলারেল মেজর জেনারেল শাহিদ আমির আফসার এবং আরও কিছু কর্তা বর্তমানে ঢাকা সফরে রয়েছেন। বাংলাদেশের সেনা প্রতিনিধিদলের রাওয়ালপিন্ডি সফরে সেখানে তিন পাক সেনাপ্রধানের সঙ্গে বৈঠক হয় ৷ এর পরেই পাকিস্তানের গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই-এর প্রতিনিধি দল ঢাকায় আসে ৷
রাওয়ালপিন্ডি সফরে যাওয়া ছয় সদস্যের বাংলাদেশি প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে ছিলেন বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লেফটেন্যান্ট জেনারেল এসএম কামরুল হাসান। জানা গিয়েছে, পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল আসিম মুনিরের সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ দৈঠক হয় তাঁর। শুধু তাই নয়, বাংলাদেশি প্রতিনিধি দল প্রায় দিন পাঁচেক পাকিস্তানে ছিল।
সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পরে সামরিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশ আবার পাকিস্তানের সঙ্গে যোগসূত্র বাড়ানোর চেষ্টা করছে। তাই হয়তো এক সপ্তাহের মধ্যে একে অপরের দেশে গেলেন পাকিস্তান ও বাংলাদেশের সেনা কর্তারা। যদিও আইএসআইয়ের প্রতিনিধি দলের সফর নিয়ে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের তরফে কোনও মন্তব্য করা হয়নি। এর আগে আন্তর্জাতিক সীমান্তে উত্তেজনার আবহে ভারতের হাই-কমিশনারকে ডেকে পাঠায় বাংলাদেশের বিদেশ মন্ত্রক। সে সময় সংবাদসংস্থা পিটিআইয়ের তরফে জানানো হয়, সীমান্তের কাঁটাতারের বেড়া লাগানোর প্রসঙ্গে ভারতের হাই-কমিশনারকে তলব করে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের মত, এভাবে বেড়া তৈরি করে আন্তর্জাতিক চুক্তির শর্ত ভেঙেছে ভারত।