ঢাকা, 28 জুলাই: ফের বিক্ষোভ শুরু করার হুঁশিয়ারি দিয়েছে বাংলাদেশি ছাত্ররা ৷ ইতিমধ্যেই প্রাণঘাতী আন্দোলনের জেরে সে দেশে চরম অস্থিরতার জন্ম দিয়েছে ৷ এরপর ফের ছাত্ররা হুঁশিয়ারি দিয়ে জানিয়েছে, যদি তাদের কয়েকজন ছাত্রনেতাকে রবিবার হেফাজত থেকে মুক্তি না দেওয়া হয় তবে ফের তারা সেই রক্তক্ষয়ী আন্দোলনের পথেই হাঁটবে ৷
গত সপ্তাহে চরম হিংসার প্রভাবে কমপক্ষে 205 জনের মৃত্যু হয়েছে দেশে ৷ সংবাদসংস্থা এএফপি সূত্রে খবর, পুলিশ ও হাসপাতালের তথ্য অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার 15 বছরের মেয়াদে সবচেয়ে বড় হিংসার ঘটনার মধ্যে এটি একটি ৷ এক সপ্তাহেরও বেশি সময় পার হয়ে গেলেও এখনও সেনাবাহিনীর টহল এবং দেশব্যাপী কারফিউ জারি রয়েছে ৷ পুলিশ ইতিমধ্যে কমপক্ষে বেশ কয়েকজন ছাত্র নেতা-সহ কয়েক হাজার বিক্ষোভকারীকে আটক করেছে। ছাত্ররা অবশ্য জানিয়েছে, তারা তাদের প্রতিবাদ এক সপ্তাহের স্থগিত করছে।
এর মাঝেই শনিবার গভীর রাতে এক ভিডিয়ো বার্তায় আব্দুল হান্নান মাসুদ বলেন, "গ্রুপের প্রধান নাহিদ ইসলাম এবং অন্যদের অবিলম্বে মুক্তি দেওয়া উচিত ৷ তাদের বিরুদ্ধে যেসব মামলা রয়েছে তাও প্রত্যাহার করা উচিত ৷" মাসুদ আত্মগোপনে থেকেই বিক্ষোভকারীদের মৃত্যুর জন্য দায়ী মন্ত্রী এবং পুলিশ আধিকারিকদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেওয়ারও দাবি জানান। তাঁর কথায়, "যদি এই দাবি মানা না হয়, তবে ছাত্ররা সোমবার থেকে আরও প্রবল বিক্ষোভ শুরু করতে বাধ্য হবে ৷"
দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান শুক্রবার সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, তিনজনকে পুলিশ তাদের নিজেদের নিরাপত্তার জন্য হেফাজতে নিয়েছে ৷ তবে আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রেফতার করা হয়েছে কি না, তা নিশ্চিত করেননি তিনি। পুলিশ রবিবার এএফপিকে জানিয়েছে, গোয়েন্দারা আরও দুজনকে হেফাজতে নিয়েছে ৷ অন্যদিকে, 'স্টুডেন্টস অ্যাগেইনস্ট ডিসক্রিমিনেশন অ্যাক্টিভিস্ট' এএফপিকে জানিয়েছে, তৃতীয় জনকে রবিবার সকালে নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে ৷
সংবাদসংস্থা সূত্রে খবর, অস্থিরতা শুরু হওয়ার পর থেকে অন্তত 9000 জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গত সপ্তাহের তুলনায় কারফিউও কিছুটা শিথিল করা হয়েছে। 11 দিন পর বাংলাদেশের মোবাইল ইন্টারনেট নেটওয়ার্কও চালু করা হয়েছে ৷ ফিক্সড লাইন ব্রডব্যান্ড সংযোগগুলি ইতিমধ্যেই মঙ্গলবার পুনরুদ্ধার করা হয়েছে ৷ তবে জাতীয় টেলিকম নিয়ন্ত্রক সংস্থা অনুসারে, বাংলাদেশের 141 মিলিয়ন ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের বেশিরভাগই তাদের মোবাইল ডিভাইসের উপর নির্ভর করে বিশ্বের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনের জন্য। হাসিনার পদত্যাগের দাবিতে রবিবার ঢাকায় একটি ছোট পথসভা অনুষ্ঠিত হলে পুলিশ তা দ্রুত ছত্রভঙ্গ করে দেয়। (এএফপি)