কলকাতা: হাইপারইউরিসেমিয়া অর্থাৎ উচ্চ মাত্রার ইউরিক অ্যাসিড শরীরে অনেক রোগের কারণ হয় । আমাদের শরীরে ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ বেড়ে গেলে জয়েন্টে ব্যথা, হাঁটতে অসুবিধা এবং উঠতে ও বসতে অসুবিধা হয় । এর সবচেয়ে বড় প্রভাব পড়ে আমাদের জয়েন্টগুলিতে । বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সমস্যা বাড়ে । এটি সরাসরি প্রোটিনের বর্ধিত পরিমাণের সঙ্গে সম্পর্কিত । প্রোটিন এবং পিউরিন অতিরিক্ত গ্রহণের কারণে ইউরিক অ্যাসিড বৃদ্ধি পায় ।
ইউরিক অ্যাসিড নিয়ন্ত্রণ করতে হলে খাদ্যাভ্যাসের প্রতি বিশেষ নজর দেওয়া জরুরি । কিছু খাবার, বিশেষ করে ডাল, বিন, ছোলা আমাদের শরীরে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বাড়াতে পারে ৷ তাই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে নিয়ন্ত্রণের সঙ্গে খাওয়া উচিত । উত্তরপ্রদেশের হারদোইতে শতায়ু আয়ুর্বেদ এবং পঞ্চকর্মা কেন্দ্রের পরিচালক ডঃ অমিত কুমার বলেন, "যাতে ইউরিক অ্যাসিড বাড়তে না পারে সেজন্য নজর দেওয়া উচিত ৷ এটিতে আক্রান্ত ব্যক্তিদের কী খাওয়া উচিত এবং কী খাওয়া উচিত নয় তা আগা জানা প্রয়োজন ।"
ডাঃ অমিত কুমারের মতে, আমাদের বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের কিডনি প্রোটিন পুরোপুরি হজম করতে অক্ষম হয় ৷ যার কারণে কিডনি সঠিকভাবে কাজ করে না । কিডনি যখন তাদের কাজ ঠিকমতো করতে পারে না, তখন এর প্রত্যক্ষ প্রভাব শরীরের অনেক অংশে দেখা যায় । অনেক কারণের মধ্যে এর একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ হল ইউরিক অ্যাসিড বৃদ্ধি । তবে শুধু বয়স্ক ব্যক্তিদেরই এই সমস্যায় পড়তে হবে এমন নয় । কখনও কখনও ইউরিক অ্যাসিড এমনকি খুব অল্প বয়স্কদের মধ্যেও বেড়ে যায় । জয়েন্টে ব্যথার মতো সমস্যার সঙ্গে লড়াই করতে হয় । যাঁরা অতিরিক্ত অ্যালকোহল পান করেন তাঁদের মধ্যে এই সমস্যাটি প্রায়শই দেখা যায় ।
ইউরিক অ্যাসিডের লক্ষণ (Symptoms of uric Acid):
জয়েন্টে ব্যথা
কিডনিতে পাথর
গোড়ালি মধ্যে ব্যথা
হাঁটুতে ব্যথা
আঙুলে ফোলা এবং ব্যথা
এই জাতীয় খাবার থেকে দূরত্ব বজায় রাখুন (Uric acid food to avoid):
অতিরিক্ত অ্যালকোহল পান করলে ইউরিক অ্যাসিড রোগ হতে পারে । এছাড়াও, মটন, চর্বি জাতীয় মাছ, মটর এবং অতিরিক্ত চা, চিনিযুক্ত পানীয়, কিডনি বিন, শুকনো মটর, বাঁধাকপি, মাশরুম এবং শুকরের মাংসে প্রচুর পরিমাণে পিউরিন পাওয়া যায় ।
এখন প্রশ্ন হল কী করবেন ? কীভাবে এড়ানো যায় ? চিকিৎসক অমিত বলেন, "ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা যাতে বাড়তে না পারে তার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল অ্যালকোহল বন্ধ করা বা কম করে খাওয়া । এর মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে নিয়মিত ব্যায়াম করা এবং স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ করা উচিত ।
ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ডাল খান ? ভারতের উত্তর কোণ হোক বা দক্ষিণ, মূলত ডায়েটে অন্তর্ভুক্ত তা হল ডাল । সাধারণত এটি প্রতিটি বাড়িতে প্রতিদিন রান্না করা হয় । কিন্তু বর্ধিত ইউরিক অ্যাসিড আক্রান্ত রোগীদের ডাল খেতে বারণ করা হয় । এরপরও যদি মনে হয়, তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী মুগ ও উরদ ডাল যথাযথ পরিমাণে খাওয়া যেতে পারে ।
https://www.ncbi.nlm.nih.gov/pmc/articles/PMC10291132/
(বিশেষ দ্রষ্টব্য: এই প্রতিবেদনে উল্লেখিত তথ্য পুষ্টিবিদ-বিশেষজ্ঞের ব্যক্তিগত মতামত ও প্রচলিত ধারণার উপর ভিত্তি করে লেখা ৷ শুধুমাত্র ধারণা আর সাধারণ জ্ঞানের জন্যই এই প্রতিবেদনটি লেখা হয়েছে ৷ এখানে উল্লেখিত কোনও পরামর্শ অনুসরণের আগে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন ৷ যদি আগে থেকেই কোনও স্বাস্থ্য সমস্যা থেকে থাকে, তা আগেই চিকিৎসককে জানাতে হবে ৷)