আসানসোল, 14 এপ্রিল: কথায় আছে ইচ্ছা থাকলেই উপায় হয় । ছাত্র-ছাত্রীদের পুষ্টি বৃদ্ধি করতে এবার সরকারি স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা স্কুলের ক্লাসরুমের মধ্যেই মাশরুম চাষ করলেন । আর সেই মাশরুম তুলে দেওয়া হচ্ছে মিড-ডে মিলের থালায় । একদিক দিয়ে তাদের যেমন মুখের স্বাদ বদল হয়েছে, তেমনই ছাত্রছাত্রীদের পুষ্টিও বাড়ানো যাচ্ছে । রেলশহর চিত্তরঞ্জনের পূর্ব আমলাদহি 6-এর পল্লী নিম্ন বুনিয়াদী বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের উদ্যোগেই এমন নজিরবিহীন চিত্র দেখা গিয়েছে । ক্লাসরুমেই মাশরুম চাষ করছেন স্কুলের এক শিক্ষক ও তিন শিক্ষিকা ।
চিত্তরঞ্জনের পূর্ব আমলাদহি 6-এর পল্লী নিম্ন বুনিয়াদী বিদ্যালয়ে বর্তমানে 80 জন ছাত্র-ছাত্রী আছে । মূলত এই স্কুলে আদিবাসী, অনগ্রসর পরিবারের ছাত্র-ছাত্রীরাই পড়তে আসে । আর তাদের মুখে পুষ্টিকর খাবার তুলে দিতেই এই পরিকল্পনা বলে জানিয়েছেন স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা ঝর্ণা মণ্ডল ।
তিনি জানান, গত বছরের নভেম্বর মাসেই বিষয়টি নিয়ে ভাবনা-চিন্তা হয়েছিল । এরপর প্রশিক্ষণ নেওয়া হয় । স্কুলের সব শিক্ষক-শিক্ষিকারা মাশরুম চাষের প্রশিক্ষণ নেয় । তারপর অতিরিক্ত একটি ক্লাসরুম বেছে নিয়ে সেখানে মাশরুম চাষ করা হচ্ছে । দু'দিন পরপরই প্রচুর মাশরুম হচ্ছে । আর সেই মাশরুম রান্না করে মিড-ডে মিলের থালায় পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে । মিড-ডে মিলে অতিরিক্ত পাওয়া মাশরুমের রেসিপি ৷ চেটেপুটে খাচ্ছে ছাত্র-ছাত্রীরা । পেট শুধু নয়, পড়ুয়াদের মনও ভরাচ্ছে মাশরুম ৷ পুষ্টিকর খাবার পরিবেশন করে খুশি শিক্ষক শিক্ষিকারাও ।
ছাত্র-ছাত্রীদের কী উপকার হবে ?
আসানসোলের বিশিষ্ট ডায়েটিশিয়ান সুপর্ণা চট্টোপাধ্যায় দত্ত জানালেন, মূলত সরকারি স্কুলগুলিতে বেশিরভাগ অনগ্রসর ও নিম্নবিত্ত পরিবার থেকে ছাত্রছাত্রীরা আসে ৷ সেই ছাত্র-ছাত্রীরা এমনিতেই অপুষ্টিতে ভোগে । তাই শিক্ষক-শিক্ষিকাদের এই উদ্যোগ সত্যিই প্রশংসনীয় । মাশরুমে প্রচুর প্রোটিন থাকে । ফলে শিশুদের প্রোটিনের যে ঘাটতি সেটা দূর হবে । এছাড়াও মাশরুমে প্রচুর পরিমাণে মিনারেল এবং ফাইবার থাকে । ফলে একদিকে যেমন শিশুরা সুষম খাবার পাচ্ছে, পাশাপাশি তাদের কোষ্ঠকাঠিন্যের মত সমস্যাও দূর হবে । সুস্বাস্থ্য বজায় থাকবে ।
আরও পড়ুন: