কলকাতা, 20 মার্চ: বাড়ির চৌহদ্দিতে চড়ুই বাসা করেছে বলে বিরক্ত হচ্ছেন ? বাস্তু বলছে, বাড়ির কোথাও চড়ুই বাসা গড়লে সংসারে সুখ সমৃদ্ধি বাড়ে ৷ তাই আজ 'ওয়ার্ল্ড স্প্যারো ডে' অর্থাৎ 'বিশ্ব চড়ুই দিবস'-এ অঙ্গীকার হোক হারিয়ে এই প্রজাতিকে টিকিয়ে রাখা ।
আমাদের বসত বাড়িতে প্রায়ই নানাধরনের পাখির আনাগোনা চলে। কখনও পায়রা, তো কখনও চড়ুই কিংবা ঘুঘু। জানলায় বসলে আমরা তাড়িয়েও দিই। অনেক সময়েই তারা খড়কুটো জোগাড় করে এনে বাসা গড়ে ফেলে কখনও বারান্দায়, কখনও কার্নিশে। আমরা ঘর পরিষ্কার রাখার জন্য সেগুলো ভেঙেও দিই ৷ অথচ লোকমুখে প্রচলিত, চড়ুই পাখি বাড়িতে কিংবা ফ্ল্যাটে বাসা গড়লে নাকি তা ভাঙতে নেই । তাদের বাসা বাড়িতে থাকা নাকি ভালো । কায়ে-কলেবরে এই পাখি খাটো হলেও একে 'খাটো' করে দেখা ঠিক নয়। এমনটাই বলছে বাস্তু।
একইসঙ্গে এরা উপকারীও বটে। গাছপালার পক্ষে ক্ষতিকারক কীটপতঙ্গ এরা খেয়ে নেয় ৷ উলটো দিকে চড়ুই আবার বড় পাখি বা সাপের খাবার । ফলে প্রকৃতির খাদ্যশৃঙ্খলে একটা ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে এই ছোট্ট পাখি। বাস্তুবিদরা বলে থাকেন, বাড়িতে চড়ুইপাখি বাসা গড়লে তাকে তাড়াবেন না। চড়ুই একটি পজিটিভ এনার্জি সৃষ্টি করে, যা আপনাকে মানসিক ও শারীরিকভাবে সুস্থ ও শান্ত রাখবে ।
অশুভ শক্তি দূর করতে চড়ুই পাখির জুড়ি মেলা ভার । বাস্তু বলছে, বাড়িতে বা ঘর-বারান্দার চৌহদ্দিতে চড়ুই পাখির কিচিরমিচির ও তার পাখার ঝটপটানিও খুব কার্যকরী । এর ফলে ইতিবাচক শক্তি ঘরে আসে আর নেগেটিভ এনার্জি বেরিয়ে যায় ।
বাড়ির যে কোনও জায়গায় চড়ুই পাখির বাসা থাকলে ঘরে সুখ-শান্তি-সমৃদ্ধি আসে। সম্পর্কের উন্নতি ঘটাতেও চড়াই সিদ্ধহস্ত । বাস্তুশাস্ত্রের মতে, চড়ুইয়ের কিচিরমিচিরের মধ্যে যে পজিটিভ শক্তি রয়েছে, তা আমাদের অহংকার দূর করে, উত্তেজনা প্রশমিত করে ও মন শান্ত করে । ফলে বাড়িতে চড়ুই পাখির বাসা থাকলে ঘরে একে অপরের মধ্যে সুসম্পর্ক বজায় থাকে । সর্বোপরি শান্তি বজায় থাকে ।
তবে এখন চড়ুই পাখিদের সংখ্যা অনেক কমে গিয়েছে ৷ আজ 'ওয়ার্ল্ড স্প্যারো ডে' অর্থাৎ 'বিশ্ব চড়ুই দিবস'-এ সারা পৃথিবীর অঙ্গীকার হোক তাদেরকে বাড়ির ব্যালকনি বা কার্নিশ থেকে আর তাড়িয়ে দেওয়া নয় । খানিকটা বিশ্বাসের ডানায় ভর করে নিজেদের সুখ সমৃদ্ধির কথা ভেবে আর বাকি একটা প্রজাতিকে বাঁচিয়ে রাখার নৈতিক কর্তব্যে ।
প্রসঙ্গত, সারা পৃথিবীজুড়ে আনুমানিক 48 প্রজাতির চড়ুই পাখি আছে । ভারত, নেপাল, বাংলাদেশ, কোরিয়া, জাপান, ইরান, ভুটান, থাইল্যান্ড, চিন, ইন্দোনেশিয়া-সহ আরও বহু দেশে তাদের বসবাস । সংখ্যা দিন দিন কমছে । একটু সচেতনতা বাড়লে হারিয়ে যাবে না তারা ।
আরও পড়ুন :