কলকাতা: খেজুর একটি মিষ্টি এবং পুষ্টিকর ফল । প্রাচীনকাল থেকেই শরীরে শক্তি যোগাতে এবং রোগ থেকে রক্ষা করতে খেজুর একটি কার্যকরী উপায় হিসাবে বিবেচিত হয় । এটি শুধুমাত্র শক্তির একটি চমৎকার উৎস নয়, এতে অনেক ভিটামিন, খনিজ এবং ফাইবার রয়েছে ।
নয়াদিল্লির খাদ্য ও পুষ্টি বিশেষজ্ঞ ডাঃ দিব্যা শর্মা বলেন, "নিয়মিত খেজুর খাওয়া শরীরের নানাভাবে উপকার করতে পারে । এতে প্রচুর পরিমাণে আয়রন, পটাসিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়াম রয়েছে, যা হাড় মজবুত করতে, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে এবং হার্টকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে । খেজুরে প্রাকৃতিক চিনি রয়েছে যা তাৎক্ষণিক শক্তি দেয়, তাই এটি ক্রীড়াবিদ এবং ব্যায়ামকারীদের জন্য বিশেষভাবে উপকারী । এতে পাওয়া অ্যামাইনো অ্যাসিড এবং প্রোটিন পেশী শক্তিশালী করতে সাহায্য করে ।"
এছাড়াও তিনি জানান, খেজুরে পাওয়া অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট শরীরকে ফ্রি র্যাডিক্যাল থেকে রক্ষা করে ৷ যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করে । এসব উপকারিতা ছাড়াও পুরুষ ও মহিলাদের জন্য খেজুর খাওয়ার কিছু আলাদা উপকারিতা দেখা যায় । যার কয়েকটি নিম্নরূপ ।
মহিলাদের জন্য খেজুরের উপকারিতা
এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন, যা রক্তশূন্যতা প্রতিরোধে সাহায্য করে ।
গর্ভাবস্থায় খেজুর খেলে শরীরে শক্তি আসে ।
এটি হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখতেও সাহায্য করে, যা মাসিকের সময় হওয়া সমস্যা থেকে মুক্তি দেয় ।
খেজুর ত্বকের স্বাস্থ্যের জন্যও উপকারী, কারণ এটি ত্বককে উজ্জ্বল ও স্বাস্থ্যকর করে তোলে ৷
পুরুষদের জন্য খেজুরের উপকারিতা:
খেজুর স্ট্যামিনা বাড়াতে এবং পুরুষদের যৌন স্বাস্থ্যের উন্নতিতে সাহায্য করে । এটি শুক্রাণুর সংখ্যা এবং গুণমান উন্নত করতেও সহায়ক হতে পারে ৷ যার ফলে উর্বরতা সম্পর্কিত সমস্যাগুলি উন্নত হয় ৷ খেজুর খেলে মানসিক চাপ কমায় এবং শক্তির মাত্রা বাড়ায় ।
খেজুর খাওয়ার সঠিক উপায়:
ডাঃ দিব্যা বলেন, "খেজুর বিভিন্ন উপায়ে খাওয়া যায় । সাধারণত মানুষ এটি সরাসরি খায় । তবে দুধের সঙ্গে এটি খাওয়াও খুব উপকারী । এটি শরীরে শক্তি সরবরাহ করে, বিশেষ করে যখন আপনি দুর্বল বোধ করেন । দুধ এবং খেজুরের সংমিশ্রণ পেশী শক্তিশালী করতে, হাড় সুস্থ রাখতে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করতে সাহায্য করে । এই মিশ্রণটি শিশু এবং বয়স্কদের জন্য বিশেষভাবে উপকারী ৷ কারণ এটি তাদের শরীরে প্রয়োজনীয় পুষ্টি সরবরাহ করে ।"
এছাড়া সকালে 2-3টি খেজুর খাওয়া খুবই উপকারী কারণ এটি সারাদিন এনার্জি জোগায় এবং পেট পরিষ্কার রাখে । এছাড়া বাদাম ও খেজুর মিশিয়ে স্ন্যাকস হিসেবে খাওয়া যায় ।
বেশি পরিমাণে খেজুর খাওয়ার অসুবিধা:
তিনি আরও বলেন, "যদিও খেজুরের অনেক স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে, তবে এটি সঠিক পরিমাণে খাওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ । অতিরিক্ত খেজুর খাওয়া স্বাস্থ্যেরও ক্ষতি করতে পারে ।"
আসলে খেজুরে প্রাকৃতিক চিনির পরিমাণ বেশি থাকে । এটি অতিরিক্ত পরিমাণে খেলে ওজন বৃদ্ধি পেতে পারে । এর কারণে রক্তে শর্করার মাত্রাও বাড়তে পারে, বিশেষ করে আপনি যদি ডায়াবেটিক রোগী হন তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়েই এটি খান ।
শুধু তাই নয়, বেশি পরিমাণে খেজুর খেলে গ্যাস ও ডায়রিয়ার মতো হজমের সমস্যাও হতে পারে ।
https://pubmed.ncbi.nlm.nih.gov/18949591/
(বিশেষ দ্রষ্টব্য: এই প্রতিবেদনে উল্লেখিত তথ্য শুধুমাত্র ধারণা আর সাধারণ জ্ঞানের জন্যই লেখা হয়েছে ৷ এখানে উল্লেখিত কোনও পরামর্শ অনুসরণের আগে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন ৷ যদি আগে থেকেই কোনও স্বাস্থ্য সমস্যা থেকে থাকে, তা আগেই চিকিৎসককে জানাতে হবে ৷)