কলকাতা: প্রতিটি মানুষের প্রয়োজন হয় রাতের ঘুম । কিন্তু সেই ঘুমেরও ব্যাঘাত দিতে পারে পায়ে যন্ত্রণা ৷ সাধারণত কেউ দীর্ঘক্ষণ বসে বা শুয়ে থাকার পর পায়ে ও বাহুতে ব্যথা হয় । কারণ দীর্ঘসময় এক অবস্থানে থাকার ফলে পেশীতে চাপ পড়ে এবং রক্ত চলাচল ঠিকমতো হয় না, যার ফলে ক্র্যাম্প হয় । ডায়াবেটিস রোগীদের মাঝে মাঝে পায়ে এবং বাহুতে ক্র্যাম্প হওয়াও সাধারণ ব্যাপার ।
তবে সাধারণ কোনও ব্যক্তির পায়ে রাতে ক্র্যাম্প হলে বিশেষভাবে নজর দেওয়া প্রয়োজন ৷ বিশেষজ্ঞরা জানান, এইরকম কোনও শারীরিক সমস্যা হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি ৷ কারণ এটি হতে পারে ভিটামিন বি 12 এর অভাব ৷ সময়মতো চিকিৎসা না-করানো হলে এই সসম্যা বাড়তে পারে ৷ তাই পায়ে লাগার মতো উপসর্গ দেখা দিলে দেরি না-করে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াই ভালো ।
এক গবেষণায় জানা গিয়েছে ভিটামিন বি 12 এর ঘাটতির ফলে পা ও হাতের ক্র্যাম্পের ঝুঁকি বেশি ছিল ৷ এটি 'নিউরোলজি' জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে ৷ নরওয়ের অসলো বিশ্ববিদ্যালয়ের বিখ্যাত নিউরোলজিস্ট ডাঃ মনিকা ক্রস এই গবেষণার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন । তিনি বলেন, "শরীরে B12 এর অভাবের কারণে পায়ের তলদেশে ক্র্যাম্পের মতো উপসর্গ দেখা যায় ।"
- https://www.neurology.org/doi/10.1212/WNL.96.15_supplement.2997
- https://www.ncbi.nlm.nih.gov/pmc/articles/PMC6543499/
বিশেষজ্ঞরা জানান, ভিটামিন বি 12 এর ঘাটতি হলে রাতে পায়ে ও হাতে ব্যথা ছাড়াও অন্যান্য উপসর্গ দেখা দেয় । ক্লান্তি, দুর্বলতা, মুখে আবরণ, খিদে না হওয়া, রক্তে লোহিত কণিকার উৎপাদন কমে যাওয়া, মাথা ঘোরা, চোখ এবং শরীর সামান্য হলুদ হয়ে যায়, রক্তাল্পতা, স্মৃতিশক্তির অভাব, বিষণ্ণতা, হজমের সমস্যা যেমন কোষ্ঠকাঠিন্য, গ্যাস এবং বদহজম ইত্যাদি ৷
কীভাবে সেই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব ?
আমিষ জাতীয় খাবারে সাধারণত ভিটামিন B12 বেশি থাকে । তাই বিশেষজ্ঞরা জানান, আমিষভোজীদের জন্য মটন, মুরগির মাংস, ডিম, সামুদ্রিক খাবার এবং মাছ এই ধরনের খাবার তালিকায় রাখা প্রয়োজন ৷ নিরামিষভোজীদের জন্য দুধ, দুগ্ধজাত খাবার, সবুজ শাকসবজি, শুকনো ফল, বিটরুট, লেটুস অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন ৷ তবে অবশ্যই আপনার শরীরের ভারসাম্য অনুযায়ী চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে খাবার খাওয়া প্রয়োজন ৷
বিশেষ দ্রষ্টব্য: এই প্রতিবেদনে উল্লেখিত তথ্য শুধুমাত্র ধারণা আর সাধারণ জ্ঞানের জন্যই লেখা হয়েছে ৷ এখানে উল্লেখিত কোনও পরামর্শ অনুসরণের আগে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন ৷ যদি আগে থেকেই কোনও স্বাস্থ্য সমস্যা থেকে থাকে, তা আগেই চিকিৎসককে জানাতে হবে ৷