চিনে আবারও একটি রহস্যময় রোগ দেখা দিয়েছে ৷ সোশাল মিডিয়ায় গুজব ছড়িয়েছে । সম্প্রতি প্ল্যাটফর্ম X-এ খবর ভাইরাল হয়েছে যে চিনা হাসপাতালগুলি ভিড়ে উপচে পড়েছে ৷ ইনফ্লুয়েঞ্জা এ, মাইকোপ্লাজমা নিউমোনিয়া এবং হিউম্যান মেটাপনিউমোভাইরাস (এইচএমপিভি) এর মতো বেশ কয়েকটি ভাইরাসের রোগীর সংখ্যা বাড়ছে । কেউ কেউ এই অবস্থাকে নতুন অতিমারির লক্ষণ বলে অভিহিত করেছেন ।
চিনে শ্বাসকষ্টজনিত রোগের প্রকোপ দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে ৷ বিশেষ করে শিশু ও বয়স্কদের মধ্যে । অল্পবয়শি শিশুরা এবং যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম ও বয়স্করা যাঁদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল এই জাতীয় মানিষেরা বেশি আক্রান্ত হয় । লক্ষণগুলি সর্দি এবং ফ্লুর অনুরূপ ৷ জ্বর, কাশি, সর্দি এবং কখনও কখনও শ্বাস নিতে অসুবিধা হয় এই রোগে বলে জানা গিয়েছে । গুরুতর ক্ষেত্রে, এটি নিউমোনিয়ার মতো জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে । তবে চিন সরকার বা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) কেউই আনুষ্ঠানিক সতর্কতা জারি করেনি । বিশেষজ্ঞদের মতে, এই রোগটি শুধু মরশুমি সংক্রমণ এবং এটি অতিমারি হিসাবে গণ্য করা হয়নি ৷
ভয় না পেয়ে জেনে নিন এই রোগের আসল কারণ:
HMPV ভাইরাস কী ?
এইচএমপিভি বা হিউম্যান মেটাপনিউমোভাইরাস একটি শ্বাসযন্ত্রের ভাইরাস যা সাধারণত কাশি, জ্বর, নাক দিয়ে জল পড়া এবং শ্বাস নিতে অসুবিধার মতো উপসর্গ সৃষ্টি করে ।
ভাইরাসটি বিশেষ করে ছোট শিশু, বয়স্ক এবং দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পন্ন ব্যক্তিদের প্রভাবিত করে ৷ চিনের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারকারী সিসিটিভি (China Central Television) জানিয়েছে যে ডিসেম্বরের শেষের দিকে 14 বছর এবং তার কম বয়সি শিশুদের মধ্যে এই রোগটি দেখা গিয়েছিল ৷ ভাইরাসটি শ্বাসতন্ত্রের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে ৷
কীভাবে এই ভাইরাস ছড়ায় ?
বেজিং-এর ইউআন হাসপাতালের শ্বাসযন্ত্র ও সংক্রামক রোগ বিভাগের প্রধান চিকিৎসক লি টংজেং বলেন, "ভাইরাসটি শ্বাসতন্ত্রের মাধ্যমে ব্যক্তি থেকে ব্যক্তিতে ছড়িয়ে পড়ে । সংক্রমিত বস্তু স্পর্শ করেও ভাইরাস ছড়াতে পারে ৷"
প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা: বিশেষজ্ঞরা মাস্ক পরা, ঘন ঘন হাত ধোয়া এবং ভাইরাস থেকে রক্ষা পেতে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর পরামর্শ দেন ৷
অ্যান্টি-ভাইরাল ওষুধ ব্যবহার না করা: এই ভাইরাসের জন্য বর্তমানে কোনও নির্দিষ্ট অ্যান্টি-ভাইরাল ওষুধ নেই ৷ সাংহাই হাসপাতালের একজন শ্বাসযন্ত্র বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক পরামর্শ ছাড়া এইচএমপিভির চিকিৎসার জন্য অ্যান্টি-ভাইরাল ওষুধ ব্যবহার করার বিরুদ্ধে সতর্ক করেছেন ।
এদিকে, চিনে হিউম্যান মেটাপনিউমোভাইরাস (এইচএমপিভি) প্রাদুর্ভাবের খবরের মধ্যে, ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানিয়েছে প্রতিবেশী দেশে ছড়িয়ে পড়া ভাইরাসটি 'সাধারণ কাশি, সর্দি এবং অন্য যে কোনও শ্বাসযন্ত্রের ভাইরাসের মতো' এবং উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই । এইচএমপিভি চিনে ছড়িয়ে পড়া অন্যান্য শ্বাসযন্ত্রের ভাইরাসের মতো যা সর্দি, কাশির মতো সমস্যা সৃষ্টি করে, এতে ভয় পাওয়ার দরকার নেই ।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডাঃ অতুল গোয়েল বলেন, "এই ধরনের আবহাওয়ায় শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ সাধারণত স্বাভাবিক এবং নিয়মিত সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত এবং প্রয়োজনে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত ।"