হায়দরাবাদ, 19 ফেব্রুয়ারি: সম্প্রতি বিরল চর্মরোগ প্রাণ কেড়েছে সুহানি ভাটনগরের ৷ আমির খান অভিনীত 'দঙ্গল' ছবিতে যিনি ছোট্ট ববিতা ফোগতের চরিত্রে অভিনয় করে জনপ্রিয় হয়েছিলেন ৷ সুহানির আচমকা মৃত্যুর খবরে স্বাভাবিকভাবেই চমকে ওঠে সিনেমহল ৷ যদিও অল্প বয়সে সুহানির এই করুণ পরিণতির নেপথ্য কারণ জানতে বেশ কিছুটা সময় লেগে যায় ৷ পরে পরিবারের তরফেই জানানো হয় মৃত্যুর কারণ ৷ তাতে জানা যায়, বিরল চর্মরোগ ডার্মাটোমায়োসাইটিস অকালে কেড়ে নিয়েছে সুহানিকে ৷ এই খবর শোনার পর আপনার মনেও যদি ডার্মাটোমায়োসাইটিস নিয়ে দুশ্চিন্তা বাসা বাঁধে? যদি আপনিও ভেবে থাকেন এই মারণরোগে আক্রান্ত হলে রেহাই পাবেন কীভাবে? ইটিভি ভারতের সঙ্গে কথা বলে সেই সব প্রশ্নেরই উত্তর দিলেন চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ জলি শেঠ ৷ কী বললেন তিনি, জেনে নিন...
সুহানির বাবা জানিয়েছেন, মাসদু'য়েক আগে প্রথমে তাঁর হাত খুব ফুলে গিয়েছিল। তারপরে সেই ফোলাভাব সমস্ত শরীরে ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু এই বিরূপ লক্ষণের নেপথ্য কারণ কিছুতেই জানা সম্ভব হচ্ছিল না। বহু চিকিৎসার পরেও যখন মেয়ে সুস্থ হচ্ছে না তখন সুহানির বাবা তাঁকে এইমসে নিয়ে যান। মৃত্যুর 11 দিন আগে সেখানে তাঁকে ভরতি করা হয়েছিল। সেখানেই জানা যায়, ডার্মাটোমায়োসাইটিসের মতো জটিল এবং একইসঙ্গে বিরল একটি রোগে আক্রান্ত হয়েছেন সুহানি।
ডার্মাটোমায়োসাইটিস কী? কেন হয় এই রোগ? জলি শেঠ বলেন, "40 থেকে 50 বছর বয়সি যে কেউ এই রোগে আক্রান্ত হতে পারেন। তবে এমনটা নয়, অল্পবয়সিদের মধ্যে এই ডার্মাটোমায়োসাইটিস দেখা যায় না ৷ একইসঙ্গে ডার্মাটোমায়োসাইটিস বাসা বাঁধার নির্দিষ্ট কোনও কারণ নেই ৷ কাদের শরীরে কখন কীভাবে এই রোগ হানা দেবে, তা আগে থেকে বলা যাবে না।"
কীভাবে বুঝবেন: জলি শেঠ জানান, এই রোগে আক্রান্ত হলে পেশিতে যন্ত্রণা হয়। অনেক সময় পেশির আশপাশ লালচে কিংবা বেগুনি হয়ে যায় ৷ আঙুলের গাঁটে এই উপসর্গ লক্ষ্য করা যায়। ঘাড়, কোমর, হাতের উপর কিংবা ঊরুর পেশি দুর্বল হয়ে পড়ে। সিঁড়িতে ওঠানামা করতে অসুবিধা হয় ৷ এর আরও একটি উপসর্গ হল চোখের চারপাশে, গালে, বুকে, পিঠে ব়্যাশ বের হওয়া। বিশেষ করে রোদের তেজ সহ্য করা যায় না। শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে হার্ট ও ফুসফুসের পেশি পর্যন্ত এই রোগ ছড়িয়ে পড়তে পারে। ব্যাহত হয়ে পড়ে রক্ত চলাচল। সঠিক সময়ে চিকিৎসা না-হলে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।
রোগ নিরাময়ের উপায় কী? খাদ্যতালিকায় পরিবর্তন কি জরুরি? একদমই না ৷ খাবারের কোনও প্রভাব এই রোগে পড়ে না ৷ এইসময় রোদে না-বেরনোই ভালো ৷ যদি বেরোন তাহলে সান্সক্রিন ব্যবহার করা উচিৎ ৷ তবে পুরোটাই চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে।
রোগের বিস্তার ও সংক্রমণ: ডার্মাটোমায়োসাইটিসের বিস্তার নিয়ে বিশেষজ্ঞ জানান, পরিস্থিতি জটিল হলে এই সংক্রমণ হার্ট এবং ফুসফুসের পেশি পর্যন্ত ছড়িয়ে যেতে পারে। ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না সেক্ষেত্রে। সঠিক সময়ে ডার্মাটোমায়োসাইটিসের চিকিৎসা না-হলে যে মৃত্যু পর্যন্ত ঘটতে পারে, সেই উদাহরণ তো রয়েছেই। তাই আপনি যদি এমনটা অনুভব করেন তাহলে দ্রুত চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ নিন ৷
আরও পড়ুন: