কলকাতা, 21 জুলাই: ধর্মতলা চত্বরে বাড়ছে কালো কালো মাথাদের সারি ৷ শহিদ স্মরণে জেলার নানা প্রান্ত থেকে মানুষজন উপস্থিত হচ্ছেন অমর একুশ উদযাপনের কারণে ৷ বেলা বাড়তেই উপস্থিত হবেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, দেবেন আগামীর বার্তা ৷ এইদিন রাজনীতিকের পাশাপাশি উপস্থিত থাকেন টলিউড তারকারাও ৷ শহীদ স্মরণ মঞ্চে তাঁরা কী ধরনের পোশাক বেছে নিচ্ছেন, খোঁজ নিল ইটিভি ভারত ৷
গত বছরের মতো এবারেও 21 জুলাইয়ের মঞ্চে হাজির থাকবেন ভাস্বর চট্টোপাধ্যায়। তিনি ইটিভি ভারতের প্রতিনিধিকে বলেন, "সাদা পাঞ্জাবিই পরব। যে রকম গরম কলকাতায়। তাই হালকা পোশাকই বেছে নেওয়া উচিত। তার উপরে দিনটার যে মাহাত্ম্য তাতে সাদা ছাড়া কিছু ভাবা যায় না। রবিবার পড়ায় সাধারণ মানুষের অসুবিধা হবে না যাতায়াতে। সাধারণত এদিন নানা দিক থেকে মানুষ আসেন। ফলে রাস্তায় অনেক ভিড় হয়। রবিবার হওয়ায় সেই দিক থেকে সুবিধা।"
কাঞ্চন মল্লিকও যাবেন সাদা পাজামা পাঞ্জাবিতে, জানালেন কাঞ্চন-প্রিয়া শ্রীময়ী। তিনি বলেন, "আমি এবার যেতে পারব না। একে তো আমার শ্যুটিং আছে। তার উপরে বাড়িতে গুরু পূর্ণিমার পুজো আছে । ফলে, আমি খুব ব্যস্ত। কাঞ্চন যাবে। আর এদিন তো সাদার বিকল্প নেই।"
অভিনেত্রী শ্রীতমা ভট্টাচার্য বলেন, "এদিনের সাজগোজ নিয়ে আমার কোনও প্ল্যান থাকে না। ওয়ার্ড্রব খুলে যেটা মন চাইবে সেটা পরে নেব। অবশ্যই ভারী কিছু পরব না বা সাজব না। এমনিতেও আমি ভারী সাজি না। শহিদদের স্মরণ করার দিন। বড় দুঃখের দিন। এটা কোনও ইভেন্ট নয়। তাঁদের পরিবারের পাশে থাকার অন্তত চেষ্টার দিন। এদিন সকলকে আমাদের মুখ্যমন্ত্রী যেভাবে এক জায়গায় আনেন তার জন্য তাঁকে স্যালুট জানাই।"
খ্যাতনামা ফুটবলার দীপেন্দু বিশ্বাস জানান, সাদা আর নীলের কম্বিনেশনে টি শার্ট পরে যাবেন। এর থেকে বেশি আর কী হতে পারে। শহীদ সমাবেশের মূল কাণ্ডারী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যথারীতি থাকবেন সাদা পোশাকেই। তাঁর পথেই হাঁটবেন সায়নী ঘোষ থেকে শুরু করে রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়, অনন্যা বন্দ্যোপাধ্যায়।
তবে, এবার শহীদ দিবসের মঞ্চে অনেক তারকাই অনুপস্থিত থাকছেন ৷ যেমন, চলতি বছরে হাজির থাকছেন না নীল ভট্টাচার্য, তৃণা সাহা, কৌশানি মুখোপাধ্যায়। কৌশানি ইটিভি ভারতকে জানিয়েছেন, "আমার একটা পারিবারিক অনুষ্ঠান চলছে। বাইরে আছি। তাই এবার আমি যেতে পারছি না।" অভিনেত্রী তৃণা সাহা বলেন, "নীলের শরীরটা ভালো নেই। তার উপরে ওর শ্যুটিং শুরু হয়েছে । আমার এগজিবিশন আছে। সব নিয়ে ব্যস্ত। তাই এবার আমরা যাচ্ছি না।" কাজের ব্যস্ততার কারণে শহীদ দিবস অনুষ্ঠানে যাচ্ছেন না দেবলীনা কুমারও ৷
প্রসঙ্গত, 1993 সালের 21 জুলাই পুলিশের গুলিতে নিহত হন বন্দন দাস, মুরারী চক্রবর্তী, রতন মণ্ডল, বিশ্বনাথ রায়, কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, অসীম দাস, কেশব বৈরাগী, শ্রীকান্ত শর্মা, দিলীপ দাস, রঞ্জিত দাস, প্রদীপ রায়, মহম্মদ খালেক, ইনু মিঞা। ইতিহাস বলে, 1993 সালে তৎকালীন বামফ্রন্ট সরকারের আমলে নাকি বিধানসভার নির্বাচনে দাপিয়ে চলত ভোট জালিয়াতী ব্যাপক ছাপ্পা ভোট। পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ কংগ্রেসের পক্ষ থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমর্থিত সদস্যগণ ওই দিনে সচিত্র ভোটার কার্ডের দাবিতে মহাকরণ অভিযানে অহিংস সত্যাগ্রহ পদযাত্রা করেন। সেদিন তৎকালীন বামফ্রন্ট সরকারের অধিনস্থ পুলিশ, মিছিলে লাগাতার গুলি চালায়। পুলিশের গুলিতে মৃত্যু হয় 13 জন তরুণ তুর্কীর ৷ সেই সকল শহীদদের স্মরণেই প্রতি বছর পালন করা হয় অমর 21 জুলাই ৷