কলকাতা, 7 অক্টোবর: বছর চারেক হল বাবাকে হারিয়েছেন স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়। তারও আগে মাকে। পুজোর আনন্দময় মুহূর্তে শনিবার রাতে হঠাতই বাবা সন্তু মুখোপাধ্যায়কে অনুভব করলেন তিনি। বাবার গায়ের সেই চেনা গন্ধ নাকে আসে তাঁর। সেই অভিজ্ঞতা সামাজিক মাধ্যমে ভাগ করে নেন স্বস্তিকা ৷
অভিনেত্রী লেখেন, "কাল রাতে ঘুমটা হঠাৎ ভেঙে গেল। সেই চেনা গন্ধটা নাকে আসতেই উঠে পড়লাম। গন্ধটা পেয়ে জেগে গিয়েছিলাম, নাকি জেগে গিয়ে গন্ধটা পেলাম ঠিক ঠাহর করতে পারলাম না।" অভিনেত্রী আরও লেখেন, "বাবা স্টুডিয়ো থেকে বাড়ি ফিরলেই বাড়িটা যেমন ব্যস্ত হয়ে উঠত, কাল রাতে ঠিক তেমনটা হল। আর সেই ঘাম, পারফিউম, ইউডি কোলন মেশানো গন্ধটা বাড়িময় ঘুরপাক খাচ্ছিল।"
স্বস্তিকা নিজের অনুভূতি ভাগ করে লেখেন, "আমি বালিশে মাথা রেখেই ভাবছি, আচ্ছা বাবা কী সত্যি বাড়ি ফিরেছে? মাসি কে ডেকে বলল, কিরে মামণি মাটিটা কেমন বালি বালি হয়ে আছে, সন্ধেবেলা ঠিক করে মুছিস নি ?
বাড়ি তে ঘট বসে গিয়েছে, আবার ঝাঁট দিসনি তো? মাসি কী বলল সেটা শুনতে পেলাম না। তারপরই বাথরুম এ ঢুকলো বাবা, রোজ যেমন যেত পা ধুতে।"
উল্লেখ্য, স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায় আজও বাড়িতে স্বল্প পরিসরে দুর্গাপুজো করেন ৷ যে পুজো চালু করেছিলেন তাঁর মা। মায়ের এই একটি কাজ আজও তিনি বজায় রেখেছেন নিজের মতো করে। একার পক্ষে যতটুকু সম্ভব ঠিক ততটুকুই করেন তিনি। এই দুর্গাপুজোর সময় বাড়ি ছেড়ে কোথাও থাকেন না তিনি। ইটিভি ভারতকেই একবার এক সাক্ষাৎকারে জানান কীভাবে রাউরকেল্লা থেকে ট্রেনে সারা রাত দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে কলকাতা ফিরেছিলেন শুধু পুজোতে বাড়িতে থাকবেন বলে। বাবাকে কখনও পুজোয় একা থাকতে দিতেন না অভিনেত্রী। এমনি সময়েও বাইরে শুটিং থাকলে সেটা সেরে পরদিনই চলে আসতেন বাবার জন্য।
সেই আদরের বাবাকে ফের পুজোয় অনুভব করার কথা প্রকাশ করতে গিয়ে তিনি আরও লেখেন, "জল পড়ার আওয়াজও পেলাম। ফুলকি পায়ে পায়ে ঘুরছিল বলে আবার ফুলকিকেও স্বভাববশত কত কিছু বলল। এমনিতে ফুলকি গলা দিয়ে নানান স্বর বের করে আদুরে ভাসায় কথা বলে, কিন্তু কাল রাতে বলল না, বা বলেছে হয়তো আমি শুনতে পেলাম না। আমি শুধু চেয়ে চেয়ে বাবার গলাটাই শুনছিলাম। গাঢ় গেরুয়া রং এর পাঞ্জাবিটা পরেছিল বাবা।"
বাড়িতে পুজো, তাই সকাল সকালে উঠে পড়েছিলেন স্বস্তিকা। কিন্তু তখনও বাবা তথা অভিনেতা সন্তু মুখোপাধ্যায়ের গায়ের গন্ধটা নাকে লেগে ছিল তাঁর। অভিনেত্রীর কথায় তিনি ঘুমোননি। তাকিয়েই অনুভব করেন সবটা। শুয়ে ছিলেন তবে পাশ ফেরেননি, উঠে যাননি। অভিনেত্রীর বিশ্বাস তিনি তাকালেই বাবাকে দেখতে পেতেন। কিন্তু তাকাননি। স্বস্তিকার ধারণা পুজোর ক'টা দিন তাঁর কাছে থাকবে বলে বাড়ি ফিরেছেন হয়ত তাঁর বাবা। এভাবেই সবার বাবাদের ভালো থাকার কামনা করেন স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়। লেখেন, "সবার বাবারা ভালো থাকুক। সন্তানেরা তাঁদের আগলে রাখুক। চলে গেলে সব ছাই।"