নয়াদিল্লি, 28 মে: এই বছর কান চলচ্চিত্র উৎসবের রেড কার্পেটের সবচেয়ে বেশি ক্যামেরাবন্দি হওয়া মুহূর্তগুলির মধ্যে অন্যতম হল প্রিমিয়ারে অল উই ইমাজিন অ্যাজ লাইট টিমের আনন্দে ভরা নাচ ৷ তাতেই ইঙ্গিত মিলেছিল যে, 30 বছরের মধ্যে প্রথম কোনও ভারতীয় পরিচালকের ছবি প্রতিযোগিতার জন্য নির্বাচিত হবে এবং বড় কিছু জিতবে ৷ আর ঠিক তাই হল ৷ কান থেকে টেলিফোনে সংবাদসংস্থা পিটিআইকে এমনই প্রতিক্রিয়া জানালেন এই ছবির অন্যতম কুশীলব অভিনেত্রী ছায়া কদম ৷
মুম্বইয়ের দুই নার্সকে নিয়ে পায়েল কাপাডিয়ার চলচ্চিত্রটি গ্র্যাঁ প্রি জিতেছে, যা শীর্ষ পুরস্কার পাম ডি'অর (শন বেকারের 'আনোরা' দ্বারা জিতেছে)-এর পরে কানে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সম্মান । পিটিআই-কে কদম বলেন, "আমি খুব খুশি, আমার কাছে তা প্রকাশ করার জন্য কোনও শব্দ নেই ।"
রেড কার্পেটের মুহূর্তটি তাঁর স্মৃতিতে এবং ভারতীয় সিনেমার ইতিহাসে খোদাই করা হয়েছে বলে মত ছায়া কদমের ৷ এই ছবির তিনটি মুখ্য চরিত্রের অন্যতম তিনি ৷ কানি কুশ্রুতি এবং দিব্যা প্রভার সঙ্গে ছিলেন তিনি ৷ কানের আসরে তাঁদের মধ্যে কে প্রথম নাচটা শুরু করেছিলেন, তা ঠিক মনে নেই বলে জানিয়ে তিনি বলেন, "আমি এই মুহূর্তে নিশ্চিত নই, তবে এটি সম্ভবত আমিই ছিলাম ৷ মুম্বই থেকে কেউ একজন ঠাট্টা করে বলেন, 'আপনি এমনভাবে নাচছিলেন যেন আপনি নিজের উঠোনে আছেন'। আমি বললাম, 'কেন নয় ?' 30 বছর পর মূল প্রতিযোগিতার অংশ হওয়াটা একটা বড় অর্জন, আমরা পুরষ্কার জিতেছি, আমরা কেন প্রোটোকল অনুসরণ করব ? আমরা নিজেদের আনন্দ এভাবেই প্রকাশ করি ৷ নাচের মাধ্যমে ৷"
থিয়েটার দিয়ে তাঁর কর্মজীবন শুরু করা অভিনেত্রী কানের রেড কার্পেটের মুহূর্তের কথা জানিয়ে বলেন, তাঁদের আশপাশের লোকেরাও তাঁদের আনন্দের মুহূর্ত উদযাপন করতে যোগ দিয়েছিল । কদমের কথায়, "যখন আমরা ছবি তুলব বলে স্থির হলাম, তখন ফটোগ্রাফাররাও আমাদের নাচ চালিয়ে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করতে শুরু করেন। চারপাশে এত আনন্দ ছিল ৷"
তিনি বলেন, তিনি তাঁর গাড়ি থেকে নেমে যাওয়ার সময় মারাঠি গান 'গুলাবি শাড়ি' বাজতে শুনছিলেন । প্রিমিয়ারেই এটা স্পষ্ট ছিল যে, এই ছবিটি বড় কিছু জিতবে ৷ তার লক্ষণ স্পষ্ট ছিল । ছবিটি একটি ভারত-ফরাসি সহ-প্রযোজনা ৷ এটির গালা স্ক্রিনিংয়ের শেষে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে উজ্জ্বল পর্যালোচনা পাওয়ার পরে একটি অগ্রগামী ছবি হিসেবে চিহ্নিত হয় এই ছবি ।
মালয়লম-হিন্দি ফিচারটি প্রভাকে ঘিরে আবর্তিত হয়েছে ৷ মুম্বইয়ের একজন নার্স যাঁর জীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে যখন সে তার বিবাহবিচ্ছিন্ন স্বামীর কাছ থেকে একটি রাইস কুকার পায় । তার রুমমেট এবং সহকর্মী অনু তার প্রেমিকের সঙ্গে থাকার জন্য ব্যস্ত শহরে একটি ব্যক্তিগত জায়গা খুঁজে পেতে লড়াই করছে । প্রভার সবচেয়ে ভালো বন্ধু পার্বতী (কদম), যিনি একজন বিধবা, প্রোমোটাররা তাকে তার বাড়ি থেকে জোর করে বের করে দিচ্ছে ।
'লাপাতা লেডিস' এবং 'মাদগাঁও এক্সপ্রেস' এর মতো চলচ্চিত্রে অভিনয়ের ফলে বর্তমানে যথেষ্ট পরিচিত মুখ কদম ৷ তিনি বলেন, "অল উই ইমাজিন..."-এ কাজ করার ফলে তিনি নিয়ম ভাঙার গুরুত্ব উপলব্ধি করেছিলেন । তাঁর কথায়, "আমি মনে করি আমাদের নিয়ম ভাঙা উচিত এবং আমাদের নিজস্ব নিয়ম তৈরি করা উচিত । এই ফিল্মটি আমাকে এটিই শিখিয়েছে এবং এটি কী একটি দুর্দান্ত চলচ্চিত্র ! আমি এটি কান প্রিমিয়ারে প্রথমবার দেখেছি । এটি আমাদের দেশের গল্প, আমাদের এমন আরও গল্প করা উচিত ৷ আমাদের কাছে অনেক কিছু নেই, কিন্তু আমাদের যা আছে তার মূল্যও আছে ।"