কলকাতা, 31 অগস্ট: 'বাংলার ভাবমূর্তি নষ্ট করার চেষ্টা করছে একটা হিন্দি সিনেমা ৷...' এ নিয়ে টলিউড ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে যাঁরা জড়িত বিশেষ করে যাঁরা তৃণমূল করেন তাঁদের নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন কুণাল ঘোষ ৷ কড়া জবাব দিলেন তাঁরই দলের দুই নেত্রী তথা টলিউডের অভিনেত্রী শ্রীতমা ভট্টাচার্য ও সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ মূলত, 'দ্য ডায়েরি অফ ওয়েস্ট বেঙ্গল' ছবির মুক্তির বিরোধিতা করেই একাধিক পোস্ট করেন কুণাল ৷ তারপরেই শুরু হয়েছে বিতর্ক ৷
বাংলার ভাবমূর্তি নষ্ট করা হিন্দিতে মুক্তিপ্রাপ্ত প্ররোচনামূলক একটি ছবির প্রতিবাদে টলিউডের নিষ্ক্রিয়তা, নীরবতা নিয়ে পোস্ট করেছিলাম।
— Kunal Ghosh (@KunalGhoshAgain) August 31, 2024
অনেক সমর্থন, কিছু বিরোধিতা পেলাম।
টলিউডের যাঁরা বিরোধিতা করলেন, আমার জন্য সময় নষ্ট না করে, ওই ছবিটার বিরুদ্ধে একটা পোস্ট তো অন্তত করতে পারতেন।
একনজরে দেখা যাক এক্স হ্যান্ডেলে ঠিক কী বক্তব্য রাখেন কুণাল ঘোষ...
কুণাল ঘোষ সামাজিক মাধ্যমে লেখেন, "আফসোস লাগে । মুম্বই ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির বহু পরিচালক, প্রযোজক, অভিনেতা এমন কিছু রাজনৈতিক ছবি করেন যা সমাজে বিজেপির পক্ষে ন্যারেটিভ তৈরি করে । এবার তো বাংলা নিয়েও কুৎসার ঝুলি আসছে । অথচ টলিগঞ্জের বাবু/বিবিরা, যাঁরা মমতাদির পাশে, দলে, মঞ্চে, ছবির ফ্রেমে থাকেন, তাঁরা নিজেদের ইমেজ গড়তে, পেশার সৌজন্য নিয়ে ব্যস্ত।..."
বাংলার ভাবমূর্তি নষ্ট করতে আজ এই ছবির মুক্তি। ভুল ন্যারেটিভ, কুৎসা, সাম্প্রদায়িক ইঙ্গিত, প্ররোচনা।
— Kunal Ghosh (@KunalGhoshAgain) August 30, 2024
টালিগঞ্জ ইন্ডাস্ট্রি, বিশেষত আমাদের দলের সঙ্গে যাঁরা জড়িত, তাঁরা প্রতিবাদ করবেন না?
ছবির আজ মুক্তি। আজও এঁরা নীরবে বসে থাকবেন? বাংলার ইন্ডাস্ট্রি প্রতিবাদ করবে না? pic.twitter.com/zrc4WUNo02
তিনি আরও বলেন, "দিদির পাশে ছবি দিয়ে গুরুত্ব বাড়ান, কিন্তু মমতাদির বায়োপিক বা তৃণমূলের পক্ষে বার্তা যেতে পারে, এমন কোনও সিনেমার কথা তাঁরা ভাবেন না ৷ বরং টেকনিশিয়ানরা অনেক বেশি দরদী। এরা অনেক বড় নাম হতে পারেন, কিন্তু এদের অনেকেই দলের বোঝা। দলের সুসময়ে এরা হাত নেড়ে সামনে থাকেন। একটু বিতর্কিত ইস্যুতে দল পড়লেই এরা মুখ খোলা বন্ধ করেন ।" এমন পোস্ট সামনে আসার পর তৃণমূলের দুই নেত্রী তথা অভিনেত্রীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে ইটিভি ভারত ৷
'They' have made film on WB only to defame us.
— Kunal Ghosh (@KunalGhoshAgain) August 30, 2024
What is Tolly industry doing, specially those producers, directors, actors, who r active in @AITCofficial , holding posts, enjoying shadow of power, sharing stages with Didi, AB; what r they doing to counter this type of narratives?
অভিনেত্রী তথা কাউন্সিলর শ্রীতমা ভট্টাচার্য বলেন, "এই কথা যিনি বা যাঁরা বলেছেন বা বলতে চাইছেন তাঁকে বা তাঁদেরকে বলি, এই কথাটা কাদের উদ্দেশ্য করে বলা আমি জানি না। তবে, এই কথাটা আমার ক্ষেত্রে খাটবে না ৷ আমি 2011 সালের পর থেকে দিদির সুদিনে যতটা না ছিলাম তার থেকে অনেক বেশি ছিলাম দিদির দুর্দিনে। যতটা আমার পক্ষে সম্ভব ছিল ৷ আমরা ইন্ডাস্ট্রির যাঁরা দিদিকে সত্যিকারের ভালোবাসি তাঁরা কীভাবে দিদির পাশে আছি বা থাকব সেটা দিদি জানেন। তার জন্য প্রমাণ দিতে লাগবে না। "
শ্রীতমা আরও বলেন, "দিদি সবসময় আমাদের পাশে আছেন। গোটা ইন্ডাস্ট্রির পাশে আছেন। তাই আমরা টলিউডের মানুষও ওঁর পাশে আছি। দিদির বিরোধিতা করে কোনও ছবি এলে আমাদেরও খারাপ লাগবে। আর ছবি ব্যানের প্রসঙ্গে বলব ছবিটা দেখার আগেই অনুমানের বশে ব্যান করার পক্ষপাতী আমি নয়। ট্রেলার কিংবা প্রোমোতে যা দেখানো হয় তা ছবির ভিতরে হুবহু নাও থাকতে পারে।"
অভিনেত্রী তথা বিধায়ক সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "কুণালদা যেটা বলার সেটা বলে দিয়েছেন। এই নিয়ে আমার নতুন করে কিছু বলার নেই। ওঁর মনে হয়েছে উনি বলেছেন। তবে একজন অভিনেত্রী, জনপ্রতিনিধি এবং বাংলার মানুষ হিসেবে আমি বলব, এই সময়ে এই ছবি দেখানোর কোনও মানে হয় না ৷ শুধু ছবি কেন এমন কোনও কন্টেন্ট, ভিডিয়ো যা বাংলাকে অশান্ত করতে পারে তার কিছুই দেখানো এই মুহূর্তে উচিত না বলে মনে করি আমি। এখন কি কেউ সিনেমা হলে গিয়ে ছবি দেখার মতো অবস্থায় আছে? রাজ দা'র 'বাবলি' মুক্তি পেল কিন্তু প্রিমিয়ারও হল না। 'পদাতিক'ও তাই। কত ছবির মুক্তি পিছিয়ে গিয়েছে আরজি করের এই ঘটনার জেরে। এখন প্ররোচনা দেওয়ার সময় নয়। এখন বিচার পাওয়ার সময়।"
অন্যদিকে, বাদশা মৈত্র সাফ জানান, "কুণাল ঘোষ যা বলেছেন তা তিনি তাঁদের দলের অভ্যন্তরীণ প্রতিনিধি যাঁরা টলিপাড়ার অভিনেতাও বটে তাঁদের নিয়ে বলেছেন। তাই এটা তাঁদের একেবারে পারিবারিক ব্যাপার। এই নিয়ে আমি তৃতীয় ব্যক্তি কিছু বলতে চাই না।"