ETV Bharat / entertainment

ফাঁসির আগে শেষ ইচ্ছা রফির গান শোনা, শিল্পীর জন্মশতবার্ষিকীতে রইল অজানা কিছু তথ্য - MOHAMMED RAFI BIRTH ANNIVERSARY

1924 সালের আজকের দিনে জন্মগ্রহণ করেন প্রবাদপ্রতীম সঙ্গীতশিল্পী মহম্মদ রফি ৷ 100তম জন্মবার্ষিকীতে শিল্পীকে নিয়ে রইল অজানা কিছু তথ্য ৷

Mohammed Rafi Birth Anniversary
প্রবাদপ্রতীম সঙ্গীতশিল্পী মহম্মদ রফি (ফাইল ছবি)
author img

By ETV Bharat Entertainment Team

Published : 14 hours ago

হায়দরাবাদ, 24 ডিসেম্বর: ফাঁসির মঞ্চ তৈরি ৷ অভিযুক্তকে প্রশ্ন করা হয় তাঁর শেষ ইচ্ছার কথা ৷ অভিযুক্ত বলেন তিনি মহম্মদ রফির গান শুনতে চান ৷ মৃত্যুর আগে সেই অভিযুক্ত শোনেন 'বইজু বাওয়ারা' সিনেমার গান ও 'দুনিয়া কে রখ ওয়ালে...' ৷ শ্রোতা মনে এমনই জাদু তৈরি করেছিলেন প্রবাদপ্রতীম সঙ্গীতশিল্পী মহম্মদ রফি ৷

1924 সালের আজকের দিনে জন্মগ্রহণ করেন কিংবদন্তী সঙ্গীতশিল্পী ৷ তাঁর 100তম জন্মবার্ষিকীতে শিল্পীকে নিয়ে রইল অজানা কিছু তথ্য ৷

1) গবেষকদের মতো রফি সঙ্গীত জীবনে প্রায় 7 হাজার 405টি গান গেয়েছেন ৷ কিন্তু বিদেশে এক মিউজিক কনসার্টে মহম্মদ রফিকে পরিচয় করানোর সময় ঘোষণা করা হয় কিনি 26 হাজার গান গেয়েছেন ৷ তারপর জনগণ সেই তথ্যই গ্রহণ করেছে ফ্যাক্ট চেক না করেই ৷

2) বলিউডে মহম্মদ রফিকে পিছনে ফেলায় বড় ভূমিকা ছিল আর.ডি বর্মনের ৷ কারণ তখন তিনি সামনে আনেন কিশোর কুমারকে ৷ আরাধনা ছবিতে মেরে স্বপ্নো কি রানি গান গেয়ে যিনি দর্শক মনে আলাদা জায়গা করে নেন ৷

3) একবার মুখোমুখি প্রতিযোগিতায় আসেন মহম্মদ রফি-কিশোর কুমার ৷ কিন্তু সেটা তাঁদের অজান্তেই ৷ কারণ নেপথ্যে ছিলেন আরডি বর্মন ৷ 1969 সালের ছবি প্যায়ার কা মৌসম ছবির গান তুম বিন জায়ু কাহা গান আরডি রফি ও কিশোর কুমার দুজনের সঙ্গেই রেকর্ড করেন ৷ তবে মজার বিষয় দুটি স্বরই ব্যবহার সিনেমায় ৷ কারণ ছবিতে দুটো চরিত্র ছিল ৷ রফির স্বর ব্যবহার হয় শশী কাপুরের জন্য ৷ কিশোর কুমারের স্বর ব্যবহার করা হয় ভারত ভূষণের জন্য ৷

4) রফির অধিকাংশ গান হিন্দিতেই ৷ মাত্র 162টি গান তিনি গেয়েছেন ভিন্ন ভাষায় ৷

5) অনেকেই জানেন না, গানের পাশাপাশি ছবিতে ভয়েস দিতেন মহম্মদ রফি ৷ তিনি সিনেমায় প্রায় 517টি চরিত্রে কণ্ঠ দিয়েছেন ৷

6) 1965 সালে মুক্তি পায় গুমনাম সিনেমা ৷ ছবিতে রফির কণ্ঠে একটি গান রয়েছে 'জান পেহচান হো' ৷ সেই গান 2001 সালে হলিউড ছবি 'ঘোস্ট ওয়ার্ল্ড'-এ ব্যবহার করা হয়েছে ৷

7) একদা এইচএমভি ঠিক করে মহম্মদ রফির স্যাড সং-এর কালেকশন রিলিজ করবে ৷ সেই কারণে ঠিক করা হয়, রফির একটি দুঃখের ফেস ব্যবহার করা হবে ৷ কিন্তু লাইব্রেরী-সহ একাধিক জায়গায় খোঁজার পরেও রফির স্যাড ফেস কোথাও মেলে না ৷ অবশেষে, রফির দুঃখের গানের কালেকশনের মুক্তি দেওয়া হয় হাসিমুখের ছবি দিয়েই ৷

8) রফি, একদা প্রতিবেশি বিধবাকে টাকা পাঠাতেন ৷ সঙ্গীতশিল্পীর মৃত্যুর পর টাকা পাঠানো বন্ধ হয়ে যায় ৷ এরপর সেই বিধবা মহিলা পোস্ট অফিসে গিয়ে খোঁজ নেন ৷ তখন তিনি জানতে পারেন, যে মানি অর্ডার তাঁকে কে পাঠাতেন ৷

9) মৃত্যুর ঠিক একদিন আগে নওশাদের জন্য গান রেকর্ড করেছিলেন মহম্মদ রফি ৷ ছবির নাম ছিল হাব্বা খাতুন ৷ গানের লিরিক্স ছিল, "জিস রাত কা খাওয়াব আয়ে, ও রাত আয়ি..." ৷ গানের রেকর্ড শেষ হওয়ার পরেই স্টুডিয়ো থেকে বেরিয়ে রফি কাঁদতে কাঁদতে জড়িয়ে ধরেন নওশাদকে ৷ তিনি বলেন, "অনেকদিন পর এক দারুণ গান গাইলাম ৷ আজ অনেক শান্তি পেলাম ৷ এখন মন করছে এবার আমি পৃথিবী ছেড়ে চলে যেতে পারি ৷" তার পরের দিনই মৃত্যু হয় রফির ৷ এমনটা হবে, ভাবতে পারেননি নওশাদ ৷ এমনকী, এই গানের জন্য তৈরি চেকও নেননি রফি ৷

10) 1980 সালের 31 জুলাই, মৃত্যুর ঠিক কয়েক ঘণ্টা আগে রফি জীবনের শেষ গান রেকর্ড করেন ৷ গান রেকর্ড শেষ করে তিনি বাড়ি যান ৷ তারপরেই তিনি অসুস্থ বোধ করেন ৷ তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে ৷ রাত 10.25 নাগাদ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে প্রয়াত হন ভারতীয় সঙ্গীত জগতের অন্যতম এক মহীরুহ মহম্মদ রফি ৷ ৷

হায়দরাবাদ, 24 ডিসেম্বর: ফাঁসির মঞ্চ তৈরি ৷ অভিযুক্তকে প্রশ্ন করা হয় তাঁর শেষ ইচ্ছার কথা ৷ অভিযুক্ত বলেন তিনি মহম্মদ রফির গান শুনতে চান ৷ মৃত্যুর আগে সেই অভিযুক্ত শোনেন 'বইজু বাওয়ারা' সিনেমার গান ও 'দুনিয়া কে রখ ওয়ালে...' ৷ শ্রোতা মনে এমনই জাদু তৈরি করেছিলেন প্রবাদপ্রতীম সঙ্গীতশিল্পী মহম্মদ রফি ৷

1924 সালের আজকের দিনে জন্মগ্রহণ করেন কিংবদন্তী সঙ্গীতশিল্পী ৷ তাঁর 100তম জন্মবার্ষিকীতে শিল্পীকে নিয়ে রইল অজানা কিছু তথ্য ৷

1) গবেষকদের মতো রফি সঙ্গীত জীবনে প্রায় 7 হাজার 405টি গান গেয়েছেন ৷ কিন্তু বিদেশে এক মিউজিক কনসার্টে মহম্মদ রফিকে পরিচয় করানোর সময় ঘোষণা করা হয় কিনি 26 হাজার গান গেয়েছেন ৷ তারপর জনগণ সেই তথ্যই গ্রহণ করেছে ফ্যাক্ট চেক না করেই ৷

2) বলিউডে মহম্মদ রফিকে পিছনে ফেলায় বড় ভূমিকা ছিল আর.ডি বর্মনের ৷ কারণ তখন তিনি সামনে আনেন কিশোর কুমারকে ৷ আরাধনা ছবিতে মেরে স্বপ্নো কি রানি গান গেয়ে যিনি দর্শক মনে আলাদা জায়গা করে নেন ৷

3) একবার মুখোমুখি প্রতিযোগিতায় আসেন মহম্মদ রফি-কিশোর কুমার ৷ কিন্তু সেটা তাঁদের অজান্তেই ৷ কারণ নেপথ্যে ছিলেন আরডি বর্মন ৷ 1969 সালের ছবি প্যায়ার কা মৌসম ছবির গান তুম বিন জায়ু কাহা গান আরডি রফি ও কিশোর কুমার দুজনের সঙ্গেই রেকর্ড করেন ৷ তবে মজার বিষয় দুটি স্বরই ব্যবহার সিনেমায় ৷ কারণ ছবিতে দুটো চরিত্র ছিল ৷ রফির স্বর ব্যবহার হয় শশী কাপুরের জন্য ৷ কিশোর কুমারের স্বর ব্যবহার করা হয় ভারত ভূষণের জন্য ৷

4) রফির অধিকাংশ গান হিন্দিতেই ৷ মাত্র 162টি গান তিনি গেয়েছেন ভিন্ন ভাষায় ৷

5) অনেকেই জানেন না, গানের পাশাপাশি ছবিতে ভয়েস দিতেন মহম্মদ রফি ৷ তিনি সিনেমায় প্রায় 517টি চরিত্রে কণ্ঠ দিয়েছেন ৷

6) 1965 সালে মুক্তি পায় গুমনাম সিনেমা ৷ ছবিতে রফির কণ্ঠে একটি গান রয়েছে 'জান পেহচান হো' ৷ সেই গান 2001 সালে হলিউড ছবি 'ঘোস্ট ওয়ার্ল্ড'-এ ব্যবহার করা হয়েছে ৷

7) একদা এইচএমভি ঠিক করে মহম্মদ রফির স্যাড সং-এর কালেকশন রিলিজ করবে ৷ সেই কারণে ঠিক করা হয়, রফির একটি দুঃখের ফেস ব্যবহার করা হবে ৷ কিন্তু লাইব্রেরী-সহ একাধিক জায়গায় খোঁজার পরেও রফির স্যাড ফেস কোথাও মেলে না ৷ অবশেষে, রফির দুঃখের গানের কালেকশনের মুক্তি দেওয়া হয় হাসিমুখের ছবি দিয়েই ৷

8) রফি, একদা প্রতিবেশি বিধবাকে টাকা পাঠাতেন ৷ সঙ্গীতশিল্পীর মৃত্যুর পর টাকা পাঠানো বন্ধ হয়ে যায় ৷ এরপর সেই বিধবা মহিলা পোস্ট অফিসে গিয়ে খোঁজ নেন ৷ তখন তিনি জানতে পারেন, যে মানি অর্ডার তাঁকে কে পাঠাতেন ৷

9) মৃত্যুর ঠিক একদিন আগে নওশাদের জন্য গান রেকর্ড করেছিলেন মহম্মদ রফি ৷ ছবির নাম ছিল হাব্বা খাতুন ৷ গানের লিরিক্স ছিল, "জিস রাত কা খাওয়াব আয়ে, ও রাত আয়ি..." ৷ গানের রেকর্ড শেষ হওয়ার পরেই স্টুডিয়ো থেকে বেরিয়ে রফি কাঁদতে কাঁদতে জড়িয়ে ধরেন নওশাদকে ৷ তিনি বলেন, "অনেকদিন পর এক দারুণ গান গাইলাম ৷ আজ অনেক শান্তি পেলাম ৷ এখন মন করছে এবার আমি পৃথিবী ছেড়ে চলে যেতে পারি ৷" তার পরের দিনই মৃত্যু হয় রফির ৷ এমনটা হবে, ভাবতে পারেননি নওশাদ ৷ এমনকী, এই গানের জন্য তৈরি চেকও নেননি রফি ৷

10) 1980 সালের 31 জুলাই, মৃত্যুর ঠিক কয়েক ঘণ্টা আগে রফি জীবনের শেষ গান রেকর্ড করেন ৷ গান রেকর্ড শেষ করে তিনি বাড়ি যান ৷ তারপরেই তিনি অসুস্থ বোধ করেন ৷ তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে ৷ রাত 10.25 নাগাদ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে প্রয়াত হন ভারতীয় সঙ্গীত জগতের অন্যতম এক মহীরুহ মহম্মদ রফি ৷ ৷

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.