দার্জিলিং, 24 ডিসেম্বর: পাহাড়ের জঙ্গলে খাদ্যের বাস্তুতন্ত্র বজায় রাখার উদ্যোগ নিল বন দফতর। মঙ্গলবার কার্শিয়াং বনবিভাগের অধীন সিঙ্গালিলা জাতীয় উদ্যান ও শিলিগুড়ি সংলগ্ন মহানন্দা অভয়ারণ্যে ছাড়া হল হিমালয়ান গোড়াল ও রেড জঙ্গল ফাউল।
মঙ্গলবার রাজ্যের বনমন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদার উপস্থিতিতে ওই প্রাণীগুলোকে জঙ্গলে ছাড়া হয়। বনমন্ত্রী ছাড়াও এদিন উপস্থিত ছিলেন উত্তরবঙ্গের মুখ্য বনপাল (বন্যপ্রাণ) ভাস্কর জেভি, দার্জিলিং চিড়িয়াখানার ডিরেক্টর বাসবরাজ হোলেইয়াচি, মহানন্দা অভয়ারণ্যের সহকারি ওয়াইল্ডলাইফ ওয়ার্ডেন সন্টু দাস-সহ অন্যারা।
বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন সিঙ্গালিলা জাতীয় উদ্যানে 10টি হিমালয়ান গোড়াল ছাড়ার উদ্যোগ নিয়েছে বন দফতর। তার মধ্যে এদিন পাঁচটি হরিণ প্রজাতির ওই গোড়াল জঙ্গলে ছাড়া হয়। হরিণ প্রজাতির ওই গোড়াল মূলত পাহাড়ের জঙ্গলে থাকা ক্লাউডেড লেপার্ড, লেপার্ডের মতো প্রাণীদের খাবার।
মূলত কার্শিয়াং বন বিভাগের অধীন দার্জিলিং চিড়িয়াখানায় হিমালয়ান গোড়াল সংরক্ষণ ও প্রজনন কেন্দ্র থেকে ওই হরিণগুলোকে নিয়ে এসে ছাড়া হয়। এছাড়াও সিঙ্গালিলার জঙ্গলে হিমালয়ান গোড়ালের সংখ্যা বৃদ্ধির জন্যও ওই উদ্যোগ বলে জানা গিয়েছে। একইভাবে এদিন মহানন্দা অভয়ারণ্যে দার্জিলিং চিড়িয়াখানায় থাকা প্রজনন কেন্দ্র থেকে 10 জোড়া রেড জঙ্গল ফাউলের ছাড়া হয় ৷ রেড জঙ্গল ফাউল মূলত অজগর ও বিড়াল প্রজাতির প্রাণীদের খাবার। এছাড়াও রেড জঙ্গল ফাউল ছোট ছোট কীট খেয়ে জঙ্গলের বাস্তুতন্ত্র বজিয়ে রাখে।
এবিষয়ে রাজ্যের বনমন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা বলেন, "জঙ্গলে খাদ্য ও খাদকের সামঞ্জস্য যাতে বজায় থাকে সেকারণে এই দুই ধরণের প্রাণী ছাড়া হল।" উত্তরবঙ্গের মুখ্য বনপাল (বন্যপ্রাণ) ভাস্কর জেভি বলেন, "সিঙ্গালিলার জঙ্গলে যেহেতু লেপার্ড জাতীয় প্রাণীর সংখ্যা বেশি সেকারণে সেখানে হিমালয়ান গোড়াল নামে হরিণ প্রজাতির প্রাণী ছাড়া হল। একইভাবে মহানন্দা অভয়ারণ্যে পাইথন ও বিড়াল প্রজাতির প্রাণী বেশি রয়েছে।
যারা এই রেড জঙ্গল ফাউল প্রজাতির পাখিদের শিকার করে খায়। সেজন্য এই পাখি গুলোকে ছাড়া হল। এতে দু'টো জঙ্গলেই হিমালয়ান গোড়াল ও রেড জঙ্গল ফাউলের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে। পাশাপাশি খাদ্যের ভারসাম্য বজায় থাকবে।" প্রসঙ্গত, হিমালয়ের জঙ্গলে হিমালয়ান গোড়ালের সংখ্যা 500 থেকে 700-র মতো রয়েছে।