ETV Bharat / entertainment

'বয়স কম, শুধু জানে অন্যায় হলে প্রতিবাদ করতে হয়'- অভিনব শিক্ষা দিচ্ছেন তারকা সন্তানের বাবা-মায়েরা - Kolkata Doctor Rape and Murder Case

Tollywood Child Actor's Parents on Current Situations: চারদিকে যা অস্থির পরিস্থিতি সেখানে দাঁড়িয়ে সন্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত অনেক অভিভাবকরাই ৷ সঠিক মানবিক বিকাশ ও সন্তানের সুন্দর ভবিষ্যতের জন্য মার্শাল আর্ট-ক্যারাটে শেখানো উচিত না গুড টাচ-ব্যাড টাচ বোঝানো উচিত? টলিউডের শিশু শিল্পীদের বাবা-মায়েরা কী ভাবছেন সরেজমিনে জেনে নিল ইটিভি ভারত।

Tollywood Child Actor's Parents on Current Situations
নতুন শিক্ষা দিচ্ছেন তারকা সন্তানের বাবা-মায়েরা (ইটিভি ভারত)
author img

By ETV Bharat Entertainment Team

Published : Aug 20, 2024, 7:42 PM IST

কলকাতা, 20 অগস্ট: আরজি করের নৃশংস ঘটনার প্রতিবাদে পথে নেমেছে আট থেকে আশি। প্রতিবাদ প্রতিবাদের মতো এগোচ্ছে, তদন্ত তদন্তের মতো, রাজ্য রাজ্যের মতো, দেশ দেশের মতো। কিন্তু এই সময়ে দাঁড়িয়ে সন্তানদের ভবিষ্যৎ ও একইসঙ্গে নিরাপত্তা নিয়ে বেশ চিন্তায় তাদের বাবা-মায়েরা। একই অবস্থা টলিউডের শিশু শিল্পীদের বাবা মায়েদেরও। সঠিক মানবিক বিকাশ ও সন্তানের সুন্দর ভবিষ্যতের জন্য টলিউডের শিশু শিল্পীদের বাবা-মায়েরা কী ভাবছেন সরেজমিনে জেনে নিল ইটিভি ভারত।

আরজি কর ঘটনার পর থেকে অনেক অভিভাবক ভাবতে শুরু করেছেন নাচ-গানের বদলে মেয়েকে মার্শাল আর্ট শেখানো বুদ্ধিমানের কাজ। এই বিষয়টিকে নস্যাৎ করে শিশু শিল্পী উদিতা মুন্সীর বাবা রাজা মুন্সী বলেন, "এটা উচিত নয়। তাতে বাচ্চার মনের উপর চাপ পড়বে। তার মন যদি মার্শাল আর্টে না থাকে তা হলে তার উপর চাপিয়ে দেওয়া ঠিক নয়। আর মার্শাল আর্ট জানা থাকলেও একটা মেয়েকে পাঁচটা ছেলে পিছন থেকে অ্যাটাক করলে তার পক্ষে নিজেকে রক্ষা করা সহজ বিষয় না ।"

তিনি আরও বলেন, " আমি আমার মেয়েকে সবার আগে পজিটিভ ভাইবস দেওয়ার চেষ্টা করছি । সেদিন রাতে আমাদের সঙ্গে 2 ঘণ্টা হেঁটেছে উদিতা। সবই বুঝতে পারছে। কিন্তু পুরোটা নয়। বেশি কিছু আলোচনা করা হচ্ছে না ওর সামনে। সবে ক্লাস সিক্স। স্কুলে গুড টাচ, ব্যাড টাচ শেখানো হয়। এর বেশি তো শেখানো সম্ভব নয় আমাদের। খুব গভীরে গিয়ে কিছু বোঝানোও সম্ভব নয় আমাদের। পরিস্থিতি শিখিয়ে দেবে কীভাবে নিজেকে রক্ষা করতে হবে।" রাতে কোনও মেয়েরা কাজ করবে না এই প্রসঙ্গ টেনে উদিতার বাবাও বলেন, "তা হলে সত্যিই সুরক্ষিত নয় আমাদের শহরে মেয়েরা?"

ছোটপর্দা এবং বড় পর্দার আরেক জনপ্রিয় শিশুশিল্পী লাড্ডুর মা বলেন, "সবটা বলতে পারছি না ওকে। অর্ধেক বুঝছে। আমার থেকে পুরো উত্তর না পেয়ে বন্ধুদের কাছে জিজ্ঞেস করছে। একটা বিষয়ই শেখাচ্ছি যে কারোর সঙ্গে কখনও খারাপ ব্যবহার করবে না। খারাপভাবে কথাও বলবে না, কাউকে শারীরিকভাবে আঘাতও করবে না। এর থেকে বেশি তো এখনই বোঝানো সম্ভব নয়। আর কেন এত প্রতিবাদ জানতে চাইলে বলছি, একজনের উপর অন্যায় হয়েছে। সেই অন্যায়ের বিরুদ্ধে এই প্রতিবাদ চলছে।"

অয়ন্যা চট্টোপাধ্যায়ের মা বলেন, "মেয়ে সবই দেখছে। সবে ক্লাস সিক্স। ওকে বরাবরই একটা কথা বলি যেটা তোমার ভালো লাগবে না কিংবা মনে হবে তোমার সঙ্গে ভালো হচ্ছে না সেখানে দাঁড়িয়ে চিৎকার করে বলবে। কোনও স্পর্শ খারাপ বলে মনে হলে লুকিয়ে রাখবে না। সঙ্গে সঙ্গে বলবে। প্রতিবাদ করবে। আমাদের বলবে। নিজেকে সাবধান যেমন থাকতে হবে পারিপার্শ্বিক পরিবেশটাও তো ভালো হওয়া দরকার। "

অনুমেঘা কাহালির মা বলেন, "এই মুহূর্তে আমি দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ছাড়া আর কিছু ভাবতে পারছি না। অনুমেঘা এখনও অনেক ছোট। কিছুই বুঝতে পারছে না। শুধু জানে কিছু খারাপ লোক একজনকে খুব কষ্ট দিয়ে মেরেছে। যাদের শাস্তি হওয়া উচিত।" তিনি বলেন, "আমি ওকে চোখ-কান খোলা রেখে চলতে বলি। কোনও অপরিচিতর কাছে যেতে বারণ করি। কেউ হঠাৎ করে কোলে নিতে চাইলে উঠতে বারণ করি। অচেনা কেউ কিছু দিলে খেতে বারণ করি। বাকিটা পরিস্থিতি আর সময় শিখিয়ে দেবে। তবে, সমাজ নিয়ে ভয় ভীতি জন্ম নিলে সেটা ওদের জন্য খারাপ হবে বলে আমার মনে হয়।"

তিনি আরও বলেন, "আমার মেয়ে পড়াশুনা, নাচ, গান, অভিনয় করে। আলাদা করে নিজেকে প্রোটেক্ট করার জন্য মার্শাল আর্টে ভর্তি করিনি। এটা নিয়ে এই ঘটনার পর অনেই কথা হচ্ছে। ওদের স্কুলে এগুলো এমনিই শেখানো হয়। ওর যদি পরে আগ্রহ দেখি আলাদা করে শেখাব। তবে, আমার মনে হয় না পাঁচটা ছেলে কোনও মেয়ের হাত ধরলে একটা মেয়ের পক্ষে ক্যারাটে, তাইকুন্ডো দিয়ে নিজেকে রক্ষা করতে পারবে।"

কলকাতা, 20 অগস্ট: আরজি করের নৃশংস ঘটনার প্রতিবাদে পথে নেমেছে আট থেকে আশি। প্রতিবাদ প্রতিবাদের মতো এগোচ্ছে, তদন্ত তদন্তের মতো, রাজ্য রাজ্যের মতো, দেশ দেশের মতো। কিন্তু এই সময়ে দাঁড়িয়ে সন্তানদের ভবিষ্যৎ ও একইসঙ্গে নিরাপত্তা নিয়ে বেশ চিন্তায় তাদের বাবা-মায়েরা। একই অবস্থা টলিউডের শিশু শিল্পীদের বাবা মায়েদেরও। সঠিক মানবিক বিকাশ ও সন্তানের সুন্দর ভবিষ্যতের জন্য টলিউডের শিশু শিল্পীদের বাবা-মায়েরা কী ভাবছেন সরেজমিনে জেনে নিল ইটিভি ভারত।

আরজি কর ঘটনার পর থেকে অনেক অভিভাবক ভাবতে শুরু করেছেন নাচ-গানের বদলে মেয়েকে মার্শাল আর্ট শেখানো বুদ্ধিমানের কাজ। এই বিষয়টিকে নস্যাৎ করে শিশু শিল্পী উদিতা মুন্সীর বাবা রাজা মুন্সী বলেন, "এটা উচিত নয়। তাতে বাচ্চার মনের উপর চাপ পড়বে। তার মন যদি মার্শাল আর্টে না থাকে তা হলে তার উপর চাপিয়ে দেওয়া ঠিক নয়। আর মার্শাল আর্ট জানা থাকলেও একটা মেয়েকে পাঁচটা ছেলে পিছন থেকে অ্যাটাক করলে তার পক্ষে নিজেকে রক্ষা করা সহজ বিষয় না ।"

তিনি আরও বলেন, " আমি আমার মেয়েকে সবার আগে পজিটিভ ভাইবস দেওয়ার চেষ্টা করছি । সেদিন রাতে আমাদের সঙ্গে 2 ঘণ্টা হেঁটেছে উদিতা। সবই বুঝতে পারছে। কিন্তু পুরোটা নয়। বেশি কিছু আলোচনা করা হচ্ছে না ওর সামনে। সবে ক্লাস সিক্স। স্কুলে গুড টাচ, ব্যাড টাচ শেখানো হয়। এর বেশি তো শেখানো সম্ভব নয় আমাদের। খুব গভীরে গিয়ে কিছু বোঝানোও সম্ভব নয় আমাদের। পরিস্থিতি শিখিয়ে দেবে কীভাবে নিজেকে রক্ষা করতে হবে।" রাতে কোনও মেয়েরা কাজ করবে না এই প্রসঙ্গ টেনে উদিতার বাবাও বলেন, "তা হলে সত্যিই সুরক্ষিত নয় আমাদের শহরে মেয়েরা?"

ছোটপর্দা এবং বড় পর্দার আরেক জনপ্রিয় শিশুশিল্পী লাড্ডুর মা বলেন, "সবটা বলতে পারছি না ওকে। অর্ধেক বুঝছে। আমার থেকে পুরো উত্তর না পেয়ে বন্ধুদের কাছে জিজ্ঞেস করছে। একটা বিষয়ই শেখাচ্ছি যে কারোর সঙ্গে কখনও খারাপ ব্যবহার করবে না। খারাপভাবে কথাও বলবে না, কাউকে শারীরিকভাবে আঘাতও করবে না। এর থেকে বেশি তো এখনই বোঝানো সম্ভব নয়। আর কেন এত প্রতিবাদ জানতে চাইলে বলছি, একজনের উপর অন্যায় হয়েছে। সেই অন্যায়ের বিরুদ্ধে এই প্রতিবাদ চলছে।"

অয়ন্যা চট্টোপাধ্যায়ের মা বলেন, "মেয়ে সবই দেখছে। সবে ক্লাস সিক্স। ওকে বরাবরই একটা কথা বলি যেটা তোমার ভালো লাগবে না কিংবা মনে হবে তোমার সঙ্গে ভালো হচ্ছে না সেখানে দাঁড়িয়ে চিৎকার করে বলবে। কোনও স্পর্শ খারাপ বলে মনে হলে লুকিয়ে রাখবে না। সঙ্গে সঙ্গে বলবে। প্রতিবাদ করবে। আমাদের বলবে। নিজেকে সাবধান যেমন থাকতে হবে পারিপার্শ্বিক পরিবেশটাও তো ভালো হওয়া দরকার। "

অনুমেঘা কাহালির মা বলেন, "এই মুহূর্তে আমি দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ছাড়া আর কিছু ভাবতে পারছি না। অনুমেঘা এখনও অনেক ছোট। কিছুই বুঝতে পারছে না। শুধু জানে কিছু খারাপ লোক একজনকে খুব কষ্ট দিয়ে মেরেছে। যাদের শাস্তি হওয়া উচিত।" তিনি বলেন, "আমি ওকে চোখ-কান খোলা রেখে চলতে বলি। কোনও অপরিচিতর কাছে যেতে বারণ করি। কেউ হঠাৎ করে কোলে নিতে চাইলে উঠতে বারণ করি। অচেনা কেউ কিছু দিলে খেতে বারণ করি। বাকিটা পরিস্থিতি আর সময় শিখিয়ে দেবে। তবে, সমাজ নিয়ে ভয় ভীতি জন্ম নিলে সেটা ওদের জন্য খারাপ হবে বলে আমার মনে হয়।"

তিনি আরও বলেন, "আমার মেয়ে পড়াশুনা, নাচ, গান, অভিনয় করে। আলাদা করে নিজেকে প্রোটেক্ট করার জন্য মার্শাল আর্টে ভর্তি করিনি। এটা নিয়ে এই ঘটনার পর অনেই কথা হচ্ছে। ওদের স্কুলে এগুলো এমনিই শেখানো হয়। ওর যদি পরে আগ্রহ দেখি আলাদা করে শেখাব। তবে, আমার মনে হয় না পাঁচটা ছেলে কোনও মেয়ের হাত ধরলে একটা মেয়ের পক্ষে ক্যারাটে, তাইকুন্ডো দিয়ে নিজেকে রক্ষা করতে পারবে।"

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.