ETV Bharat / entertainment

'শিল্পের আঙিনায় বাংলাদেশে পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ নেই', ফেডারেশনের নিয়ম নিয়ে সরব ঢাকার পরিচালক-অভিনেতা - Rules of FCTWEI in Kolkata

Rules of Federation in Kolkata: ডিরেক্টর্স গিল্ড ও ফেডারেশনের দ্বন্দ্বে জল গড়িয়েছে অনেক দূর ৷ সমঝোতা হলেও প্রশ্ন থাকছে বেশ কিছু জায়গায় ৷ যার মধ্যে বড় প্রশ্ন, বাইরে থেকে লগ্নি আসা নিয়ে ৷ বিদেশ থেকে কলকাতায় শুটিং করতে আসা দলকে যে নিয়মের মধ্যে পড়তে হয়, তাতে ক্ষতি বাংলা ইন্ডাষ্ট্রির ৷ মনে করছেন বাংলাদেশের পরিচালক-অভিনেতারা ৷

Rules of Federation in Kolkata
ফেডারেশনের নিয়ম নিয়ে সরব ঢাকার পরিচালক-অভিনেতা (ইটিভি ভারত)
author img

By ETV Bharat Entertainment Team

Published : Aug 6, 2024, 4:40 PM IST

কলকাতা, 6 অগস্ট: ফেডারেশনের এতদিনের বেশ কিছু নিয়মকানুনে সংশোধন হতে চলেছে। আগামী নভেম্বর মাসের মধ্যেই গঠন করা হচ্ছে রিভিউ কমিটি। কিন্তু তার আগেই ফেডারেশনের হরেক নিয়মনীতির চক্করে বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির যে ক্ষতি হল তার হিসেব কে দেবে? উঠেছে প্রশ্ন। এই পরিস্থিতিতে কী বলছেন বাংলাদেশের প্রখ্যাত চলচ্চিত্র পরিচালকেরা? জেনে নিল ইটিভি ভারত।

চলচ্চিত্র পরিচালক রফিক শিকদার বলেন, "কলকাতার চে‌য়ে অ‌নেক বে‌শি কা‌রিগ‌রি সু‌যোগ সু‌বিধা আ‌ছে আমা‌দের সরকারি প্রতিষ্ঠান বিএফ‌ডি‌সি‌তে। কলকাতার এমন নী‌তি‌তে বাংলা‌দে‌শের সি‌নেমা শি‌ল্পের উপর প্রভাব পড়‌বে ব‌লে আমি ম‌নে ক‌রি না। আরও একটা কথা বলি, আমা‌দের এখা‌নে এমন পক্ষপাতদুষ্ট নী‌তি কখ‌নোই ছিল না, এখ‌নও নেই।"

তিনি আরও বলেন, "দুই বাংলার শিল্প সংস্কৃ‌তির মেলবন্ধ‌ন দি‌য়ে রাষ্ট্রসীমানার শক্ত পিলার এবং তার স‌ঙ্গে জড়া‌নো কাঁটাতা‌রের পার্থক্য সরিয়ে কলকাতায় এক‌টি সি‌নেমার শু‌টিং ক‌রে‌ছিলাম। দুই বাংলার চল‌চ্চিত্র শিল্প এবং এর স‌ঙ্গে সং‌শ্লিষ্ট সক‌লের মা‌ঝে অ‌বি‌চ্ছেদ‌্য সম্পর্ক গড়ার বিন্দুমাত্র স্ব‌দিচ্ছা থাক‌লে কলকাতা এমন এক‌টি অন‌্যায‌্য নী‌তির পথ বে‌ছে নি‌তে ন‌া। আ‌মি বিশ্বাস কর‌তে চাই কলকাতার চল‌চ্চিত্রের সঙ্গে যুক্ত মানুষেরা সং‌শ্লিষ্ট গুণীজ‌নেরা এই নী‌তির বিরুদ্ধাচরণ ক‌রে দুই বাংলার চল‌চ্চিত্র শি‌ল্পের প্রসার ঘটা‌তে সহায়তা কর‌বেন।"

অভিনেতা-পরিচালক রাশেদ রহমান বলেন, "বিষয়টাকে যদি একজন অভিনেতার দিক থেকে বলি তাহলে বলব, এটা একটা বড় সমস্যা। কারণ কোনও দেশের যে কোনও একটা ছবির সঙ্গে যুক্ত টিম যখন অন্য দেশে গিয়ে শুটিংয়ের কথা ভাবে তখন তাঁদের মূলত দুটো কারণ থাকে ৷ প্রথমত গল্পের প্রয়োজন, দ্বিতীয়ত উন্নত প্রযুক্তি। কোনও ছবি বানাতে গেলে প্রযোজক একটা নির্দিষ্ট বাজেট নিয়ে কাজ করেন। কিন্তু যখন সেই ছবি বানাতে দেশ ভেদের কারণে চার গুণের কাছাকাছি টাকা দিতে হয় তখন কিন্তু বাজেটেও প্রভাব পরে ৷"

কারণ হিসাবে রহমান জানান, কোনও প্রযোজক ছবি বানান লাভের আশায় ৷ কিন্তু চার গুণ বেশি টাকার জন্য যখন ছবির বাজেট বেড়ে যায় সেটা রিকভারি করতে বেগ পেতে হয়। একজন অভিনেতা হিসেবে ইনসিকিওরড অনুভব হয় ৷ রাশেদ আরও বলেন, "আমার দুই দেশে কাজের অভিজ্ঞতা থাকলেও এই সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়নি ৷ কিন্তু কলকাতায় কাজের সময় অনেক নিয়মের কথা শুনেছি ৷ যেমন, টিমের লোকেদের নির্দিষ্ট কোনও একটা কার্ডের মালিক হতে হবে। অথবা ছবির টিমের মেম্বাররা কতজন হবে সেটার ডিসিশন একটা নির্দিষ্ট সংস্থা নেবে। কিন্তু বাংলাদেশে কাজের সময় ঠিক এতটা কড়াকড়ি নিয়ম ফেস করিনি। এক সময় ভয় হচ্ছিল ৷ মনে হচ্ছিল, যা নিয়মকানুন, কার্ড না থাকায় আমাকেও ছবি থেকে বাদ দিতে দেওয়া হবে না তো?"

আসলে ফেডারেশনের কথায়, বাংলাদেশ হল ‘বিদেশ’। তাই এখানকার টেকনিশিয়ানেরা তাঁদের সঙ্গে কাজ করার জন্য আরও অনেক বেশি অর্থ নেবেন। যে কারণে এপার বাংলায় ‘চরকি’ কাজ করতে পারেনি বেশিদিন ৷ বলা বাহুল্য, 'চরকি’ কলকাতায় শুটিং করতে পারলে আরও অনেক ওটিটি প্ল্যাটফর্মের শুটিং হওয়ার সুযোগ হত কলকাতায় ৷ ফলে বাড়ত বাংলা ফিল্ম ইন্ডাষ্ট্রি ৷ যদি কম করে তিনটি ওটিটির শুটিং হত, তা হলে আয়ের অঙ্ক দাঁড়াত মোটামুটি দেড়শো কোটি! ফেডারেশনের কর্ণধার আর্থিক ক্ষতি নিয়ে সরব হলেও তিনি সম্ভবত এই ক্ষতির খবর রাখেননি। তবে প্রয়োজনের অধিক বাজেট এবং টেকনিশিয়ান নিয়ে কাজ করানোতে ভিন দেশের সিনেমা নির্মাতাদের যে আপত্তি আছে, তা স্পষ্ট ।

কলকাতা, 6 অগস্ট: ফেডারেশনের এতদিনের বেশ কিছু নিয়মকানুনে সংশোধন হতে চলেছে। আগামী নভেম্বর মাসের মধ্যেই গঠন করা হচ্ছে রিভিউ কমিটি। কিন্তু তার আগেই ফেডারেশনের হরেক নিয়মনীতির চক্করে বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির যে ক্ষতি হল তার হিসেব কে দেবে? উঠেছে প্রশ্ন। এই পরিস্থিতিতে কী বলছেন বাংলাদেশের প্রখ্যাত চলচ্চিত্র পরিচালকেরা? জেনে নিল ইটিভি ভারত।

চলচ্চিত্র পরিচালক রফিক শিকদার বলেন, "কলকাতার চে‌য়ে অ‌নেক বে‌শি কা‌রিগ‌রি সু‌যোগ সু‌বিধা আ‌ছে আমা‌দের সরকারি প্রতিষ্ঠান বিএফ‌ডি‌সি‌তে। কলকাতার এমন নী‌তি‌তে বাংলা‌দে‌শের সি‌নেমা শি‌ল্পের উপর প্রভাব পড়‌বে ব‌লে আমি ম‌নে ক‌রি না। আরও একটা কথা বলি, আমা‌দের এখা‌নে এমন পক্ষপাতদুষ্ট নী‌তি কখ‌নোই ছিল না, এখ‌নও নেই।"

তিনি আরও বলেন, "দুই বাংলার শিল্প সংস্কৃ‌তির মেলবন্ধ‌ন দি‌য়ে রাষ্ট্রসীমানার শক্ত পিলার এবং তার স‌ঙ্গে জড়া‌নো কাঁটাতা‌রের পার্থক্য সরিয়ে কলকাতায় এক‌টি সি‌নেমার শু‌টিং ক‌রে‌ছিলাম। দুই বাংলার চল‌চ্চিত্র শিল্প এবং এর স‌ঙ্গে সং‌শ্লিষ্ট সক‌লের মা‌ঝে অ‌বি‌চ্ছেদ‌্য সম্পর্ক গড়ার বিন্দুমাত্র স্ব‌দিচ্ছা থাক‌লে কলকাতা এমন এক‌টি অন‌্যায‌্য নী‌তির পথ বে‌ছে নি‌তে ন‌া। আ‌মি বিশ্বাস কর‌তে চাই কলকাতার চল‌চ্চিত্রের সঙ্গে যুক্ত মানুষেরা সং‌শ্লিষ্ট গুণীজ‌নেরা এই নী‌তির বিরুদ্ধাচরণ ক‌রে দুই বাংলার চল‌চ্চিত্র শি‌ল্পের প্রসার ঘটা‌তে সহায়তা কর‌বেন।"

অভিনেতা-পরিচালক রাশেদ রহমান বলেন, "বিষয়টাকে যদি একজন অভিনেতার দিক থেকে বলি তাহলে বলব, এটা একটা বড় সমস্যা। কারণ কোনও দেশের যে কোনও একটা ছবির সঙ্গে যুক্ত টিম যখন অন্য দেশে গিয়ে শুটিংয়ের কথা ভাবে তখন তাঁদের মূলত দুটো কারণ থাকে ৷ প্রথমত গল্পের প্রয়োজন, দ্বিতীয়ত উন্নত প্রযুক্তি। কোনও ছবি বানাতে গেলে প্রযোজক একটা নির্দিষ্ট বাজেট নিয়ে কাজ করেন। কিন্তু যখন সেই ছবি বানাতে দেশ ভেদের কারণে চার গুণের কাছাকাছি টাকা দিতে হয় তখন কিন্তু বাজেটেও প্রভাব পরে ৷"

কারণ হিসাবে রহমান জানান, কোনও প্রযোজক ছবি বানান লাভের আশায় ৷ কিন্তু চার গুণ বেশি টাকার জন্য যখন ছবির বাজেট বেড়ে যায় সেটা রিকভারি করতে বেগ পেতে হয়। একজন অভিনেতা হিসেবে ইনসিকিওরড অনুভব হয় ৷ রাশেদ আরও বলেন, "আমার দুই দেশে কাজের অভিজ্ঞতা থাকলেও এই সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়নি ৷ কিন্তু কলকাতায় কাজের সময় অনেক নিয়মের কথা শুনেছি ৷ যেমন, টিমের লোকেদের নির্দিষ্ট কোনও একটা কার্ডের মালিক হতে হবে। অথবা ছবির টিমের মেম্বাররা কতজন হবে সেটার ডিসিশন একটা নির্দিষ্ট সংস্থা নেবে। কিন্তু বাংলাদেশে কাজের সময় ঠিক এতটা কড়াকড়ি নিয়ম ফেস করিনি। এক সময় ভয় হচ্ছিল ৷ মনে হচ্ছিল, যা নিয়মকানুন, কার্ড না থাকায় আমাকেও ছবি থেকে বাদ দিতে দেওয়া হবে না তো?"

আসলে ফেডারেশনের কথায়, বাংলাদেশ হল ‘বিদেশ’। তাই এখানকার টেকনিশিয়ানেরা তাঁদের সঙ্গে কাজ করার জন্য আরও অনেক বেশি অর্থ নেবেন। যে কারণে এপার বাংলায় ‘চরকি’ কাজ করতে পারেনি বেশিদিন ৷ বলা বাহুল্য, 'চরকি’ কলকাতায় শুটিং করতে পারলে আরও অনেক ওটিটি প্ল্যাটফর্মের শুটিং হওয়ার সুযোগ হত কলকাতায় ৷ ফলে বাড়ত বাংলা ফিল্ম ইন্ডাষ্ট্রি ৷ যদি কম করে তিনটি ওটিটির শুটিং হত, তা হলে আয়ের অঙ্ক দাঁড়াত মোটামুটি দেড়শো কোটি! ফেডারেশনের কর্ণধার আর্থিক ক্ষতি নিয়ে সরব হলেও তিনি সম্ভবত এই ক্ষতির খবর রাখেননি। তবে প্রয়োজনের অধিক বাজেট এবং টেকনিশিয়ান নিয়ে কাজ করানোতে ভিন দেশের সিনেমা নির্মাতাদের যে আপত্তি আছে, তা স্পষ্ট ।

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.