কলকাতা, 12 সেপ্টেম্বর: "নমস্কার, খবর পড়ছি ছন্দা সেন..."- বাঙালি আজও ভুলতে পারে না সেই কণ্ঠ, সেই বাচনভঙ্গি। 1974 সালে আকাশবাণীতে যোগ দিয়েছিলেন সংবাদ পাঠিকা ছন্দা সেন ৷ 1975 থেকে কলকাতা দূরদর্শনে নিয়মিত সংবাদ পাঠ করতেন। 2006 সালে অবসর। তাঁর সংবাদ পাঠে ছিল অন্য এক ঘরানা। হ্রাসভারী গলা, অথচ খুব আপন এবং অবশ্যই বিশ্বাসযোগ্যতায় মোড়া এক কণ্ঠ। বুধবার তাঁর প্রয়াণে গভীরভাবে শোকাহত তাঁরই দীর্ঘ 49 বছরের বন্ধু তথা সংবাদ পাঠিকা তথা অভিনেত্রী চৈতালী দাশগুপ্ত। বন্ধুকে হারিয়ে ইটিভি ভারতের কাছে খুলে বসলেন স্মৃতির ভাণ্ডার ৷
চৈতালী দাশগুপ্ত বলেন, "আমি আর ছন্দা প্রায় পঞ্চাশ বছরের বন্ধু। 1975 সাল থেকে আমাদের বন্ধুত্ব। ছন্দা অনেকের সঙ্গেই যোগাযোগ রাখত না। কিন্তু যোগাযোগ ছিল আমার সঙ্গে। আড়ালে থাকতেই বেশি পছন্দ করত। আর আড়ালেই থাকত। যতটা প্রচারের দরকার ছিল ততটা হয়নি ওর। এই সোশ্যাল মিডিয়ার যুগেও ছন্দা তেমন প্রচারের আলোয় আসেনি। মানে ওকে কেউ নিয়ে আসেনি। মিডিয়া যেখানে আজ এতটা সোচ্চার সেখানেও ওর প্রচার হয়নি।"
চৈতালী আরও বলেন, " যতটা ভালো সংবাদ পড়ত ততটাই ভালো মানুষ ছিল। এত ভালো মানুষ পাওয়া কঠিন। আমার সঙ্গে প্রথম আলাপের দিনটা খুব মজার। আমি দেখে বলেছিলাম- 'ইনি ছন্দা সেন!' এতটাই সিম্পল থাকতেন। আর উনি বলেছিলেন, 'কেন আমাকে সামনে থেকে দেখে চেনা যাচ্ছে না?' আমার সঙ্গে মজা হত খুব।"
চৈতালী দাশগুপ্তর স্মৃতির পাতা যে পরিপূর্ণ তা বোঝা যাচ্ছিল। তিনি বলেন, "মেকআপ করতে বেশি সময় লাগত না ছন্দা সেনের। একটা টাচ আপ দিয়েই স্টুডিয়োতে চলে যেত। এত সুন্দর গায়ের রং ছিল ছন্দার। আর আমি ফর্সা ছিলাম বলে আমার রঙ ডাউন করতে অনেকটা সময় লেগে যেত। ছন্দা বলত, "দেখ ফর্সা হয়েছিস কেন? এবার ঘণ্টার পর ঘণ্টা মেক আপ কর।" 50 বছর মুখের কথা নয় ৷ দীর্ঘদিনের বন্ধুত্বে অবশেষে টানা হল ইতি ৷ ছন্দা সেন নেই, তবে চৈতালী দাশগুপ্তের স্মৃতির পাতায় থাকলেন চিরঅমর হয়ে ৷