ETV Bharat / entertainment

চিকিৎসকের হত্যা কিনারায় কতটা মন কাড়লেন শহরের নয়া গোয়েন্দা, জানাচ্ছে ইটিভি ভারত - ARANYER PRACHIN PROBAD REVIEW - ARANYER PRACHIN PROBAD REVIEW

Aranyer Prachin Probad Review: মুক্তি পেয়েছে 'অরণ্য'র প্রাচীন প্রবাদ' ৷ প্রথমবার গোয়েন্দা চরিত্রে জীতু কমল তাক লাগালেন দর্শকদের ৷ পরিচালক হিসাবে ক্রীড়া সাংবাদিক দুলাল দে সিনেদুনিয়ায় কেমন ম্যাজিক দেখালেন, সন্ধান দিচ্ছে ইটিভি ভারত ৷

Aranyer Prachin Probad Review
শহরে এল নতুন গোয়েন্দা অরণ্য (ইটিভি ভারত)
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Jul 8, 2024, 8:05 PM IST

কলকাতা, 7 জুলাই: এক চিকিৎসকের মৃত্যু এবং তার রহস্য সমাধান করতে গোয়েন্দা অরণ্য চট্টোপাধ্যায়ের সিআইডি তদন্ত প্রক্রিয়ায় জড়িয়ে পড়া। ক্রীড়াসাংবাদিক দুলাল দে পরিচালক হিসেবে হাতেখড়িতে শহরবাসীর সঙ্গে পরিচয় করালেন নতুন এক গোয়েন্দার ৷ মুক্তি পেয়েছে 'অরণ্য'র প্রাচীন প্রবাদ'। পরিচালক হিসাবে আত্মপ্রকাশে সিনেপ্রেমীদের কাছে কতটা পরিচিতি কুড়োতে পারলেন ক্রীড়া সাংবাদিক দুলাল দে? কেমন হল 'অরণ্য'র প্রাচীন প্রবাদ', খোঁজ নিল ইটিভি ভারত ৷

ছবির গল্প শুরু হয় অরণ্য চট্টোপাধ্যায়কে ঘিরে যিনি একজন ডাক্তারি পড়ুয়া ৷ আবার কলকাতা ময়দানের একটি প্রথম ডিভিশন ক্লাবের হয়ে ঘরোয়া লিগে ক্রিকেটটাও খেলেন। ডাক্তারির সেমিস্টারের পরীক্ষার চাপ ও বাড়িতে মায়ের কেরিয়ার সংক্রান্ত বিষয়ে চাপে বিরক্ত অরন্য ৷ মায়ের বকুনি এড়াতে তিনি পরিকল্পনা সাজান। অরন জামাইবাবু সিআইডি অফিসার।

তিনি পানাঘাটের এক ডাক্তার খুনের কিনারা করতে একমাসের জন্য বিশেষ দায়িত্ব নিয়ে সেখানে যাচ্ছেন। মায়ের বকুনি এড়াতে জামাইবাবুর প্রশ্রয়ে অরন্য-ও কলকাতা ছাড়ার পরিকল্পনা করে ফেলেন ৷ তদন্তের লেজুড় হতে অরন্য চট্টোপাধ্যায় পানাঘাটে না গেলেও পরে দেখা যায় সমগ্র তদন্ত প্রক্রিয়াতেই অগ্রণী ভূমিকা নিচ্ছেন তিনি ৷ আর এইভাবেই বাংলা সিনেমায় আরও একটা গোয়েন্দার জন্ম হতে গেল দর্শকরা ৷ ছবিতে হাড়হিম করা থ্রিলার নেই ঠিকই। আবার একটা গল্পের টানে শেষ পর্যন্ত থেকে যেতে হয় দর্শককে।

পোস্টার আর প্রোমোশন দেখে শুধু জিতু কমলকে দেখতে গেলে ভুল হয়ে যাবে। ছবির কেন্দ্রীয় চরিত্রে গোয়েন্দা অরণ্য হিসাবে ছবিতে নিজেকে উজাড় করে দিয়েছেন জিতু। একইভাবে পানাঘাটের সেই খুন হওয়া ডাক্তারের ভূমিকায় সুহোত্র মুখোপাধ্যায় অনবদ্য। অমিত ডাক্তার লাজুক, চোখ দুটো বড় মায়া জড়ানো চোখ। তবে যেহতু ছবির নামেই বলা আছে 'অরণ্য'র প্রাচীন প্রবাদ'। অরণ্য চট্টোপাধ্যায় প্রবাদ বলতে পছন্দ করেন, আরও কিছু প্রবাদ অরণ্য চট্টোপাধ্যায়ের মুখে থাকলে খারাপ হত না।

একটা ঝকঝকে ছবি। আরও নির্মেদ হত যদি শুভ্রজিৎ সিংহ'র এডিটিং বা সম্পাদনা টানটান হত। বেশ কিছু দৃশ্য অপ্রাসঙ্গিক বা এড়িয়ে যাওয়া যেত বলে মনে হয়েছে। পরিচালক দুলাল দে একজন ক্রীড়া সাংবাদিক এবং এটি তাঁর প্রথম ছবি। যে পারফরম্যান্স তিনি ক্যামেরার পিছনে দাঁড়িয়ে করেছেন তার জন্য হাত খুলে নম্বর দিতেই হবে। ঝরঝরে সংবাদের মতই তাঁর এই ছবির কাহিনী বিন্যাস ও সংলাপ অসাধারণ।

ইটিভি ভারতের সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, "আমার এই ছবি সমাজে দেখা বিভিন্ন ঘটনার মধ্যে থেকে উঠে আসা গল্প। আমরা ক্রীড়া সাংবাদিকরা সব পারি। আমরা যে শুধু ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগানের গণ্ডিতে সীমাবদ্ধ নই, সেটা কেউ বুঝতে চান না। একজন রাজনৈতিক সংবাদদাতা, কবি, সাহিত্যিক যদি ছবি বানাতে পারেন তাহলে ক্রীড়া সাংবাদিকদের নির্দিষ্ট করে দাগিয়ে দেওয়া হবে কেন?।"

ছবির কিছু সংলাপ মনে থেকে যাবে। ছবিতে শিলাজিৎ-এর চরিত্রের নাম সুদর্শন হালদার, তিনি একজন সিআইডি ইন্সপেক্টর। যিনি অরণ্য চট্টোপাধ্য়ায়ের জামাইবাবু। তাঁর মুখে কয়েকটা সংলাপ মনে থাকবে অনেকদিন। অরণ্যকে পানপাত্র এগিয়ে দিয়ে এক জায়গায় শিলাজিৎ বলছেন, "কথা টলার থেকে পা টলা অনেক ভালো।" আবার সিআইডি অফিসার তাঁর শ্যালক অরণ্যকে বলছেন, "তুই চালিয়ে খেল, আমি নন স্ট্রাইকিং এন্ডে আছি রাহুল দ্রাবিড়ের মতো।" তবে তদন্ত প্রক্রিয়ায় সিআইডি ইন্সপেক্টরকে এতটা নন স্ট্রাইকিং এন্ডে দাঁড় করিয়ে না-রাখলেই পারতেন পরিচালক।

পাশাপাশি এই ছবিতে অনন্যা বন্দ্যোপাধ্যায়, রাফিয়াত রাশিদ মিথিলা, লোকনাথ দে, সায়ন ঘোষ, বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যরা তো আছেনই স্বমহিমায়। বলা যায়, অরণ্য'র প্রাচীন প্রবাদ একটা টিম গেম। গানের ব্যবহার বিশেষ করে শুরুর লোক সঙ্গীত হৃদয় ছুঁয়ে যায়। রবীন্দ্র সঙ্গীতের ব্যবহার ভালো কিন্তু গানের প্রয়োগ যথাযথ হয়নি বলেই মনে হয়। গল্পের প্লট, চিত্রনাট্য, সংলাপ, ক্লাইম্যাক্স- সবমিলিয়ে ঘণ্টা দু’য়েকের ছবিতে ছবির মতোই সাবলীল গল্প বলা।

কলকাতা, 7 জুলাই: এক চিকিৎসকের মৃত্যু এবং তার রহস্য সমাধান করতে গোয়েন্দা অরণ্য চট্টোপাধ্যায়ের সিআইডি তদন্ত প্রক্রিয়ায় জড়িয়ে পড়া। ক্রীড়াসাংবাদিক দুলাল দে পরিচালক হিসেবে হাতেখড়িতে শহরবাসীর সঙ্গে পরিচয় করালেন নতুন এক গোয়েন্দার ৷ মুক্তি পেয়েছে 'অরণ্য'র প্রাচীন প্রবাদ'। পরিচালক হিসাবে আত্মপ্রকাশে সিনেপ্রেমীদের কাছে কতটা পরিচিতি কুড়োতে পারলেন ক্রীড়া সাংবাদিক দুলাল দে? কেমন হল 'অরণ্য'র প্রাচীন প্রবাদ', খোঁজ নিল ইটিভি ভারত ৷

ছবির গল্প শুরু হয় অরণ্য চট্টোপাধ্যায়কে ঘিরে যিনি একজন ডাক্তারি পড়ুয়া ৷ আবার কলকাতা ময়দানের একটি প্রথম ডিভিশন ক্লাবের হয়ে ঘরোয়া লিগে ক্রিকেটটাও খেলেন। ডাক্তারির সেমিস্টারের পরীক্ষার চাপ ও বাড়িতে মায়ের কেরিয়ার সংক্রান্ত বিষয়ে চাপে বিরক্ত অরন্য ৷ মায়ের বকুনি এড়াতে তিনি পরিকল্পনা সাজান। অরন জামাইবাবু সিআইডি অফিসার।

তিনি পানাঘাটের এক ডাক্তার খুনের কিনারা করতে একমাসের জন্য বিশেষ দায়িত্ব নিয়ে সেখানে যাচ্ছেন। মায়ের বকুনি এড়াতে জামাইবাবুর প্রশ্রয়ে অরন্য-ও কলকাতা ছাড়ার পরিকল্পনা করে ফেলেন ৷ তদন্তের লেজুড় হতে অরন্য চট্টোপাধ্যায় পানাঘাটে না গেলেও পরে দেখা যায় সমগ্র তদন্ত প্রক্রিয়াতেই অগ্রণী ভূমিকা নিচ্ছেন তিনি ৷ আর এইভাবেই বাংলা সিনেমায় আরও একটা গোয়েন্দার জন্ম হতে গেল দর্শকরা ৷ ছবিতে হাড়হিম করা থ্রিলার নেই ঠিকই। আবার একটা গল্পের টানে শেষ পর্যন্ত থেকে যেতে হয় দর্শককে।

পোস্টার আর প্রোমোশন দেখে শুধু জিতু কমলকে দেখতে গেলে ভুল হয়ে যাবে। ছবির কেন্দ্রীয় চরিত্রে গোয়েন্দা অরণ্য হিসাবে ছবিতে নিজেকে উজাড় করে দিয়েছেন জিতু। একইভাবে পানাঘাটের সেই খুন হওয়া ডাক্তারের ভূমিকায় সুহোত্র মুখোপাধ্যায় অনবদ্য। অমিত ডাক্তার লাজুক, চোখ দুটো বড় মায়া জড়ানো চোখ। তবে যেহতু ছবির নামেই বলা আছে 'অরণ্য'র প্রাচীন প্রবাদ'। অরণ্য চট্টোপাধ্যায় প্রবাদ বলতে পছন্দ করেন, আরও কিছু প্রবাদ অরণ্য চট্টোপাধ্যায়ের মুখে থাকলে খারাপ হত না।

একটা ঝকঝকে ছবি। আরও নির্মেদ হত যদি শুভ্রজিৎ সিংহ'র এডিটিং বা সম্পাদনা টানটান হত। বেশ কিছু দৃশ্য অপ্রাসঙ্গিক বা এড়িয়ে যাওয়া যেত বলে মনে হয়েছে। পরিচালক দুলাল দে একজন ক্রীড়া সাংবাদিক এবং এটি তাঁর প্রথম ছবি। যে পারফরম্যান্স তিনি ক্যামেরার পিছনে দাঁড়িয়ে করেছেন তার জন্য হাত খুলে নম্বর দিতেই হবে। ঝরঝরে সংবাদের মতই তাঁর এই ছবির কাহিনী বিন্যাস ও সংলাপ অসাধারণ।

ইটিভি ভারতের সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, "আমার এই ছবি সমাজে দেখা বিভিন্ন ঘটনার মধ্যে থেকে উঠে আসা গল্প। আমরা ক্রীড়া সাংবাদিকরা সব পারি। আমরা যে শুধু ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগানের গণ্ডিতে সীমাবদ্ধ নই, সেটা কেউ বুঝতে চান না। একজন রাজনৈতিক সংবাদদাতা, কবি, সাহিত্যিক যদি ছবি বানাতে পারেন তাহলে ক্রীড়া সাংবাদিকদের নির্দিষ্ট করে দাগিয়ে দেওয়া হবে কেন?।"

ছবির কিছু সংলাপ মনে থেকে যাবে। ছবিতে শিলাজিৎ-এর চরিত্রের নাম সুদর্শন হালদার, তিনি একজন সিআইডি ইন্সপেক্টর। যিনি অরণ্য চট্টোপাধ্য়ায়ের জামাইবাবু। তাঁর মুখে কয়েকটা সংলাপ মনে থাকবে অনেকদিন। অরণ্যকে পানপাত্র এগিয়ে দিয়ে এক জায়গায় শিলাজিৎ বলছেন, "কথা টলার থেকে পা টলা অনেক ভালো।" আবার সিআইডি অফিসার তাঁর শ্যালক অরণ্যকে বলছেন, "তুই চালিয়ে খেল, আমি নন স্ট্রাইকিং এন্ডে আছি রাহুল দ্রাবিড়ের মতো।" তবে তদন্ত প্রক্রিয়ায় সিআইডি ইন্সপেক্টরকে এতটা নন স্ট্রাইকিং এন্ডে দাঁড় করিয়ে না-রাখলেই পারতেন পরিচালক।

পাশাপাশি এই ছবিতে অনন্যা বন্দ্যোপাধ্যায়, রাফিয়াত রাশিদ মিথিলা, লোকনাথ দে, সায়ন ঘোষ, বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যরা তো আছেনই স্বমহিমায়। বলা যায়, অরণ্য'র প্রাচীন প্রবাদ একটা টিম গেম। গানের ব্যবহার বিশেষ করে শুরুর লোক সঙ্গীত হৃদয় ছুঁয়ে যায়। রবীন্দ্র সঙ্গীতের ব্যবহার ভালো কিন্তু গানের প্রয়োগ যথাযথ হয়নি বলেই মনে হয়। গল্পের প্লট, চিত্রনাট্য, সংলাপ, ক্লাইম্যাক্স- সবমিলিয়ে ঘণ্টা দু’য়েকের ছবিতে ছবির মতোই সাবলীল গল্প বলা।

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.