হায়দরাবাদ, 29 জানুয়ারি: মাস ফুরলেই 1 ফেব্রুয়ারি দেশের সাধারণ বাজেট (Union Budget 2025) পেশ করবেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন (Nirmala Sitharaman)। তার আগে রাজস্থানের জয়সলমীরে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের আয়োজিত প্রাক-বাজেট পরামর্শ সভায়, পশ্চিমবঙ্গের অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য 2025-2026 সালের কেন্দ্রীয় বাজেটের আগে রাজ্যের লক্ষ্য এবং অগ্রাধিকার নিয়ে আলোচনা করেন। রাজ্যের অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বকেয়া পরিশোধের দাবি জানিয়েছেন। তিনি বলেন, "যা কিছু বকেয়া আছে, সেই পরিমাণ অবশ্যই পরিশোধ করতে হবে। তবে, আমরা এমন একটি রাজ্য যা বন্যাপ্রবণ ৷ আমরা এত বন্যার মুখোমুখি হয়েছি যে, অনেক মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। কেন্দ্রকে এগিয়ে এসে আমাদের সহায্য করতে হবে ৷"
বাজার বিশেষজ্ঞদের মতে, অতীতের করের (Income Tax) বোঝায় জর্জরিত দেশের মধ্য়বিত্ত শ্রেণি আসন্ন বাজেট থেকে কিছুটা ত্রাণ পেতে চাইছে। রাজ্যের উন্নয়নের জন্য এবার বাজেট (Budget 2025) থেকে বেশ কিছু প্রত্যাশা রয়েছে পশ্চিমবঙ্গেরও। চলুন সেগুলি একনজরে দেখে নেওয়া যাক...
নির্মলা সীতারামনের বাজেট থেকে বঙ্গের প্রত্যাশা:
দুর্যোগে ত্রাণ সহায়তা: পশ্চিমবঙ্গ একটি ঘূর্ণিঝড় এবং বন্যাপ্রবণ রাজ্য ৷ তাই এই সমস্ত দুর্যোগে কেন্দ্রের কাছ থেকে সহায়তা চেয়েছে রাজ্য। রাজ্যের অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য জানিয়েছেন যে, রাজ্যে ঘন ঘন ঘূর্ণিঝড়ের মুখোমুখি হচ্ছে। রাজ্য চেয়েছে, 50 বছরের ঋণ উইন্ডোর অধীনে বরাদ্দ তহবিলের অর্ধেক শুধুমাত্র দুর্যোগ খাতের ত্রাণের জন্য দেওয়া হোক।
ঘূর্ণিঝড়-প্রবণ অঞ্চলের জন্য বিশেষ সহায়তা: রাজ্যের দাবি, 50 বছর মেয়াদী সুদমুক্ত ঋণের 50 শতাংশ দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার সঙ্গে সংযুক্ত করা হোক যাতে রাজ্যে ঘন ঘন প্রাকৃতিক দুর্যোগের মোকাবিলায় সুবিধা হয়।
বকেয়া টাকা মেটানোর দাবি: কেন্দ্রীয় প্রকল্পগুলির জন্য বিশেষ করে MG-NREGS এবং প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা (PMAY-G) এবং PMGSY-এর জন্য প্রাপ্য টাকা দেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছে রাজ্য সরকার ৷ প্রসঙ্গত, কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশাবলী মেনে না চলার কারণ দেখিয়ে কেন্দ্র উল্লেখিত খাতে রাজ্যকে টাকা দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে গতি কমেছে রাজ্যের উন্নয়নের ৷
বিশেষ প্যাকেজ: পশ্চিমবঙ্গকে আর্থিক চাপ কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করতে একটি বিশেষ প্যাকেজ এবং ঋণ প্যাকেজেরও প্রত্যাশা রয়েছে রাজ্যের। রাজ্যের অঙ্গনওয়াড়ি এবং আশা কর্মীদের জন্য বর্ধিত বেতনও চেয়েছিল।
বাংলার অন্যান্য প্রত্যাশা:
- নগর পরিবহণের গতিশীলতা বৃদ্ধি এবং ব্যক্তিগত যানবাহনের উপর নির্ভরতা কমাতে মেট্রো রেল সম্প্রসারণ এবং অন্যান্য গণপরিবহণ প্রকল্পের জন্য তহবিল বৃদ্ধি করা প্রয়োজন।
- রাস্তাঘাট উন্নত করার জন্য, নতুন রাস্তা নির্মাণের জন্য এবং রাজ্যের এবং সংলগ্ন এলাকার সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ উন্নত করার জন্য আর্থিক সহায়তা প্রয়োজন।
- কৃষির আধুনিকীকরণের উদ্যোগের জন্য কেন্দ্রীয় অর্থিক সাহায্যের প্রয়োজন।
- গ্রামীণ অঞ্চলে স্বাস্থ্য পরিষেবা এবং শিক্ষার সুবিধা বৃদ্ধির জন্য বরাদ্দ বৃদ্ধি করা জরুরি।
- গ্রামীণ অঞ্চলে মহিলাদের সহায়তার লক্ষ্যে কর্মসূচির জন্য কেন্দ্রীয় অর্থিক সাহায্যের প্রয়োজন।
- বর্তমান বাঁধগুলির আধুনিকীকরণ এবং উন্নয়নের জন্য বরাদ্দ বৃদ্ধি করা জরুরি।
- বন্যা নিয়ন্ত্রণ কৌশল উন্নত করার উদ্যোগের জন্য কেন্দ্রের থেকে আর্থিক সহায়তার প্রয়োজন।
- প্রয়োজনীয় রেলের পরিকাঠামো উন্নয়ন এবং জমি অধিগ্রহণের জন্য তহবিল বৃদ্ধি করা প্রয়োজন।
- ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের জন্য কেন্দ্রের সহায়তা প্রয়োজন।
- পশ্চিমবঙ্গের জন্য সামগ্রিক বাজেট বরাদ্দ বৃদ্ধি করা প্রয়োজন।
- রাজ্যের পরিচালন ব্যয়ের উপর কর হ্রাস এবং ঋণের প্রাপ্যতা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন।