মুম্বই, 24 নভেম্বর: নির্বাচনে রেকর্ড ভাঙা জয় পেয়েছে মহাযুতি। এখন প্রশ্ন, মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী কে হবেন? রাজনৈতিক মহল মনে করছে, এই প্রশ্নের যাবতীয় উত্তর লুকিয়ে দুটি নামের মধ্যে- মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডে আর উপমুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিশ। বিজেপির আসন সংখ্যা শিন্ডেদের থেকে অনেকটা বেশি । সেই হিসেবে অবশ্যই ফড়নবিশ এগিয়ে ।
তবে অতীতে বিহারে দেখা গিয়েছে বেশি আসন পেয়েও মুখ্যমন্ত্রীর পদ নীতীশ কুমারের দল জেডিইউ-কে ছেড়ে দিয়েছে বিজেপি। তাছাড়া শিবসেনা ভেঙে যখন একনাথ শিন্ডেরা বিজেপির সঙ্গে সরকার গড়তে আসেন তখনও বিজেপির আসন সংখ্যা অনেকটাই বেশি ছিল। তারপরও মুখ্যমন্ত্রী হন শিন্ডে। এবারও সেরকম কিছু হয় কিনা সেদিকেই তাকিয়ে সকলে। কয়েকটি সূত্র মনে করছে, প্রশাসনিক প্রধান কে হবেন সেই সিদ্ধান্ত সোমবার হতে পারে। কেউ কেউ এমনও মনে করছেন এবার দেবেন্দ্রই মুখ্যমন্ত্রী হবেন। গুরুত্বপূর্ণ দফতর হাতে রেখে উপমুখ্যমন্ত্রী হবেন শিন্ডে ।
ইতিমধ্যেই সরকার গঠনের প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে সব পক্ষ । নিজেদের মধ্যে সরকার গঠন নিয়ে আলোচনা চলছে । কে কোন দফতর নিজের হাতে রাখতে চায় তা নিয়েই চর্চা চলছে। এবার তিনটি দল বৈঠক করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে। নির্বাচনে ফল ঘোষণার হওয়ার পরপরই দেবেন্দ্র ফড়নবিশ এবং একনাথ শিন্ডের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। সেখানেও এ সংক্রান্ত আলোচনা হয়ে থাকতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে ।
রবিবার সকাল থেকেই মহাযুতির বিভিন্ন শরিক দলের নেতাদের মধ্যে তৎপরতা দেখা গিয়েছে। বিজেপির সাধারণ সম্পাদক শিব প্রকাশ ও মহারাষ্ট্র বিজেপির সভাপতি চন্দ্রশেখর বাওয়ানকুলে সকালে দেবেন্দ্র ফড়নবিশের মালাবার হিলসের বাড়ি গিয়ে তাঁর সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ বৈঠক করেন। শিন্ডে তাঁর নবনির্বাচিত বিধায়কদের নিয়ে মুম্বইয়ের একটি হোটেলে বৈঠক ডেকেছেন। সন্ধ্যার সেই বৈঠক থেকেই বিধায়ক দলের নেতা কে হবে তা ঠিক হবে। এই সমস্ত বৈঠক থেকে কী উঠে আসে তা নিয়েই সোমবার কথা বলবেন শাসক জোটের নেতারা ।
তবে তাঁদের মূল সমস্যা সময়। 26 নভেম্বর চলতি বিধানসভার মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা। তার আগে শুধু সোমবারটাই হাতে থাকছে। সেই বিচারে অনেকেই মনে করেছেন সোমবার-ই ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে নতুন সরকার শপথ নিতে পারে। অন্যদিকে, সরকার গঠন নিয়ে কোনও জটিলতা নেই তা ভাবার কোনও কারণ নেই । ফল প্রকাশের পর শনিবার গভীর রাতে দলের কোর কমিটির সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক করেন একনাথ শিন্ডে । বিধায়ক দলের বৈঠক থেকে দলনেতা বেছে নেওয়ার জন্য কোর কমিটি থেকে আগামা অনুমতি নেওয়া প্রয়োজন। সেই কাজটাই করেন শিন্ডে । কিন্তু সেখানেও নাকি দলের একাংশ তাঁকে স্পষ্ট করে জানান, মুখ্যমন্ত্রিত্ব কাউকেই ছাড়া যাবে না। এখানেই প্রশ্ন বিজেপি যদি শেষমেশ মুখ্যমন্ত্রীর পদ নিজেদের হাতে রাখতে চায় তাহলে শিন্ডেদের অবস্থান কী হবে?