শ্রীনগর, 25 জুলাই: জম্মু ও কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এবং ন্যাশনাল কনফারেন্সের ভাইস প্রেসিডেন্ট ওমর আবদুল্লা বৃহস্পতিবার কেন্দ্রে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন এনডিএ সরকারের সমালোচনায় সরব হয়েছেন ৷ ভারতের কয়েকটি অঞ্চলে ভ্রমণ সংক্রান্ত যে সতর্কতা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তরফে ভ্রমণকারীদের উদ্দেশ্যে দেওয়া হয়েছে, তার প্রেক্ষিতেই মোদি সরকারের সমালোচনা করেছেন ওমর আবদুল্লা ৷
23 জুলাই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তরফে একটি ট্র্যাভেল অ্যাডভাইজারি প্রকাশ করা হয় ৷ সেখানে আমেরিকান নাগরিকদের ভারত ভ্রমণ নিয়ে কিছু পরামর্শ দেওয়া হয়েছে ৷ মণিপুর, জম্মু ও কাশ্মীর, ভারত-পাকিস্তান সীমান্ত এবং মধ্য ও পূর্ব ভারতের মাওবাদী-সক্রিয় অঞ্চলে না যাওয়ার কথা বলা হয়েছে ৷
এই নিয়ে সোশাল মিডিয়ায় পোস্ট করেন ওমর আবদুল্লা ৷ সেখানে তিনি লেখেন, 'নয়া জম্মু ও কাশ্মীর'-এর জন্য এত কিছু । স্বাভাবিক পরিস্থিতি নিয়ে এত কথা, শান্তি, পর্যটন এবং শ্রীনগরে জি-20 অনুষ্ঠানের আয়োজন ৷ তার পরও মার্কিন বিদেশ দফতরের ট্র্যাভেল অ্যাডভাইজারিতে জম্মু ও কাশ্মীরকেই লক্ষ্যবস্তু বানানো হল । ওমর জম্মু ও কাশ্মীরে সাম্প্রতিক জঙ্গি হামলা, নাগরিকদের বিক্ষোভ ও নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলওসি) বরাবর ভারতীয় ও পাকিস্তানী বাহিনীর মধ্যে বিক্ষিপ্ত হিংসা নিয়েও সরব হয়েছেন ৷ তাঁর দাবি, "মোদি সরকার কিছুই পরিবর্তন করতে পারেনি ।"
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তরফে যে ট্র্যাভেল অ্যাডভাইজারি জারি করা হয়েছে, সেখানে ভ্রমণের নিরিখে সামগ্রিকভাবে ভারতকে দ্বিতীয় স্তরে (লেভেল-2) রাখা হয়েছে ৷ তার সঙ্গেই পরামর্শ দেওয়া হয়েছে যে ভারত-পাকিস্তান সীমান্ত এবং মধ্য ও পূর্ব ভারতে ভ্রমণ না করার জন্য ৷ এই অংশকে ওই অ্যাডভাইজারিতে চতুর্থ স্তরে (লেভেল-4) রাখা হয়েছে ৷ সেখানে তৃতীয় স্তরে (লেভেল-3) রাখা হয়েছে, মণিপুর-সহ উত্তর পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলিকে ৷ সেখানেও ভ্রমণ না করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তরফে ৷
সেখানে বলা হয়েছে, "ভ্রমণ করবেন না: সন্ত্রাসবাদ ও নাগরিক অস্থিরতার কারণে জম্মু ও কাশ্মীরের কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল (পূর্ব লাদাখ অঞ্চল ও সেখানকার রাজধানী লেহ ছাড়া), সশস্ত্র সংঘাতের সম্ভাবনার কারণে ভারত-পাকিস্তান সীমান্তের 10 কিলোমিটারের মধ্যের অংশ, সন্ত্রাসবাদের কারণে মধ্য ও পূর্ব ভারত এবং হিংসা ও অপরাধের কারণে মণিপুর ।’’
ওই ট্র্যাভেল অ্যাডভাইজারিতে আরও বলা হয়েছে, "ভারতীয় কর্তৃপক্ষ রিপোর্ট করেছে যে ধর্ষণ ভারতে দ্রুতহারে বাড়তে থাকা অপরাধগুলির মধ্যে একটি । যৌন নিপীড়নের মতো অপরাধ পর্যটনের স্থান ও অন্যান্য জায়গায় ঘটেছে । সন্ত্রাসীরা সামান্য বা কোনও সতর্কতা ছাড়াই আক্রমণ করতে পারে । তারা পর্যটনের স্থান, পরিবহণ হাব, বাজার বা শপিং মল এবং সরকারি স্থানকেই টার্গেট করে ।’’
সেখানে আরও জানানো হয়েছে যে ভারতের গ্রামীণ এলাকায় মার্কিন নাগরিকদের জন্য মার্কিন সরকারের তরফে জরুরি সেবা প্রদানের ক্ষমতা সীমিত । এই অঞ্চলগুলি পূর্ব মহারাষ্ট্র ও উত্তর তেলেঙ্গানা থেকে পশ্চিমবঙ্গের পশ্চিম অংশ পর্যন্ত বিস্তৃত । মার্কিন সরকারি কর্মচারিদেরও এই এলাকায় ভ্রমণের জন্য বিশেষ অনুমোদন পেতে হবে ৷
তাছাড়া ওই অ্যাডভাইজারিতে উল্লেখ করা হয়েছে যে ভারতে বসবাসকারী মার্কিন নাগরিকরাই এই দেশ থেকে পাকিস্তানে যাওয়ার ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন ৷ অন্যদের ক্ষেত্রে ভারতে আসার আগেই এই ভিসার অনুমোদন নিতে হবে ৷ একই সঙ্গে পাকিস্তানের দিকেও সীমান্তের কাছাকাছি না যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে ওই অ্যাডভাইজারিতে ৷