হলদোয়ানি, 7 ডিসেম্বর: ভাইয়ের দেহ গ্রামের নিয়ে যেতে দরকার শববাহী গাড়ি ৷ সেই টাকা নেই দুঃস্থ বোনের কাছে ৷ তাই উপায় না পেয়ে ট্যাক্সির মাথায় শবদেহ বেঁধে গ্রামে নিয়ে গেলেন তিনি ৷ এমন মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে উত্তরাখণ্ডের পিথোরগড়ে ৷
দিদি শিবানী উত্তরাখণ্ডের পিথোরাগড়ের তামোলির বাসিন্দা ৷ কাজের জন্য তিনি হলদোয়ানিতে এসে থাকছিলেন ৷ বিগত 6 মাস ধরে একটি কোম্পানিতে কাজ করছিলেন ৷ গ্রামের বাড়িতেই ছিলেন বাবা-মা, এক ভাই ও এক বোন ৷ বৃদ্ধ বাবা পাহাড়ে জমি চাষ করে কোনওমতে সংসার চালাতেন ৷ এই অবস্থায় পরিবারের হাল ধরতে শিবানী হলদোয়ানিতে এসে কাজ করছিলেন ৷ তিনি তাঁর ভাই 20 বছরের অভিষেককেও তাঁর সঙ্গে কাজ করার জন্য ডাকেন ৷
মাত্র দু'মাস আগে অভিষেকও একটি কাজ পেয়ে হলদোয়ানিতে এসে থাকতে শুরু করে ৷ ভাই-বোন একই কোম্পানিতে কাজ করতে শুরু করে ৷ দু'জনে আলাদাই থাকছিলেন ৷ শিবানী জানান, শুক্রবার সকালে তিনি ও তাঁর ভাই দু'জনে কাজে যান ৷ এরই মধ্যে মাথায় প্রবল ব্যথা নিয়ে ভাই কাজ থেকে ছুটি নিয়ে নিজের ঘরে ফিরে আসেন ৷ বোন নিজের ডিউটি থেকে ফিরে খাওয়াদাওয়ার জন্য ভাইকে ফোন করেন ৷ ভাইও তাঁকে জানান যে, তিনিই দ্রুত পৌঁছাবেন ৷
অনেকক্ষণ অপেক্ষা করে ভাই না আসায় শিবানী ফের অভিষেককে ফোন করেন ৷ অভিষেক ফোন ধরেননি ৷ তখন শিবানী অভিষেকের ঘরে যান ৷ তখন সেখানে কেউ ছিল না ৷ ঘর থেকে একটা দুর্গন্ধ আসছিল ৷ ঘরে তাঁদের স্কুটিটিও ছিল না ৷
শিবানী সঙ্গে সঙ্গে পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেন ৷ এরপর পুলিশ ও শিবানী অভিষেকের খোঁজ করতে থাকেন ৷ কিছুক্ষণ পরে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের কাছে অভিষেকের স্কুটি দেখতে পান তাঁরা ৷ পাশেই অচেতন অবস্থায় পড়েছিলেন অভিষেক ৷ পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায় ৷ সেখানে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করে ৷
এরপর শনিবার অভিষেকের ময়নাতদন্ত হয় ৷ এদিকে খবর পেয়ে পরিবারের সদস্যরা হলদোয়ানি পৌঁছান ৷ ময়নাতদন্তের পর পুলিশ অভিষেকের দেহ পরিবারের হাতে তুলে দেয় ৷ কিন্তু শিবানীর কাছে একটি শববাহী গাড়ি ভাড়া করার মতো অর্থ ছিল না ৷ গাড়ির মালিকরা তাঁকে কেউ 10 হাজার তো কেউ 12 হাজার টাকা দিতে বলে ৷ তাই অগত্যা শিবানী নিজের গ্রামের এক ট্যাক্সিচালকের সঙ্গে যোগাযোগ করেন ৷ এরপর ভাইয়ের শবদেহ ট্যাক্সির উপর বেঁধে বেরীনাগ নিয়ে যান দিদি ৷