বারামতী, 5 নভেম্বর: চলতি মাসের 20 তারিখ মহারাষ্ট্রে বিধানসভা নির্বাচন ৷ তার আগে সংসদীয় রাজনীতি থেকে অবসর নেওয়ার ইঙ্গিত দিলেন শরদ পাওয়ার ৷ রাজ্যসভায় তাঁর সময় ফুরিয়ে আসছে ৷ এরপর আর নতুন করে রাজ্যসভা নির্বাচনে প্রার্থী হবেন না ৷ এমনকী লোকসভা নির্বাচনে লড়বেন না বলেও স্পষ্ট জানালেন 83 বছরের নেতা ৷
মঙ্গলবার নাতি যুগেন্দ্র পাওয়ারের হয়ে নির্বাচনী প্রচারে বারামতী গিয়ে তাঁর মনের কথা খোলাখুলি জানালেন 'ইন্ডিয়া' শিবিরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নেতা ৷ এদিন তিনি বলেন, "আমি 14 বার নির্বাচনে লড়েছি ৷ রাজ্যসভায় আমার সময় শেষ হলে আর কোনও সংসদীয় নির্বাচনে লড়ব কি না, সেটা ভেবে দেখতে হবে ৷" বরং নতুন প্রজন্মকে সুযোগ দেওয়ার উপরই জোর দিলেন একদা কংগ্রেস নেতা ৷
পাওয়ার বলেন, "আমি ক্ষমতায় নেই ৷ এখন রাজ্যসভায় আছি ৷ আর মাত্র দেড় বছর বাকি ৷ ইতিমধ্যে আমি 14টি নির্বাচনে লড়েছি ৷ আর কত লড়ব ? এবার নতুন প্রজন্মকে সুযোগ দেওয়া উচিত ৷ আমি সামাজিক কাজকর্ম চালিয়ে যাব ৷ বিশেষত গ্রাম এবং প্রান্তিক এলাকা, আদিবাসীদের জন্য ৷ এর জন্য আমার কোনও নির্বাচনে দাঁড়ানোর প্রয়োজন নেই ৷"
মহারাষ্ট্রের চারবারের মুখ্যমন্ত্রী শরদ পাওয়ার পরিষ্কার জানিয়ে দেন, "আমি লোকসভা নির্বাচনে লড়ব না ৷ কোনও নির্বাচনেই দাঁড়াব না ৷ এখনও পর্যন্ত 14টি নির্বাচনে লড়েছি ৷ আপনারা কোনও বার আমায় খালি হাতে ফেরাননি ৷ প্রতিবারই আপনারা আমায় জিতিয়েছেন ৷ তাই এবার কোথাও একটা থামতে হবে ৷ নতুন প্রজন্মকে আনতে হবে ৷ আমি সমাজের জন্য কাজকর্ম বন্ধ করে দিইনি ৷ আমি আর ক্ষমতা চাই না ৷ কিন্তু মানুষের সেবা করা বন্ধ করিনি ৷" তাঁর রাজ্যসভার মেয়াদ শেষ হচ্ছে 2026 সালে ৷
বারামতী কেন্দ্রটি বরাবরই পাওয়ার পরিবারের শক্তিশালী ঘাঁটি ৷ এই কেন্দ্রের বাসিন্দাদের উদ্দেশ্য তিনি বলেন, "আপনারা আমায় চার বার মুখ্যমন্ত্রী করেছেন ৷ 1967 সালে আমায় নির্বাচিত করেছিলেন ৷ আমি মহারাষ্ট্রের জন্য বহু বছর ধরে কাজ করেছি ৷ বারামতীর লোকজন আমায় কখনও হতাশ করেনি ৷"
এই নির্বাচনী সভায় বিজেপিকে কড়া আক্রমণ করতে ভোলেননি প্রবীণ নেতা ৷ পাওয়ার বলেন, "রাজ্যে যারা ক্ষমতায় রয়েছে, তাদের উদ্দেশ্য ঠিক নয় ৷ পুনের উন্নয়নের কথাই ধরলেই বিষয়টি বোঝা যাবে ৷ শুধুমাত্র কৃষির উপর নির্ভর করে উন্নয়ন হতে পারে না ৷ এই সরকার কী ম্যাজিক করেছে, তা আমার জানা নেই ৷ টাটা এয়ারবাস ফ্যাক্টরিটা নাগপুরে হওয়ার কথা ছিল ৷ সেটা গুজরাতে চলে গেল ৷ বেদান্ত ফক্সকন-এর সেমিকনডাক্টর ফ্যাক্টরিটাও গুজরাতে সরল ৷"
এরপরই প্রধানমন্ত্রীকে কটাক্ষ করে তিনি বলেন, যদি আপনি একটি নির্দিষ্ট রাজ্যের জন্য কাজ করেন, তাহলে আপনি কেন প্রধানমন্ত্রী হলেন ? মুখ্যমন্ত্রী হতে পারতেন ৷ কেন্দ্রীয় সরকার পরিবর্তনের দরকার ৷ ক্ষমতা বদলানো ছাড়া আর কোনও বিকল্প নেই ৷ এমন কোন প্রতিনিধি চাই, যিনি আরও বেশি করে কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করবেন ৷"
চলতি বছরের লোকসভা নির্বাচনের পর বিধানসভা নির্বাচনেও পারিবারিক যুদ্ধের সাক্ষী থাকবে বারামতী ৷ বিধায়ক অজিত পাওয়ারের বিরুদ্ধে প্রার্থী হয়েছেন ভাইপো যুগেন্দ্র পাওয়ার ৷ শিবসেনার মতো ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টিতেও ভাঙন ধরেছে বেশ কিছুদিন আগে ৷ শরদ পাওয়ার প্রতিষ্ঠিত দলটি দু'ভাগে ভাগ হয়ে যায় ৷ এনসিপির প্রধান হন অজিত ৷ নতুন করে এসসিপি গড়েন শরদ পাওয়ার ৷ এরপর লোকসভা নির্বাচনে পাওয়ার-কন্যা সুপ্রিয়া সুলের বিরুদ্ধে নিজের স্ত্রী সুনেত্রা পাওয়ারকেই প্রার্থী করেন মহারাষ্ট্রের উপ-মুখ্যমন্ত্রী এনসিপির অজিত পাওয়ার ৷ ভোটে জয়ী হয়ে সাংসদ হন সুপ্রিয়া ৷ আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে 288টি বিধানসভা আসন বিশিষ্ট মহারাষ্ট্রে বিধানসভা ভোট একদিনে, 20 নভেম্বর ৷