নয়াদিল্লি, 15 অক্টোবর: আরজি করে চিকিৎসক পড়ুয়া ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত হিসেবে নাম উঠে এসেছে সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়ের। মঙ্গলবার আরজি কর মামলায় শুনানিতে এবার সিভিক ভলান্টিয়ার নিয়োগের প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলল সুপ্রিম কোর্ট ৷ এ ব্যাপারে রাজ্য সরকারের কাছে হলফনামা চাইল শীর্ষ আদালত। দীপাবলির পর 4 নভেম্বর এই মামলার পরবর্তী শুনানি। সেদিন আবারও সিবিআইকে স্টেটাস রিপোর্ট দিতে বলেছে সর্বোচ্চ আদালত।
রাজ্যকে সুপ্রিম কোর্টের প্রশ্ন, সিভিক ভলান্টিয়ারদের নিয়োগ কারা করে ? এদের নিয়োগের যোগ্যতা কী ? নিয়োগ ও যোগ্যতা নিয়ে বিশদ জানতে চায় আদালত। যাতে সিভিক ভলান্টিয়ারদের হাসপাতাল বা থানায় পোস্টিং করা না-হয়, এ সম্পর্কে রাজ্য সরকারকে পদক্ষেপ করারও নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট ৷
আরজি কর কাণ্ডে শুরু থেকেই প্রশ্ন উঠেছে গ্রেফতার হওয়া সিভিক ভলান্টিয়ারের সঞ্জয় রায়ের ভূমিকা নিয়ে। মূল অভিযুক্ত হিসাবে এখনও পর্যন্ত তাকেই গ্রেফতার করা হয়েছে ৷ ঘটনার 58 দিন পর আরজি কর কাণ্ডে চার্জশিটে জমা দিয়েছে সিবিআই ৷ সেখানও মুল অভিযুক্ত হিসেবে এই সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়কেই দেখিয়েছেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকরা। ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় আর কেউ জড়িত কি না, তা জানতে চান সুপ্রিম কোর্টে প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় ৷ এ ব্যাপারে সিবিআই-এর আইনজীবী আদালতে জানান, এই ঘটনায় আরও কেউ জড়িত কি না, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে ৷
সরকারি হাসপাতাল ও মেডিক্যাল কলেজগুলিতে নিরাপত্তা নিয়ে আগেই প্রশ্ন তুলে ছিল সুপ্রিম কোর্ট ৷ এখানে কীভাবে সিভিক ভলান্টিয়াররা নিরাপত্তা দিতে পারে, সে নিয়েও রাজ্যকে প্রশ্ন করেছিলেন প্রধান বিচারপতি ৷ মঙ্গলবার আরজি কর কাণ্ডের ষষ্ঠ শুনানিতে সিভিক ভলান্টিয়ারদের নিয়োগ নিয়েই সুপ্রিম কোর্টে প্রশ্নের মুখে পড়ল রাজ্য ৷
এদিনের শুনানিতে জুনিয়র চিকিৎসকদের আইনজীবী করুণা নন্দীর সওয়াল শুনে এ ব্যাপারে রাজ্য সরকারকে হলফনামা পেশ করার নির্দেশ দেন প্রধান বিচারপতি। শুনানি প্রসঙ্গেই হাসপাতাল চত্বরে সিভিক ভলান্টিয়ার নিয়োগ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন চিকিৎসকদের আইনজীবীরা। আইনজীবী ইন্দিরা জয়সিং বলেন, আরজি কর কাণ্ডে অভিযুক্ত সিভিক ভলান্টিয়ারের বিরুদ্ধে গার্হস্থ্য হিংসার অভিযোগে মামলা ছিল। তাকে নিয়োগ করার আগে কি সেটা খতিয়ে দেখা হয়েছিল ? এর পরই প্রধান বিচারপতি জানতে চান, কোন আইন বা নির্দেশ মোতাবেক সিভিক ভলান্টিয়ারদের নিয়োগ করা হয় ? এদের যোগ্যতা কী ? একই সঙ্গে বর্তমানে রাজ্যে মোট কত সিভিক ভলান্টিয়ার রয়েছে, তাও জানতে চায় শীর্ষ আদালত ৷
অন্যদিকে, এর আগের কয়েকটি শুনানিতে সরকারি হাসাপাতালের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন করে আদালত। রাজ্য প্রশাসনকে তাদের বক্তব্য জানাতে বলা হয়। সেই মতো সুপ্রিম কোর্টে হলফনামা পেশ করে রাজ্য প্রশাসন । তারা জানায় 31 অক্টোবরের মধ্যে আরজি কর হাসাপাতালের নিরাপত্তা নিয়ে যা যা দরকার সেই কাজও হয়ে যাবে। তবে হাসপাতালের নিরাপত্তার প্রশ্নে রাজ্য সরকারের বক্তব্যের সঙ্গে সহমত পোষণ করেনি চিকিৎসকদের সংগঠনের হয়ে সওয়াল করা আইনজীবীরা।