নয়াদিল্লি, 16 এপ্রিল: রাজ্য সরকার উপাচার্য পদের জন্য যে নামের তালিকা দিয়েছে, তার মধ্যে থেকে ছয়জন উপযুক্ত ব্যক্তিকে উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ করার জন্য রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসকে নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট ৷ রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলি কীভাবে চালানো উচিত, তা নিয়ে রাজ্যপালের সঙ্গে রাজ্য সরকারের বিরোধের মাঝেই মঙ্গলবার এই নির্দেশ দিল শীর্ষ আদালত ৷
অ্যাটর্নি জেনারেল আর ভেঙ্কটারমানি বিশ্ববিদ্যালগুলির আচার্য অর্থাৎ রাজ্যপালের পক্ষে উপস্থিত হয়ে শীর্ষ আদালতকে জানান যে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের পাঠানো তালিকা থেকে ছয়টি নাম অনুমোদন করেছেন রাজ্যপাল । তখন বিচারপতি সূর্য কান্ত এবং কেভি বিশ্বনাথনের বেঞ্চ বলে যে, "এই ছয়জনকে অবিলম্বে নিয়োগ করা হোক ৷"
রাজ্য সরকারকে উপযুক্ত প্রার্থীদের একটি নতুন তালিকাও আচার্যের দফতরে পাঠাতে বলেছে সুপ্রিম কোর্ট ৷ সেই তালিকার মধ্যে থেকে রাজ্যপাল আরও কয়েকজনকে উপাচার্য হিসেবে নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিতে পারেন বলে জানিয়েছে শীর্ষ আদালত । তারপরেই সুপ্রিম রায় নিয়ে রাজ্যপালকে কটাক্ষ ছুঁড়ে দিয়েছে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু ৷ ‘‘আশা করছি সুপ্রিম কোর্ট রাজভবনে শুভবুদ্ধির উদয় ঘটাবে’’, কটাক্ষ ব্রাত্যর ৷
রাজ্য ও রাজ্যপালের মধ্যে চলমান টানাপোড়েনের বন্ধুত্বপূর্ণ সমাধানের আশায় বেঞ্চ বলেছে যে, রাজ্যের অবশিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে উপাচার্য হিসাবে নিয়োগে প্রার্থীদের নামের তালিকা তৈরির জন্য সুপ্রিম কোর্ট পরে একটি সার্চ কমিটি গঠনের বিষয়েও বিবেচনা করতে পারে ।
এর আগে, রাজ্যপাল, রাজ্য সরকার এবং বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনকে (ইউজিসি) একটি সার্চ-কাম-সিলেকশন কমিটি গঠনের জন্য তিন থেকে পাঁচটি নাম প্রস্তাব করতে বলেছিল শীর্ষ আদালত ৷ সেই কমিটিই উপাচার্য হিসাবে নিয়োগের জন্য প্রার্থীদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে ।
এ দিন শুনানির শুরুতে অ্যাটর্নি জেনারেল বেঞ্চকে বলেন যে, আচার্য রাজ্য সরকারের পাঠানো তালিকা থেকে উপাচার্য হিসাবে নিয়োগের জন্য ছয়টি নাম অনুমোদন করেছেন । রাজ্য সরকারের পক্ষের শীর্ষ আইনজীবী অভিষেক মনু সিংভি অভিযোগ করেছিলেন যে, রাজ্য বিধানসভায় পাশ করা বিশ্ববিদ্যালয়গুলির বিষয়ে রাজ্যপাল ইচ্ছাকৃতভাবে সম্মতি দিচ্ছেন না । তাঁর এই বক্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করেন অ্যাটর্নি জেনারেল ৷
রাজ্য বিধানসভা বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে উপাচার্য নিয়োগের জন্য গঠিত সার্চ কমিটির সদস্য সংখ্যা তিন থেকে পাঁচে উন্নীত করে একটি সংশোধনী বিল পাশ করেছে । সেই পশ্চিমবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় আইন (সংশোধনী) বিল, 2023-এর বিরোধিতা করে বিজেপি ৷ তাদের অভিযোগ, নতুন সার্চ কমিটি উপাচার্যদের নিয়োগের বিষয়ে শাসকদলের নিয়ন্ত্রণ আরও বাড়িয়ে তুলবে । অ্যাটর্নি জেনারেল এই বিষয়ে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ করে বলেন, "আমি এই বিষয়ে আর কিছু বলতে চাই না, কারণ বিষয়টি স্পষ্ট ।" বেঞ্চ আবেদনের শুনানির জন্য 30 এপ্রিল দিনটিকে ধার্য করেছে ।
এর আগে, রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলি কীভাবে করা উচিত, তা নিয়ে রাজ্য সরকার এবং রাজ্যপালের মধ্যে তিক্ততা বৃদ্ধির পরে শীর্ষ আদালত পশ্চিমবঙ্গের বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্যের সৌহার্দ্যপূর্ণ নিয়োগের জন্য অ্যাটর্নি জেনারেলকে বলেছিলেন ।
(পিটিআই)
আরও পড়ুন: