নাগপুর, 6 নভেম্বর: আরএসএসের কার্যালয় মিনিট দশেকের হাঁটা পথ। নাগপুরের সেই দীক্ষাভূমি থেকে সঙ্ঘ পরিবারকে কড়া আক্রমণ করলেন রাহুল গান্ধি। লোকসভার বিরোধী দলনেতা বুধবার মহারাষ্ট্র বিধানসভার প্রচারে এসে দীক্ষাভূমিতে সংবিধানের প্রণেতা বাবাসাহেব আম্বেদকরের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এরপর 'সংবিধান সম্মান সম্মেলন' থেকে আরএসএসের বিরুদ্ধে সংবিধানকেই ধ্বংস করার অভিযোগ করেন তিনি।
তিনি বলেন, "আরএসএস আর বিজেপি সংবিধানের উপর সরাসরি আক্রমণ করছে। এই আক্রমণ শুধু সংবিধানের উপর নয়, এটা দেশের নাগিরকদের স্বাধীন চিন্তা-ভাবনার উপর আঘাত। সংবিধান থেকে সাংবিধানিক সংস্থা তৈরি হয়। নির্বাচন কমিশনের মতো সংস্থা তৈরি হয়। আর তাই সংবিধান না থাকলে দেশে নির্বাচন কমিশনেরও কোনও অস্তিত্ব থাকবে না। রাজাদের কাছে নির্বাচন কমিশন ছিল না।" রাহুলের বক্তব্য থেকে পরিস্কার তিনি মনে করেন, আরএসএস ও বিজেপি সংবিধানকে শেষ করে গণতন্ত্রকে আক্রমণ করতে চায়।
রাহুল আরও বলেন, " শিক্ষা থেকে শুরু করে দেশের সাধারণ মানুষকে সরকারি হাসাপাতালের নিরাপত্তা দেয় সংবিধান। সংবিধান না থাকলে এই ধরনের কোনও অধিকারই থাকবে না। কিন্তু মনে রাখবেন আরএসএস সরাসরি আমাদের সঙ্গে লড়তে পারে না। সরাসরি লড়াই করলে ওদের হার নিশ্চিত বলে ওরা আড়াল থেকে আক্রমণ করে। নিজেদের পছন্দমতো কিছু শব্দ ওরা তৈরি করে নিয়েছে। সেই সমস্ত শব্দের আড়ালে থেকে আড়ালে থেকে আক্রমণ করে আরএসএস। বিকাশ থেকে শুরু করে উন্নয়নের মতো শব্দের আড়াল থেকে লড়তে চায় আরএসএস। "
জাতিভিত্তিক জনগণনার পক্ষে সওয়াল
এরপর দেশের অর্থনীতির প্রসঙ্গ তুলে ধরে আরও একবার জাতিভিত্তিক জনগণনার পক্ষে সওয়াল করেন রাহুল। তিনি জানান, একজন প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদ তাঁকে জানিয়েছেন ভারতে বৈষম্য সবচেয়ে বেশি। তাঁকে রাহুল বলেছেন, গবেষণা করে তিনি আর্থিক ক্ষেত্রে ভারতের সমস্যা ঠিকই বুঝতে পেরেছেন। কিন্তু কেন সেই সমস্যা তৈরি হল তা বুঝতে পারেননি। ভারতের আর্থিক ও সামাজিক বৈষম্যের মূলে আছে জাতি-বিভাজন। সেখান থেকেই সব সমস্যার শুরু।
এরপর নাম না করে তাঁর এক বন্ধুর কথা তুলে ধরেন রাহুল। সেই বন্ধু দলিত-আদিবাসী নন। তফশিলি জাতি বা উপজাতিও নন। তিনি রাহুলকে বলেছিলেন, জাতি বিভাজন থেকে কোনও সমস্যা তিনি কখনও তৈরি হতে দেখেননি। সেই বন্ধুকে উদ্দেশ্য করে রাহুল সকলকে মনে করিয়ে দিয়েছেন জাতি বা তাকে কেন্দ্র করে তৈরি হওয়া সমস্যার মুখে পড়তে হয় দলিত-আদিবাসী থেকে শুরু করে অন্য পিছিয়ে পড়া শ্রেণির প্রতিনিধিদের। বাকিদের পক্ষে এই সমস্যা বোঝা সম্ভবও নয়। এই পর্যন্ত বলে রাহুল আবারও দাবি করেন, বিজেপি বা আরএসএস না চাইলেও দেশে জাতিভিত্তিক জনগণনা হবে। দেশবাসী সেটাই চান।