নয়াদিল্লি, 9 ফেব্রুয়ারি: দেশের সর্বোচ্চ নাগরিক সম্মান ভারতরত্ন পাচ্ছেন তিন বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব ৷ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আজ ঘোষণা করেছেন যে, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী চৌধুরি চরণ সিং ও পিভি নরসিমা রাও এবং ডক্টর এমএস স্বামীনাথনকে এই সম্মানে ভূষিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার ৷ কৃষি, কৃষকদের কল্যাণ, জাতি গঠন এবং অর্থনৈতিক সংস্কারে তাঁদের অতুলনীয় অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তাঁদের ভারতরত্ন দেওয়া হচ্ছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী ।
আজ একের পর এক টুইটে তিন ভারতরত্নের নাম ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ৷ প্রথম টুইটে তিনি লেখেন, "এটা আমাদের সরকারের সৌভাগ্য যে দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী চৌধুরি চরণ সিংকে ভারতরত্ন দিয়ে সম্মানিত করা হচ্ছে । এই সম্মান দেশের জন্য তাঁর অতুলনীয় অবদানের কারণে উৎসর্গ করা হয়েছে । তিনি তাঁর পুরো জীবন উৎসর্গ করেছিলেন কৃষকদের অধিকার ও কল্যাণের জন্য । উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী হোক বা দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, এমনকি একজন বিধায়ক হিসেবেও তিনি সর্বদা দেশ গড়ার প্রেরণা দিয়েছেন । জরুরি অবস্থার বিরুদ্ধেও তিনি দৃঢ়ভাবে দাঁড়িয়েছেন । আমাদের কৃষক ভাই ও বোনেদের জন্য তাঁর অবদান এবং জরুরি অবস্থার সময় গণতন্ত্রের প্রতি তাঁর প্রতিশ্রুতি সমগ্র জাতির জন্য অনুপ্রেরণাদায়ক ।"
মোদির এই ঘোষণার পরই চৌধুরি চরণ সিং-এর নাতি তথা রাজ্যসভার সাংসদ ও রাষ্ট্রীয় লোকদল পার্টির জাতীয় চেয়ারম্যান জয়ন্ত সিং টুইট করে বলেন, কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্ত তাঁর মন জয় করে নিয়েছে ৷
পরের টুইটে প্রধানমন্ত্রী আরও এক প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীকে ভারতরত্ন প্রদানের কথা ঘোষণা করেন ৷ মোদি লেখেন, "আমাদের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শ্রী পিভি নরসিমহা রাওকে ভারতরত্ন দিয়ে সম্মানিত করা হবে তা জানাতে পেরে আনন্দিত । একজন বিশিষ্ট পণ্ডিত এবং রাষ্ট্রনায়ক হিসাবে, নরসিংহ রাও বিভিন্ন দায়িত্বে থেকে ভারতকে ব্যাপকভাবে সেবা করেছেন । অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এবং বহু বছর ধরে সংসদ ও বিধানসভার সদস্য হিসাবে তিনি যে কাজ করেছেন, তার জন্য তিনি সমানভাবে স্মরণীয় । তাঁর দূরদর্শী নেতৃত্ব ভারতকে অর্থনৈতিকভাবে উন্নত করতে, দেশের সমৃদ্ধি ও বৃদ্ধির জন্য একটি দৃঢ় ভিত্তিস্থাপনে সহায়ক ছিল ।"
নরসিমহা রাও প্রসঙ্গে মোদি আরও লেখেন, "প্রধানমন্ত্রী হিসাবে নরসিমা রাওয়ের সময়কাল উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপের দ্বারা চিহ্নিত ছিল, যা ভারতকে বিশ্ব বাজারে উন্মুক্ত করেছিল, অর্থনৈতিক উন্নয়নের একটি নতুন যুগকে উত্সাহিত করেছিল । তাছাড়াও ভারতের বিদেশনীতি, ভাষা এবং শিক্ষা ক্ষেত্রে তাঁর অবদান এমন একজন নেতা হিসাবে তাঁর বহুমুখী উত্তরাধিকারকে অধ্যয়ন করে যিনি শুধুমাত্র সমালোচনামূলক পরিবর্তনের মাধ্যমে ভারতকে পরিচালনা করেননি, বরং এর সাংস্কৃতিক ও বৌদ্ধিক ঐতিহ্যকেও সমৃদ্ধ করেছেন ।"
সবশেষে এমএস স্বামীনাথনকে ভারতরত্ন দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী ৷ তিনি টুইটে লেখেন, "এটা অত্যন্ত আনন্দের বিষয় যে, কৃষি ও কৃষকদের কল্যাণে আমাদের দেশে তাঁর অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ভারত সরকার ডক্টর এমএস স্বামীনাথনজিকে ভারতরত্ন প্রদান করছে । তিনি চ্যালেঞ্জিং সময়ে ভারতকে কৃষিতে স্বনির্ভরতা অর্জনে সহায়তা করার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন এবং ভারতীয় কৃষিকে আধুনিকীকরণের জন্য অসামান্য প্রচেষ্টা করেছিলেন । আমরা একজন উদ্ভাবক এবং পরামর্শদাতা হিসাবে তাঁর অমূল্য কাজকে স্বীকৃতি দিই এবং বেশ কিছু ছাত্রদের মধ্যে শেখার ও গবেষণাকে উৎসাহিত করি । ড. স্বামীনাথনের দূরদর্শী নেতৃত্ব শুধু ভারতীয় কৃষিকেই বদলে দেয়নি বরং দেশের খাদ্য নিরাপত্তা ও সমৃদ্ধিও নিশ্চিত করেছে । তিনি এমন একজন ব্যক্তি ছিলেন, যাকে আমি ঘনিষ্ঠভাবে জানতাম এবং আমি সর্বদা তাঁর অন্তর্দৃষ্টি এবং ইনপুটকে মূল্য দিতাম ।"
দিনকয়েক আগেই দেশের সর্বোচ্চ নাগরিক সম্মান ভারতরত্ন সম্মানে ভূষিত করা হয় ভারতীয় জনতা পার্টির সহ-প্রতিষ্ঠাতা লালকৃষ্ণ আদবানিকে ৷
আরও পড়ুন: