নয়াদিল্লি, 30 জানুয়ারি: মহাকুম্ভে পদপিষ্টের ঘটনার পর পুণ্যার্থীদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে সুপ্রিম কোর্টে দায়ের হল জনস্বার্থ মামলা ৷ আইনজীবী বিশাল তিওয়ারি বৃহস্পতিবার ভারতীয় সংবিধানের 32 নং অনুচ্ছেদের অধীনে এই জনস্বার্থ মামলাটি দায়ের করেন ৷ পদপিষ্টের ঘটনা প্রতিরোধ ও অনুচ্ছেদ 21-এর অধীনে সাম্য ও জীবনের মৌলিক অধিকার রক্ষার্থে এই মামলা দায়ের বলে জানানো হয়েছে ৷
মৌনী অমাবস্যার দিন আর্থাৎ বুধবার গভীর রাতে মহাকুম্ভে পদপিষ্ট হওয়ার ঘটনা ঘটে ৷ মৃত্যু হয় 30 জনের ৷ ঘটনায় আহত 90 জন পুণ্যার্থী ৷ সেই ঘটনাতেই বৃহস্পতিবার জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেন আইনজীবী ৷ মামলাটিতে আবেদনকারী উত্তরপ্রদেশ সরকারকে ঘটনার একটি স্ট্যাটাস রিপোর্ট জমা দিতে এবং অবহেলার জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়ার জন্য শীর্ষ আদালতকে অনুরোধ করেছেন ৷
আবেদনে কেন্দ্র ও সমস্ত রাজ্যকে পক্ষ হিসেবে দাঁড় করানো হয়েছে ৷ এছাড়াও মহাকুম্ভে আগত পুণ্যার্থীদের জন্য নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করতে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারগুলিকে সম্মিলিতভাবে কাজ করার নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। এছাড়াও বলা হয়েছে, সমস্ত রাজ্যের উচিত প্রয়াগরাজে সুবিধা কেন্দ্র স্থাপন করতে হবে ৷ এই কেন্দ্রগুলি তাদের রাজ্য থেকে আগত ব্যক্তিদের সুরক্ষা ব্যবস্থা এবং নির্দেশিকা সম্পর্কিত প্রাথমিক তথ্য সরবরাহ করবে এবং প্রদর্শন করবে । জরুরি পরিস্থিতিতে এই কেন্দ্রগুলি যে কোনও সহায়তার জন্য প্রস্তুত থাকবে ৷
আবেদনে বলা হয়েছে যে, এসএমএস এবং হোয়াটসঅ্যাপ বার্তাগুলি পুণ্যার্থীদের কাছে সুরক্ষা প্রোটোকল ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য ব্যবহার করা হবে । অনুষ্ঠানস্থলে চিকিৎসক ও নার্সদের প্রাপ্যতা নিশ্চিত করতে উত্তরপ্রদেশ সরকার এবং অন্যান্য রাজ্যগুলির মধ্যে সমন্বয়ের প্রয়োজন রয়েছে ৷ আবেদনটিতে ভিআইপি চলাচলের নিয়ন্ত্রণের কথাও উল্লেখ করা হয়েছে ৷ বলা হয়েছে যে, ভিআইপি প্রোটোকলের চেয়ে জন নিরাপত্তাকে অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত যাতে ভিড় রোধ করা যায় এবং নির্বিঘ্নে ভিড়ের মধ্যেও চলাচল নিশ্চিত করা যায়।
আবেদনে ধর্মীয় সমাবেশে পদদলিত হওয়ার অতীতের বেশ কয়েকটি ঘটনা উল্লেখ করা হয়েছে ৷ সক্রিয় নিরাপত্তা ব্যবস্থার প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দেওয়া হয়েছে এবং বলা হয়েছে যে, 1954 সালে প্রয়াগরাজের কুম্ভমেলায় একটি সরু সেতুতে ভিড়ের কারণে 800 জনেরও বেশি মৃত্যু হয়েছিল । 1986 সালে হরিদ্বারে কুম্ভে সীমাবদ্ধ প্রবেশের কারণে প্রায় 200 জন লোকের মৃত্যু হয়েছিল ৷ 2003 সালে নাসিকে 39 জন মারা গিয়েছিল এবং 140 জনেরও বেশি আহত হয়েছিল । 2013 সালে, এলাহাবাদ রেলওয়ে স্টেশনে একটি ফুটব্রিজ ধসে 42 জন মারা যায় ।