কলকাতা, 28 জুলাই: নেতাজির মৃত্যু নিয়ে তৃতীয় এনডিএ সরকারের কাছ থেকে বিবৃতি দাবি করলেন নেতাজির নাতি ৷ বিমান দুর্ঘটনায় তাঁর মৃত্যু হয়েছে ৷ দ্রুত নেতাজির দেহাবশেষ জাপান থেকে ভারতে ফিরিয়ে আনা হোক ৷ এর সঙ্গে স্বাধীনতা সংগ্রামীকে নিয়ে মিথ্যা আখ্যানগুলিও বন্ধ হোক ৷ রবিবার নেতাজির নাতি চন্দ্রকুমার বসু এই দাবি জানিয়ে চিঠি লিখলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ৷
নেতাজির মৃত্যু নিয়ে কী বলেছে কমিশনগুলি ?
চন্দ্র কুমার বসু জানিয়েছেন, 18 অগস্টের মধ্যে জাপানের রেনকোজি মন্দির থেকে নেতাজির দেহাবশেষ ফিরিয়ে আনুক কেন্দ্রীয় সরকার ৷ প্রচলিত রয়েছে, 1945 সালের 18 অগস্ট তাইওয়ানে বিমান দুর্ঘটনায় নেতাজির মৃত্যু হয়েছিল ৷ যদিও সেই তথ্য নিয়ে বিতর্ক জারি ৷ এই মৃত্যু নিয়ে ধোঁয়াশা দূর করতে বসেছে একের পর এক কমিশন ৷ মুখার্জি কমিশন, খোসলা কমিশন এবং শাহনওয়াজ কমিশনের পেশ করা তথ্যের পরও নেতাজির মৃত্যু নিয়ে কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছনো সম্ভব হয়নি ৷
নেতাজির নাতি চন্দ্রকুমার বসুর দাবি
সুভাষ চন্দ্র বোস সম্পর্কিত সেই সব ফাইল প্রকাশ্যে আনার দাবি জানালেন তাঁর নাতি চন্দ্রকুমার বসু ৷ তিনি প্রধানমন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে জানিয়েছেন, এবার ভারত সরকারের তরফে একটি বিবৃতি প্রকাশ করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা উচিত ৷ যাতে নেতাজি সম্পর্কে মিথ্যা আখ্যানগুলি বন্ধ করা যায় ৷ এনডিএ-র নেতৃত্বাধীন সরকার স্বাধীনতা সংগ্রামী সম্পর্কিত ফাইলগুলিকে প্রকাশ করার উদ্যোগ আগেই নিয়েছিল ৷ সেই বিষয়ের উল্লেখ করে চন্দ্র বসু লেখেন, সব ফাইলই প্রকাশ করা হোক ৷ তিনি প্রধানমন্ত্রীকে লেখেন, "জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক স্তরের 10টি রিপোর্ট প্রকাশিত হওয়ার পরে এটা পরিষ্কার যে, 1945 সালে 18 অগস্ট তাইওয়ানে বিমান দুর্ঘটনায় নেতাজির মৃত্যু হয়েছে ৷"
"এই অবস্থায় এটি আবশ্যিক যে, ভারত সরকার একটি চূড়ান্ত বিবৃতি দিক, যাতে ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামী সম্পর্কে মিথ্যা আখ্যানগুলি বন্ধ হয় ৷ আপনার কাছে আমার বিনীত অনুরোধ, 18 অগস্টের মধ্যে রেনকোজি থেকে নেতাজির দেহাবশেষ ভারতে ফিরিয়ে আনা হোক", প্রধানমন্ত্রীকে লিখেছেন চন্দ্র বসু ৷
পিটিআইকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকার
পিটিআইকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে বিজেপি প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি চন্দ্র বসু বলেন, "ডিক্লাসিফিকেশন প্রক্রিয়ায় যে গোপন ফাইল এবং নথিগুলি প্রকাশ করা হয়েছে, তাতে চূড়ান্ত প্রমাণিত যে, 1945 সালের 18 অগস্ট বিমান দুর্ঘটনায় নেতাজির মৃত্যু হয়েছে ৷" তিনি আরও বলেন, "নেতাজি স্বাধীনতার পরে ভারতে ফিরে যেতে চেয়েছিলেন, কিন্তু বিমান দুর্ঘটনায় তিনি মৃত্যু হয় ৷ এটি অত্যন্ত অপমানজনক যে, নেতাজির দেহাবশেষ এখনও রেনকোজি মন্দিরে রাখা রয়েছে ৷" চন্দ্র বসু বলেন, "আমরা বিগত সাড়ে তিন বছর ধরে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখে চলেছি, ভারতের মুক্তিদাতাকে সম্মান জানাতে হলে, তাঁর দেহাবশেষ যেন অবশ্যই ভারতের মাটি স্পর্শ করে ।"
পাশাপাশি তিনি আরও জানান, নেতাজির কন্যা অনিতা বোস পাফ হিন্দু রীতি মেনে তাঁর বাবার শেষকৃত্যও করতে চেয়েছিলেন ৷ পিটিআইকে চন্দ্র বসু বলেন, "আমার মনে হয়, ভারত সরকারের প্রতিক্রিয়া জানানো উচিত ৷ যদি তারা মনে করে যে এই দেহাবশেষ নেতাজির নয়, তাহলে রেনকোজিতে তা রাখার জন্য রক্ষণাবেক্ষণের ব্যবস্থাও করা উচিত নয় ৷ আশা করি, প্রধানমন্ত্রী এই বিষয়ে বিবৃতি দেবেন ৷" (পিটিআই)