নয়াদিল্লি, 4 ফেব্রুয়ারি: ভারতীয় অর্থনীতিতে কৃষি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে ৷ দেশের জনসংখ্যার 47 শতাংশেরও বেশি মানুষ জীবিকা নির্বাহের জন্য আজও কৃষিকাজের উপরই নির্ভরশীল। উচ্চ পর্যায়ের কৃষি উৎপাদন অর্থনীতির বিভিন্ন সূচককে নিয়ন্ত্রণে রাখে। অন্যদিকে, খামারের উৎপাদন হ্রাসের ফলে খাদ্যের দাম বৃদ্ধি পায় যা আদতে মুদ্রাস্ফীতির কথাই জানান দেয় ৷ তার ফলে অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতার অভাব দেখা যায়। পাশাপাশি, ক্ষতি হয় সামগ্রিক বৃদ্ধির ক্ষেত্রেও ।
দেশের কৃষি ক্ষেত্র সরকারের কাছে বরাবরই অগ্রাধিকার পেয়েছে ৷ বিগত কয়েক বছর ধরে এই ক্ষেত্র স্থিতিশীল গতিতে বৃদ্ধি পেয়েছে ৷ তবে জলবায়ু পরিবর্তন থেকে শুরু করে অনিয়মিত বর্ষা ফসলের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলে চলেছে ৷ 2023 সালের জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর এই তিন মাসে দেশের কৃষি উৎপাদনের বৃদ্ধির হার 3.5 শতাংশ থেকে কমে 1.6 শতাংশে নেমে এসেছে। কৃষিক্ষেত্রে এটিকে একটি বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবেই দেখছেন বিশেষজ্ঞদের একটা বড় অংশ। ঠিক এই কারণেই চলতি বছর অন্তর্বতী বাজেটে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী কৃষি খাতে অর্থ বরাদ্দের পাশাপাশি কৃষকদের আয় বাড়ানোর বিষয়ে জোর দিয়েছেন ৷
সেক্ষেত্রে সরষে, চীনাবাদাম, তিল, সয়াবিন এবং সূর্যমুখীর মতো তৈলবীজের চাষের উপর জোর দেওয়া হয়েছে এবারের বাজেটে ৷ কারণ অর্থমন্ত্রীর মতে কৃষিতে 'আত্মনির্ভরতা' অর্জনের লক্ষ্যে এই ধরনের বীজ চাষ গেম-চেঞ্জার হতে পারে। ভারত ভোজ্য তেলের প্রয়োজনের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ আমদানি করে বিদেশ থেকে ৷ তার জন্য প্রতি বছরে খরচ হয় 1.38 লক্ষ কোটি টাকা ৷ তৈলবীজে স্বনির্ভরতা বাড়লে ভারতের এই তেল রপ্তানি করতে অনেক কম খরচ হবে ৷ বাজেটে কৃষি খাতে বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়িত করার জন্য 1.27 লক্ষ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। এছাড়াও, কৃষকদের স্বল্প খরচে সার দেওয়ার জন্য 1.64 লক্ষ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।
পাশাপাশি, বাজেটে জোর দেওয়া হয়েছে কোল্ড স্টোরেজ তৈরির উপরেও ৷ হিমঘরের অভাবে প্রতিনিয়ত দেশে উৎপাদিত ফল ও শাকসবজির একটা বড় অংশই ( কোনও কোনও হিসেবে প্রায় 30 থেকে 40 শতাংশ) নষ্ট হয়ে যায়। হিমঘরের সংখ্যা বাড়ালে তা এড়ানো যাবে বলেও জানানো হয়েছে এবারের বাজেট অধিবেশনে ৷
বাজেট পেশের সময় কৃষকদের 'আমাদের অন্নদাতা' হিসেবে উল উল্লেখ করেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী ৷ তিনি বলেছেন, "কৃষি পণ্যের জন্য ন্যূনতম সহায়ক মূল্য পর্যায়ক্রমে যথাযথভাবে বৃদ্ধি করা হচ্ছে ৷ প্রতি বছর 11.8 কোটি কৃষককে পিএম-কিষান সম্মানের অধীনে সরাসরি আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে। এছাড়াও, প্রধানমন্ত্রী ফসল বিমা যোজনার আওতায় ৪ কোটি কৃষককে শস্য বীমা দেওয়া হচ্ছে বলে জানান নির্মলা ৷
আরও পড়ুন:
1. দরিদ্র, কৃষক, মহিলা ও যুব-অন্তর্বর্তী বাজেটে চার শ্রেণির উপর বাড়তি গুরুত্ব নির্মলার
2. খাদ্যে ভর্তুকি কমে 2.05 লক্ষ কোটি টাকা, বাজেটে ঘোষণা নির্মলার
3. 80 কোটি মানুষকে ফ্রি রেশন দিয়ে দেশে খাদ্য নিয়ে উদ্বেগ দূর করেছে কেন্দ্র: নির্মলা