ইম্ফল, 2 সেপ্টেম্বর: জঙ্গি হামলায় দু’জন নিহত ও ন’জন আহত হওয়ার ঘটনায় মণিপুর সরকার রাজ্য পুলিশকে ইম্ফল পশ্চিম জেলার সীমান্তবর্তী এলাকায় অভিযান চালানোর নির্দেশ দিয়েছে ৷ রবিবারের হামলায় যারা জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সেখানকার ডিজিপিকে নির্দেশ দিয়েছেন মণিপুরের কমিশনার (স্বরাষ্ট্র) এন অশোক কুমার ৷ এই নিয়ে ডিজিপিকে তিনি একটি চিঠি লিখেছেন ৷ সেখানে তিনি এই নির্দেশ দিয়েছেন ৷
পশ্চিম ইম্ফল জেলা মণিপুরের কেইথেলমানবি থেকে কৌর্টরুক পর্যন্ত বিস্তৃত ৷ প্রায় 32 কিলোমিটার এলাকায় গত বছরের মে মাসে মণিপুরে হিংসাত্মক পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার পর থেকে একাধিক হামলা হয়েছে ৷ রবিবারও তেমন একটি হামলা হয় ৷ দুপুর আড়াইটে নাগাদ কৌর্টরুক ও কাডাংব্যান্ড এলাকায় পাহাড়ের উপর থেকে এলোপাথারি হামলা চালায় জঙ্গিরা ৷ সেই হামলায় দু’জন নিহত হন ৷ আর ন’জন আহত হন ৷ বেশ কিছু বাড়িও ক্ষতিগ্রস্ত হয় ৷
পুলিশ জানিয়েছে, রকেট থেকে ব্যবহৃত গ্রেনেড ও ড্রোন ব্যবহার করে এই হামলা চালানো হয় ৷ পুলিশ সূত্রে খবর, অন্তত পাঁচটি বোমা ফেলা হয় ড্রোনের সাহায্যে ৷ সেখানে অবশ্য কেউ ছিল না ৷ তার আগেই গ্রামবাসীরা পালাতে শুরু করেন ৷ পুলিশের তরফে পালটা গুলি চালানো হয় জঙ্গিদের উদ্দশ্য করে ৷ রবিবার রাত পর্যন্ত লড়াই চলে ৷
এই নিয়ে সরকারি তরফে যে বিবৃতি দেওয়া হয়েছে, সেখানে জানানো হয়েছে, "ইম্ফল পশ্চিমের কৌর্টরুকে হামলার ঘটনায় জঙ্গিরা উচ্চ প্রযুক্তির ড্রোন ব্যবহার করে রকেট থেকে গ্রেনেড নিক্ষেপ করে ৷ সাধারণ মানুষ ও নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে এই ড্রোন ব্যবহার করা হয় ৷ এর নেপথ্যে পেশাদার প্রশিক্ষিণ ও সহযোগিতা দেওয়ার বিষয়টিও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না ৷’’
এক সরকারি আধিকারিক সংবাদসংস্থা পিটিআইকে জানিয়েছেন, জঙ্গিদের গতিবিধি নজরদারি করতে ও তাদের শনাক্ত করার জন্য মণিপুরে দু’টি বিবাদমান গোষ্ঠী ড্রোন ব্যবহার করে ৷ রবিবার যে ধরনের হামলা, তা এর আগে ওই রাজ্যে কখনও হয়নি ৷
উল্লেখ্য, গত বছরের মে মাস থেকে উত্তপ্ত উত্তর পূর্ব ভারতের রাজ্য মণিপুর ৷ হিংসাত্মক পরিস্থিতির জেরে শতাধিক মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন ৷ আহত হয়েছেন অনেকে৷ সর্বস্ব হারিয়েছেন বহু মানুষ ৷ এই নিয়ে গত দেড় বছরে বারবার উত্তপ্ত হয়েছে দেশের রাজনীতি ৷ এই পরিস্থিতির দায় কেন্দ্র ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঘাড়েই বারবার চাপিয়েছে বিরোধীরা ৷ আপাত শান্ত পরিস্থিতি থাকলেও মাঝেমধ্যেই গোলমালের খবর পাওয়া যায় ৷ এবার জঙ্গি হামলায় নতুন করে উদ্বেগ বাড়ল ওই রাজ্যের প্রশাসনের ৷