বেঙ্গালুরু, 29 ফেব্রুয়ারি: কবি বলেছেন প্রেমের ফাঁদ পাতা ভুবনে/ কে কোথা ধরা পড়ে, কে জানে ৷ কবির লেখার সূত্র ধরেই পুলিশের জালে এক ৷ বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে 250 জন মহিলাদের থেকে টাকা আদায় ৷ এক মহিলার অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেফতার নরেশপুরি গোস্বামী নামে এক ব্যক্তি ৷ বেঙ্গালুরু রেলপুলিশ গ্রেফতার করেছে ওই ব্যক্তিকে ৷
পুলিশ সূত্রে খবর, বছর 45-এর নরেশপুরি গোস্বামী রাজস্থানের বাসিন্দা ৷ সম্প্রতি বিবাহ সম্পর্কিত একটি ওয়েবসাই পবন আগরওয়াল নামে একটি প্রোফাইল খুলেছেলেন ৷ সেখানে তিনি নিজেকে শুল্ক দফতরের এক আধিকারিক হিসাবে পরিচয় দিয়েছেন ৷ অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তাঁর টার্গেট হত বিধবা ও বিবাহ বিচ্ছিন্ন মহিলার ৷ তাদের সঙ্গে রাতের বেলায় ফোনে কথা বলতেন ৷
সম্প্রতি কোয়েম্বটোরের এক বিবাহ-বিচ্ছন্ন মহিলার সঙ্গে আলাপ জমান ৷ তাঁকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দেন ৷ বিয়ের কথা বলার জন্য চলতি বছরের জানুয়ারি ওই মহিলা ও তার বাবা-মা কে ডেকে পাঠান বেঙ্গালুরুতে ৷ এরপরই অভিযুক্ত ওই মহিলাকে জানান, তাঁর কাকা আসবেন বিয়ের কথা বলার জন্য ৷ কিন্তু টিকিট কাটতে হবে ৷ তার জন্য 10 হাজার টাকার প্রয়োজন ৷ তিনি বাড়িতে পার্স ফেলে এসেছেন ৷ এরপরই ওই মহিলার থেকে 10 হাজার টাকা নিয়ে টিকিট কাটবেন বলে চলে যান ৷ ঘটনার পর থেকে ওই ব্যক্তিকে একাধিকবার ফোন করলেও সুইচ অফ হয়ে যায় ৷ প্রতারিত হয়েছেন বুঝতে পেরে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন ওই মহিলার বাবা- মা ৷ সেই অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করে পুলিশ ৷
তদন্তে নেমে পুলিশ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে ৷ জানা গিয়েছে অভিযুক্ত বেঙ্গালুরুর কটনপেট এলাকার একটি কাপড়ের দোকানের কর্মী ৷ সে ব্লকে প্রি-অ্যাক্টিভ সিম কার্ড কিনেছিল। সেই সিম কার্ডের মাধ্যমে বিভিন্ন মহিলাদের সঙ্গে কথা বলতেন ৷ নিজেকে বেঙ্গালুরু বিমান বন্দরের শুল্ক বিভাগের কর্মী হিসাবে পরিচয় দিতেন ৷ পবন আগরওয়াল নামে একটি বায়োডাটা তৈরি করেছিলেন ৷
পুলিশ সূত্রে খবর, অভিযুক্ত হোয়াটঅ্যাপে একটি গ্রুপ তৈরি করেন 'অগ্রসেনজি বৈবাহিক মঞ্চ' নামে ৷ এই গ্রুপের মাধ্যমে বিভিন্ন মহিলাদের ফোন নম্বর জোগার করতেন ৷ যাদের মধ্যে অধিকাংশ বিধবা এবং বিবাহ বিচ্ছিন্ন ৷ তাঁদেরকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিতেন ৷ বিয়ের কথা বলার জন্য তাদের বেঙ্গালুরু ডেকে নিয়ে তাদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে প্রতারণা করত। এ জন্য তিনি আলাদা মোবাইল ফোন ব্যবহার করছিলেন।
পুলিশি তদন্তে জানা গিয়েছে, রাজস্থানের 56 জন, উত্তর প্রদেশের 32 জন, দিল্লির 32 জন, কর্ণাটকের 17 জন, মধ্যপ্রদেশের 16 জন, মহারাষ্ট্রের 13 জন, গুজরাটের 11 জন, তামিলনাড়ু 6 জন মহিলা-সহ 250 টিরও বেশি মহিলার সঙ্গে চ্যাট করত অভিযুক্ত ৷ এছাড়াও বিহারের 5 জন, ঝাড়খণ্ডের 5 জন এবং অন্ধ্র প্রদেশের 2জন মহিলা প্রতারণার শিকার হয়েছেন । তাঁরা অভিযোগ দায়ের করেছন বলে জানান রাজ্য রেলওয়ে বিভাগের ডিআইজিপি, ডঃ এসডি শরনাপ্পা।
আরও পড়ুন: