নয়াদিল্লি, 14 এপ্রিল: ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) তার নির্বাচনী ইস্তেহারে অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির মধ্যে ইউনিফর্ম সিভিল কোডের (ইউসিসি) বাস্তবায়ন এবং উত্তর-পূর্বে শান্তি বজায় রাখার প্রতিশ্রুতি রয়েছে। রবিবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং-সহ শীর্ষ নেতৃত্বের উপস্থিতিতে নয়াদিল্লিতে পার্টির সদর দফতরে তাদের নির্বাচনী ইস্তেহার প্রকাশ করা হয়। বিজেপি জানিয়েছে, অভিন্ন আইনী বিধি কার্যকর না-হওয়া পর্যন্ত মহিলারা সমান অধিকার পাবেন না।
নাগরিকদের জন্য ধর্ম, লিঙ্গ বা বর্ণ নির্বিশেষে বিবাহ, বিবাহবিচ্ছেদ, উত্তরাধিকার এবং দত্তক গ্রহণের মতো ব্যক্তিগত বিষয়গুলিকে নিয়ন্ত্রণকারী ইউনিফর্ম সিভিল কোড-কে আইনের একটি অংশ হিসাবে বিবেচনা করা হচ্ছে। বিজেপি তার ইশতেহারে বলেছে, "সংবিধানের অনুচ্ছেদ 44 ইউনিফর্ম সিভিল কোডকে রাজ্যের নীতির অন্যতম নির্দেশক নীতি হিসাবে তালিকাভুক্ত করে ৷ বিজেপি বিশ্বাস করে যে, যতক্ষণ না ভারত একটি অভিন্ন দেওয়ানি বিধি গ্রহণ করছে, যা সমস্ত মহিলার অধিকার রক্ষা করে, বিজেপি ততক্ষণ পর্যন্ত লিঙ্গ বৈষম্য দূর করতে পারবে না ৷ দেশের শ্রেষ্ঠ ঐতিহ্যের সঙ্গে আধুনিক সময়ের সামঞ্জস্যপূর্ণ একটি অভিন্ন দেওয়ানি বিধি তৈরিতে তার অবস্থানকে স্পষ্ট করে ।”
উল্লেখযোগ্যভাবে, উত্তরাখণ্ড এই বছরের শুরুতে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি বাস্তবায়ন করা ভারতের প্রথম রাজ্য হয়ে উঠেছে । বিজেপি আরও বলেছে যে এটি উত্তর-পূর্বে শান্তি প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি এবং সশস্ত্র বাহিনীর (বিশেষ ক্ষমতা) আইনের পর্যায়ক্রমে কার্যকর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবে ।
বিজেপি তার ইস্তেহারে বলেছে, "আমরা অশান্ত এলাকায় সমস্যা সমাধানের জন্য আমাদের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাব এবং পর্যায়ক্রমে আফস্পা অপসারণ করব। আমরা উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলির মধ্যে আন্তঃরাজ্য সীমানা বিরোধের সমাধানের জন্য নিরন্তর প্রচেষ্টার মাধ্যমে আরও কাজ করব ।"
গত বছর, উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলির মণিপুরে হিংসা ছড়িয়ে পড়ে যখন সেখানে আদিবাসী সম্প্রদায়গুলি রাজ্যের প্রধান উপজাতিগত গোষ্ঠীর মর্যাদার দাবির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে একটি সমাবেশ করে । প্রসঙ্গত, 'আফস্পা' আইনটি রাজ্যের গভর্নর বা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে সেনাবাহিনিকে, অশান্ত এলাকায় শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য প্রয়োজনে তল্লাশি, গ্রেফতার এবং গুলি চালানোর অবাধ ক্ষমতা দেয় ৷ সশস্ত্র বাহিনীর অভিযানের সুবিধার্থে একটি জেলা বা এলাকাকে আফস্পা আইনের অধীনে 'বিঘ্নিত' হিসাবে ঘোষণা করা হয় ।
ভারতীয় জনতা পার্টি আরও বলেছে, সংযোগ, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করে ভারতের 'অ্যাক্ট ইস্ট' নীতির জন্য একটি কৌশলগত প্রবেশদ্বার হিসাবে উত্তর-পূর্বকে কাজে লাগাতে কাজ করবে । বিজেপি প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনা রুখতে উপযুক্ত আইন বাস্তবায়ন এবং স্বচ্ছ পরীক্ষার আয়োজনের প্রতিশ্রুতিও দিয়েছে ।
গেরুয়া শিবিরের ইস্তেহারে 2036 সালে ভারতের অলিম্পিক বিড এবং অন্যান্য প্রতিশ্রুতির মধ্যে জাতীয় শিক্ষা নীতি 2020 বাস্তবায়নের কথাও বলা হয়েছে । এই ইস্তেহারের জন্য বিজেপি 15 লক্ষেরও বেশি পরামর্শ পেয়েছে সাধারণ মানুষের ৷ যার মধ্যে নমো অ্যাপের মাধ্যমে 400,000টিরও বেশি এবং ভিডিয়োর মাধ্যমে 11 লক্ষেরও বেশি পরামর্শ রয়েছে ৷
আরও পড়ুন: