ETV Bharat / bharat

দাদু স্বাধীনতা সংগ্রামী, নাতি কুখ্যাত মাফিয়া! রইল মুখতার আনসারির জীবনকাহিনি - MUKHTAR ANSARI DIES

Mukhtar Ansari: 2005 সাল থেকে জেলে জেলেই কাটছিল মুখতার আনসারির ৷ উত্তরপ্রদেশের কুখ্যাত মাফিয়াকে রাজনীতিতে প্রবেশ থেকে কেউ আটকাতে পারেনি ৷ মউ সদর কেন্দ্র থেকে পাঁচ-পাঁচবার বিধানসভা নির্বাচনে জয়ী হয়েছিলেন এই গ্যাংস্টার ৷

ETV Bharat
মুখতার আনসারি
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Mar 29, 2024, 10:44 AM IST

লখনউ, 29 মার্চ: হৃদরোগে মৃত্যু হয়েছে মুখতার আনসারির ৷ যিনি একাধারে কুখ্যাত গ্যাংস্টার ৷ অন্যদিকে তাঁর আরেক পরিচয় রাজনৈতিক নেতা-বিধায়ক ৷ 2005 সাল থেকে দেশের বিশেষত উত্তরপ্রদেশ ও পঞ্জাবের বিভিন্ন জেলে তাঁর দিন কেটেছে ৷ মাথার উপর ছিল 60টিরও বেশি মামলা ৷ তার মধ্যে রয়েছে তোলাবাজি, খুন, অপহরণ ৷ উত্তরপ্রদেশের বান্দা জেলেই ছিলেন তিনি ৷

বৃহস্পতিবার হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, মুখতার আনসারিকে সংজ্ঞাহীন অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসা হয় ৷ সেখানেই হৃদরোগে তাঁর মৃত্যু হয় ৷ এদিকে তাঁর পুত্র উমর আনসারির অভিযোগ, মুখতার আনসারিকে জেলের মধ্যে ধীরে ধীরে বিষ দিয়ে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেওয়া হয়েছে ৷

মুখতার আনসারির পরিবার দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের সঙ্গে যুক্ত ছিল ৷ তাঁর ঠাকুরদা মুখতার আহমেদ আনসারি কংগ্রেসের নেতা ছিলেন ৷ ব্রিটিশ শাসনাধীন ভারতে কংগ্রেসের সভাপতি হয়েছিলেন ৷ এহেন পরিবারের সন্তান হয়ে মুখতার আনসারি নিজেকে মাফিয়া হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেন ৷ সেই মাফিয়াই আবার রাজনীতিতে পা রেখে বিধায়ক হয়েছিলেন ৷ তবে উত্তরপ্রদেশের অপরাধ জগতে তিনি একজন বড়সড় মাফিয়া কনট্র্যাক্ট হয়ে উঠেছিলেন ৷

1978 সালে মাত্র 15 বছর বয়সে অপরাধ জগতে প্রবেশ আনসারির ৷ গাজিপুরের সৈদপুর থানায় ফৌজদারি মামলায় অভিযোগ দায়ের হয় তাঁর বিরুদ্ধে ৷ এরপর যত দিন গিয়েছে, ততই তিনি অপরাধ জগতের পরিচিত মুখ হয়ে উঠেছেন ৷ এর প্রায় এক দশক পর 1986 সালে মুখতারের বিরুদ্ধে আরেকটি খুনের অভিযোগ দায়ের হয় গাজিপুর মহম্মদ থানায় ৷

এরপরের দশকে অপরাধ জগতে নিজেকে পুরোপুরি প্রতিষ্ঠিত করে ফেলেন মুখতার আনসারি ৷ তাঁর বিরুদ্ধে গুরুতর ধারায় 14টিরও বেশি মামলা দায়ের হয় ৷ এসব সত্ত্বেও মুখতার আনসারি অনায়াসেই রাজনীতিতে প্রবেশ করেন ৷

1996 সালে বহুজন সমাজ পার্টি বা বিএসপির টিকিটে মউ সদর কেন্দ্র থেকে উত্তরপ্রদেশ বিধানসভা নির্বাচনে লড়েন আনসারি ৷ প্রথমবার বিধায়ক নির্বাচিত হন মুখতার আনসারি ৷ সেই শুরু ৷ এরপর 2002 এবং 2007 সালের বিধানসভা নির্বাচনে নির্দল প্রার্থী হিসেবে লড়ে জয়ী হন ৷ 2012 সালে নিজের কোয়ামি একতা দল বা কিউইডি গড়েন মুখতার ৷ ফের মউ কেন্দ্রে জয়ী হন মাফিয়া মুখতার ৷ এরপর 2017 সালেও অপ্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন তিনি ৷ 2022 সালে তিনি মউ সদর কেন্দ্রটি ছেড়ে দেন ছেলে আব্বাস আনসারির জন্য ৷ তিনিও সুহেলদেব ভারতীয় সমাজ পার্টির হয়ে ওই কেন্দ্রে জয়ী হন ৷

তবে 'কাহানি মে টুইস্ট' এখানে ৷ এই বিধায়ক হওয়ার সময় কিন্তু বিভিন্ন জেলেই থেকেছেন মুখতার ৷ 2005 সাল থেকে উত্তরপ্রদেশ এবং পঞ্জাবের একাধিক জেলেই দিন কেটেছে গ্যাংস্টার বিধায়কের ৷ এই সময় তাঁর বিরুদ্ধে 28টি ফৌজদারি মামলা দায়ের হয় ৷ এর মধ্যে খুনের অভিযোগও রয়েছে ৷ উত্তরপ্রদেশের গ্যাংস্টার অ্যাক্টের আওতায় 7টি মামলা ৷

2022 সালের সেপ্টেম্বর থেকে 8টি ফৌজদারি মামলায় তিনি দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন ৷ আর 21টি মামলা ট্রায়াল চলছিল বিভিন্ন আদালতে ৷ এ মাসের প্রথম দিকেই আনসারিকে যাবজ্জীবন সাজা দেয় উত্তরপ্রদেশের একটি আদালত ৷ সঙ্গে 2.02 লক্ষ টাকা জরিমানা ৷ তিনি প্রায় 37 বছর আগে বেআইনিভাবে আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স রেখেছিলেন ৷ তাতেই এই সাজা ঘোষণা করে আদালত ৷

আরও পড়ুন:

  1. হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু জেলবন্দি মাফিয়া মুখতার আনসারির
  2. আতিক খুনের ঘটনায় সাসপেন্ড এক আধিকারিক-সহ পাঁচ পুলিশকর্মী

লখনউ, 29 মার্চ: হৃদরোগে মৃত্যু হয়েছে মুখতার আনসারির ৷ যিনি একাধারে কুখ্যাত গ্যাংস্টার ৷ অন্যদিকে তাঁর আরেক পরিচয় রাজনৈতিক নেতা-বিধায়ক ৷ 2005 সাল থেকে দেশের বিশেষত উত্তরপ্রদেশ ও পঞ্জাবের বিভিন্ন জেলে তাঁর দিন কেটেছে ৷ মাথার উপর ছিল 60টিরও বেশি মামলা ৷ তার মধ্যে রয়েছে তোলাবাজি, খুন, অপহরণ ৷ উত্তরপ্রদেশের বান্দা জেলেই ছিলেন তিনি ৷

বৃহস্পতিবার হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, মুখতার আনসারিকে সংজ্ঞাহীন অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসা হয় ৷ সেখানেই হৃদরোগে তাঁর মৃত্যু হয় ৷ এদিকে তাঁর পুত্র উমর আনসারির অভিযোগ, মুখতার আনসারিকে জেলের মধ্যে ধীরে ধীরে বিষ দিয়ে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেওয়া হয়েছে ৷

মুখতার আনসারির পরিবার দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের সঙ্গে যুক্ত ছিল ৷ তাঁর ঠাকুরদা মুখতার আহমেদ আনসারি কংগ্রেসের নেতা ছিলেন ৷ ব্রিটিশ শাসনাধীন ভারতে কংগ্রেসের সভাপতি হয়েছিলেন ৷ এহেন পরিবারের সন্তান হয়ে মুখতার আনসারি নিজেকে মাফিয়া হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেন ৷ সেই মাফিয়াই আবার রাজনীতিতে পা রেখে বিধায়ক হয়েছিলেন ৷ তবে উত্তরপ্রদেশের অপরাধ জগতে তিনি একজন বড়সড় মাফিয়া কনট্র্যাক্ট হয়ে উঠেছিলেন ৷

1978 সালে মাত্র 15 বছর বয়সে অপরাধ জগতে প্রবেশ আনসারির ৷ গাজিপুরের সৈদপুর থানায় ফৌজদারি মামলায় অভিযোগ দায়ের হয় তাঁর বিরুদ্ধে ৷ এরপর যত দিন গিয়েছে, ততই তিনি অপরাধ জগতের পরিচিত মুখ হয়ে উঠেছেন ৷ এর প্রায় এক দশক পর 1986 সালে মুখতারের বিরুদ্ধে আরেকটি খুনের অভিযোগ দায়ের হয় গাজিপুর মহম্মদ থানায় ৷

এরপরের দশকে অপরাধ জগতে নিজেকে পুরোপুরি প্রতিষ্ঠিত করে ফেলেন মুখতার আনসারি ৷ তাঁর বিরুদ্ধে গুরুতর ধারায় 14টিরও বেশি মামলা দায়ের হয় ৷ এসব সত্ত্বেও মুখতার আনসারি অনায়াসেই রাজনীতিতে প্রবেশ করেন ৷

1996 সালে বহুজন সমাজ পার্টি বা বিএসপির টিকিটে মউ সদর কেন্দ্র থেকে উত্তরপ্রদেশ বিধানসভা নির্বাচনে লড়েন আনসারি ৷ প্রথমবার বিধায়ক নির্বাচিত হন মুখতার আনসারি ৷ সেই শুরু ৷ এরপর 2002 এবং 2007 সালের বিধানসভা নির্বাচনে নির্দল প্রার্থী হিসেবে লড়ে জয়ী হন ৷ 2012 সালে নিজের কোয়ামি একতা দল বা কিউইডি গড়েন মুখতার ৷ ফের মউ কেন্দ্রে জয়ী হন মাফিয়া মুখতার ৷ এরপর 2017 সালেও অপ্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন তিনি ৷ 2022 সালে তিনি মউ সদর কেন্দ্রটি ছেড়ে দেন ছেলে আব্বাস আনসারির জন্য ৷ তিনিও সুহেলদেব ভারতীয় সমাজ পার্টির হয়ে ওই কেন্দ্রে জয়ী হন ৷

তবে 'কাহানি মে টুইস্ট' এখানে ৷ এই বিধায়ক হওয়ার সময় কিন্তু বিভিন্ন জেলেই থেকেছেন মুখতার ৷ 2005 সাল থেকে উত্তরপ্রদেশ এবং পঞ্জাবের একাধিক জেলেই দিন কেটেছে গ্যাংস্টার বিধায়কের ৷ এই সময় তাঁর বিরুদ্ধে 28টি ফৌজদারি মামলা দায়ের হয় ৷ এর মধ্যে খুনের অভিযোগও রয়েছে ৷ উত্তরপ্রদেশের গ্যাংস্টার অ্যাক্টের আওতায় 7টি মামলা ৷

2022 সালের সেপ্টেম্বর থেকে 8টি ফৌজদারি মামলায় তিনি দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন ৷ আর 21টি মামলা ট্রায়াল চলছিল বিভিন্ন আদালতে ৷ এ মাসের প্রথম দিকেই আনসারিকে যাবজ্জীবন সাজা দেয় উত্তরপ্রদেশের একটি আদালত ৷ সঙ্গে 2.02 লক্ষ টাকা জরিমানা ৷ তিনি প্রায় 37 বছর আগে বেআইনিভাবে আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স রেখেছিলেন ৷ তাতেই এই সাজা ঘোষণা করে আদালত ৷

আরও পড়ুন:

  1. হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু জেলবন্দি মাফিয়া মুখতার আনসারির
  2. আতিক খুনের ঘটনায় সাসপেন্ড এক আধিকারিক-সহ পাঁচ পুলিশকর্মী
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.