নয়াদিল্লি, 6 অগস্ট: বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে সংসদের উভয় কক্ষে বিবৃতি দিলেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর ৷ শেখ হাসিনার পদত্যাগ থেকে শুরু করে সে দেশে সংখ্যালঘুদের উপর আক্রমণের প্রসঙ্গ মঙ্গলবার তুলে ধরেন মোদি মন্ত্রিসভার এই সদস্য ৷ তিনি জানান, বাংলাদেশ প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে ৷ সেখানে আটকে থাকা ভারতীয়দের নিরাপত্তা যাতে বিঘ্নিত না হয়, নজর রাখা হচ্ছে সেদিকেও ৷
শুরুতেই তিনি বলেন, "ভারত ও বাংলাদেশের সম্পর্ক বহুকাল ধরেই গভীর ৷ প্রতিবেশী দেশে সংঘর্ষের ঘটনায় আমরা উদ্বিগ্ন ৷ জানুয়ারি মাসে সাধারণ নির্বাচনের পর থেকে উদ্বেগ বাড়তে শুরু করেছে ৷ সমাজের বিভিন্ন অংশের মধ্যে বিভেদ দেখা দিয়েছে ৷ এমনই আবহে জুন মাসের ছাত্র আন্দোলন শুরু হলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয় ৷ "বিদেশমন্ত্রীর দাবি ছিল, সন্ত্রাস বন্ধ করতে বিভিন্ন পক্ষকে অনুরোধ করেছিল ভারত ৷ রাজনৈতিকভাবেও সন্ত্রাস থামানোর প্রয়াস হয়েছিল ৷ তারপরও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসেনি ৷
বিদেশমন্ত্রীর ভাষণে উঠে আসে, 21 জুলাই বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্টের রায়ের প্রসঙ্গ ৷ সেই রায়ের পরও যে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসেনি তা-ও জানান জয়শঙ্কর ৷ পাশপাাশি তাঁর দাবি, এরপর থেকে সরকারেক তরফে যা যা করা হয়েছে তাতে অশান্তি কমার বদলে বেড়ে যায় ৷ আন্দোলনের অভিমুখও বদলে যায় ৷ উঠতে থাকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের দাবি ৷ মন্ত্রী আরও জানান, 4 তারিখ পুলিশের উপর হামলা হয় ৷ সরকারের সঙ্গে জড়িতদের উপরও আক্রমণ হয় ৷ আক্রমণ হয় সংখ্যালঘুদেরও মন্দিরে উপর ৷ এখনও ক্ষয়ক্ষতির সম্পূর্ণ পরিমাণ পাওয়া যায়নি ৷
লোকসভায় বিদেশমন্ত্রী জানান, বাংলাদেশে এখন 19 হাজার ভারতীয় আছেন ৷ তার মধ্যে 9 হাজার ছাত্র ৷ সেখানে অশান্তি শুরু হওয়ার পর থেকে অনেক ছাত্র হাইকমিশনের পরামর্শে আগেই ফিরে এসেছেন ৷ বাকিদের যাতে কোনও সমস্যা না হয় তা নিশ্চিত করতে প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে ভারত ৷ বিদেশমন্ত্রীর আশা বাংলাদেশের পরিস্থিতি দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আসবে ৷ ঢাকার হাইকমিশনের পাশাপাশি সিলেট, খুলনা, রাজশাহী এবং চট্টগ্রামের উপ হাইকমিশনের মাধ্যমে পরিস্থিতির উপর নজর রাখা হচ্ছে ৷
অন্য একটি প্রসঙ্গে জয়সঙ্কর জানান, বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার চিন্তিত ৷ সেখানে সংখ্যালঘুদের উপর আক্রমণের খবর আগে মিলেছিল ৷ তবে কয়েকটি সংগঠন তাদের নিরাপত্তার দায়িত্ব নিয়েছে ৷ কিন্তু, তা-ও পরিস্থিতির উপর নজর রাখছে মোদি সরকার ৷ গত 24 ঘণ্টায় নিরন্তর বাংলাদেশ প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে ভারত ৷ শেখ হাসিনার ভারতে আসা নিয়েও সরব হন জয়শঙ্কর ৷ তিনি জানান, হাসিনা ভারতে আসার অনুমতি চান ৷ এরপর বাংলাদেশ প্রশাসনের তরফে ভারতের আকাশপথ ব্যবহারের অনুমতি চাওয়া হয় ৷ ভারত সেই অনুমতি দিলে সোমবার সন্ধ্যায় ভারতের মাটিতে অবতরণ করে হাসিনার বিমান ৷