দার্জিলিং, 15 জুন: লাচেন এবং চুংথাংয়ে আটকে পড়া পর্যটকদের উদ্ধারে এবার প্রস্তুতি শুরু করল ভারতীয় বায়ুসেনা। শনিবার সকালে সিকিম সরকারের তরফে ভারতীয় বায়ুসেনাকে আবেদন করা হয় যাতে লাচেন এবং চুংথাং-সহ বিভিন্ন জায়গায় আটকে থাকা পর্যটকদের এয়ারকাফট করে উদ্ধার করা হয়। আর সিকিম সরকারের তরফে ওই আবেদন পেতেই তৎপর ভারতীয় সেনা এবং বায়ুসেনা।
সিকিমের মুখ্যমন্ত্রী প্রেম সিং তামাং শনিবার নামচি জেলার ভূমিধসে ক্ষতিগ্রস্ত মাজুয়া গ্রাম পরিদর্শন করেছেন এবং ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সঙ্গে কথা বলেছেন ৷ জানা গিয়েছে, শিলংয়ে থাকা বায়ুসেনার ইস্টার্ন কমান্ডের তরফে ওই বিষয়ে কলকাতায় থাকা বায়ুসেনার অ্যাডভ্যান্স হেডকোয়ার্টারের সঙ্গে আলোচনা শুরু হয়েছে। ভারতীয় বায়ুসেনার বাগডোগরা, গুয়াহাটি ও তেজপুর বায়ুসেনা ছাউনি থেকে রেসকিউ হেলিকপ্টার প্রস্তুত রাখতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। অতিরিক্ত হিসেবে তেজপুর ও জোরহাট বায়ুসেনাকেও ব্যবহার করা হতে পারে বলে জানা গিয়েছে। উদ্ধারের ক্ষেত্রে এমআই-17ভি-ফাইভ, (MI-17V-5), চিনুক, এলএইচ (LH) হেলিকপ্টার প্রস্তুত রাখা হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে।
শনিবার সকালে সিকিমে নতুন করে ধসের ঘটনা ঘটেছে। লিঙ্গসে, গৌথালে, সামডঙ্গ, টুমিন লিঙ্গি, উত্তর সিকিমের মাঙ্গশিলা, আপার ঝুসিংয়ে ধসের ঘটনা ঘটেছে। ইতিমধ্যে সিকিমের মুখ্যমন্ত্রী প্রেম সিং তামাং প্রত্যেক মন্ত্রী ও বিধায়কদের ময়দানে নামার নির্দেশ দিয়েছেন। পাশাপাশি তিনি নিজেও মাজুয়া গ্রামের ধস কবলিত এলাকা পরিদর্শনে যাচ্ছেন বলে জানা গিয়েছে। অন্যদিকে, সিকিমে টানা বৃষ্টির জেরে ধসের কারণে আটকে থাকা পর্যটকদের জন্য হেল্পডেস্ক চালু করেছে নবান্ন।
পূর্ব-সিকিমের রংপোতে পর্যটকদের উদ্ধারের কাজ তদারকির জন্য তৈরি হয়েছে ওই হেল্পডেস্ক। সেই ডেস্কের দুই আধিকারিক রবি বিশ্বকর্মা (8768095881) এবং পুষ্পজিৎ বর্মনের (9051499096) মোবাইল নম্বরও রয়েছে ওই বিজ্ঞপ্তিতে। আটকে পড়া প্রায় 1200 পর্যটকের মধ্যে রয়েছে 15 জন বিদেশি পর্যটক। যদিও সিকিমের আবহাওয়া প্রতিকূল থাকায় উদ্ধারকাজে বেশ বাধা আসবে বলে মনে করছে প্রশাসন।
- এই বিষয়ে গ্যাংটকের আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গোপীনাথ রাহা বলেন,"সিকিমে বৃষ্টি হচ্ছে। পাশাপাশি ঘন কুয়াশা রয়েছে। গ্যাংটকেও বৃষ্টি হচ্ছে। আগামী পাঁচ-ছয় দিন কোথাও বিক্ষিপ্ত ও কোথাও ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।"
- ভারতীয় বায়ুসেনার উইঙ্গ কমান্ডার তিওয়ারি বলেন, "আবহাওয়া উদ্ধার অভিযানের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। আবহাওয়া ঠিক না-হলে উদ্ধারকাজে বেশ সমস্যা হতে পারে। তবে সব দেখা হচ্ছে। বাগডোগরা, গুয়াহাটি ও তেজপুর ছাউনি থেকে মূলত রেসকিউ হেলিকপ্টার পাঠানো হয়। সেইমতো প্রস্তুতি চলছে। পাকইয়ং বিমানবন্দর থেকে উদ্ধারকাজ করা হতে পারে। গ্যাংটকেও যদি জায়গা বা হেলিপ্যাডের মতো জায়গা থাকে সেটাও দেখা হচ্ছে।"
- ভারতীয় বায়ুসেনার ইস্টার্ন কমান্ডের আধিকারিক শিব প্রকাশ বলেন, "ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আধিকারিকরা উদ্ধার অভিযানের শুরু আলোচনা করছেন। এখনই কিছু বলা সম্ভব না। তবে উদ্ধারকাজের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। কীভাবে করা যেতে পারে তার আলোচনা চলছে।"
- সিকিমের পর্যটনমন্ত্রী শেরিং থেন্ডুপ ভুটিয়া বলেন, "ধসের কারণে সিংথাম ও গ্যাংটকের সঙ্গে যোগাযোগ সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে রয়েছে। সেজন্য ভারতীয় বায়ুসেনাকে আমরা আবেদন করেছি যাতে এয়ারকাফট করে উদ্ধার করা হয়।"
- ভারতীয় সেনার কর্নেল অঞ্জনকুমার বাসুমাতারি বলেন, "ভারতীয় সেনা উদ্ধারকাজ চালাচ্ছে। তবে পরিস্থিতি সেখানে অনেকটাই জটিল।"