গোয়ালিয়র, 30 মার্চ: মধ্যপ্রদেশের গোয়ালিয়রের জিওয়াজি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রের নামে 46 কোটি টাকা লেনদেন ও কর ফাঁকি দেওয়ার নোটিশ পাঠাল আয়কর বিভাগ ৷ যে ঘটনায় মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ার মতো অবস্থা পড়ুয়ার ৷ এই ঘটনায় গোয়ালিয়র ক্রাইম ব্রাঞ্চের দ্বারস্থ হয়েছেন প্রমোদ দন্ডোতিয়া নামে ইংরেজি ভাষার স্নাতকোত্তরের ওই পড়ুয়া ৷ গোয়ালিয়র পুলিশের সাইবার সেল ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে ৷
প্রমোদ জানিয়েছেন, দু’মাস আগে তাঁর নামে কর ফাঁকি দেওয়ার অভিযোগে আয়কর বিভাগের একটি নোটিশ আসে ৷ যেখানে বলা হয়েছে, তাঁর নামে থাকা একটি সংস্থা গত তিনবছরে 46 কোটি টাকার লেনদেন করেছে ৷ কিন্তু, এই বিপুল পরিমাণ টাকার কোনও আয়কর তিনি জমা দেননি ৷ নোটিশ হাতে পেয়ে রাতের ঘুম উড়ে যায় তাঁর ৷ হতদরিদ্র পরিবারের ওই পড়ুয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের ফি জোগাড় করাই যেখানে দুষ্কর, সেখানে এই ঘটনা কীভাবে এটা সম্ভব, তা বুঝে উঠতে পারেন না প্রমোদ দন্ডোতিয়া ৷
প্রমোদ বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় জিএসটি কালেক্টর এবং পুলিশ স্টেশনে অভিযোগ জানাতে যান ৷ কিন্তু, অভিযোগ জিএসটি কালেক্টর এবং পুলিশ তাঁকে বারবার ফিরিয়ে দেয় ৷ এরপর গত শুক্রবার তিনি গোয়ালিয়র পুলিশের ক্রাইম ব্রাঞ্চের অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের সঙ্গে দেখা করেন ৷ আয়কর বিভাগের সেই নোটিশ ও তাঁর ব্যাংক অ্যাকাউন্টের বিস্তারিত নথি নিয়ে যান প্রমোদ ৷ বিষয়টির গুরুত্ব বুঝে পুলিশ আধিকারিক তাঁকে সাইবার সেলে অভিযোগ জানাতে বলেন ৷
এই ঘটনায় সাইবার সেলে নথি-সহ এফআইআর দায়ের করেছেন প্রমোদ দন্ডোতিয়া ৷ সেই অভিযোগের একটি কপি তিনি আয়কর বিভাগেও জমা করেছেন ৷ কীভাবে এই প্রতারণার শিকার হলেন এক স্নাতকোত্তরের পড়ুয়া ? জানা গিয়েছে, প্রমোদের প্যান কার্ডের নথি ব্যবহার করে একটি সংস্থা খোলা হয়েছে ৷ যে সংস্থাটি দিল্লি ও পুনের মধ্যে কাজ করে ৷ গত তিনবছর ধরে এই সংস্থার নামে মোট 46 কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে ৷ কিন্তু, প্রমোদের নামে থাকা ব্যাংক অ্যাকাউন্টে এই তিনবছরে তার এক টাকাও আসেনি ৷
তদন্তকারীদের অনুমান, কোনও প্ল্যাটফর্ম থেকে প্রমোদের প্যান কার্ডের নথি চুরি করেছে প্রতারকরা ৷ আর সেটিকে ব্যবহার করে প্রমোদের নামে একটি সংস্থা খোলা হয়েছে ৷ আর তার মাধ্যমে কোটি কোটি টাকার লেনদেন করা হয়েছে ৷ কিন্তু, প্রশ্ন হল নথি ব্যবহার করলেই তো আর একটা আস্ত কোম্পানি খুলে ফেলা যায় না ৷ সেখানে যার নামে সংস্থা হচ্ছে, রেজিস্ট্রেশনের জন্য তাঁর সই দরকার ৷ সেগুলি কীভাবে হল ?
এক্ষেত্রে কী তাহলে জাল প্যান কার্ড তৈরি করা হয়েছিল ? কারণ, প্যান কার্ডের নথিতে তো ছবি প্রমোদের থাকার কথা ৷ আর প্রতারণা করতে হলে, প্যানের বাকি নথি এক থাকলেও, ছবি না-বদলালে প্রতারকরা সহজেই ধরা পড়ে যেত ৷ সাইবার সেল এইসবের বিস্তারিত তদন্ত শুরু করেছে ৷
আরও পড়ুন: