প্রয়াগরাজ, 6 এপ্রিল: দু’পক্ষের সম্মতিতে বিবাহ বিচ্ছেদ হলে এবং স্ত্রী যদি তাঁর অধিকার ছেড়ে দেন তবে স্বামীর কাছ থেকে কোনও সুবিধে পাবেন না ৷ একটি বিবাহ বিচ্ছেদের মামালায় এমনই রায় দিয়েছে এলাহাবাদ হাইকোর্ট ৷ বিচারপতি বিপিন চন্দ্র দীক্ষিত, গৌরব মেহতা এবং অনামিকা চোপড়ার ডিভিশন বেঞ্চ এই নির্দেশ দিয়েছে।
বিবাহ বিচ্ছেদের পর ওই মহিলা আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন তাঁর ভরণপোষণ সংক্রান্ত মামলা নিয়ে ৷ তখনই গৌতম বুদ্ধ নগরের অতিরিক্ত প্রধান বিচারপতি মামলাকারী মহিলাকে মাসিক 25 হাজার টাকা ভরণপোষণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন ৷ সেই নির্দেশ খারিজ করে দিল এলাহাবাদ হাইকোর্ট ৷ পাশাপাশি, গৌতম বুদ্ধ নগরের অতিরিক্ত প্রধান বিচারপতিকে তাঁর দেওয়া নির্দেশও বাতিল করতে বলেছে আদালত ৷
আদালত মনে করছে, মামলাকারী মহিলা ভরণপোষণের টাকার অঙ্ক বাড়াতেই মামলা করেছিলেন ৷ সেই আবেদন খারিজ করে দেয় এলাহাবাদ হাইকোর্ট ৷ এরপরেই আবেদনকারীর আবেদন খতিয়ে দেখে আদালত রায় দেয়, ওই মহিলা তাঁঁর স্বামীর প্রতি সমস্ত অধিকার ছেড়ে বিবাহবিচ্ছেদ করেছেন ৷ তাই অন্তর্বর্তীকালীন ভরণপোষণ পাওয়ার অধিকার নেই তাঁর।
জানা গিয়েছে, 2004 সালের 27 ফেব্রুয়ারি গৌতম বুদ্ধ নগরের এক বাসিন্দার সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল মহিলার ৷ তাঁদের একটি সন্তান আছে ৷ এর ঠিক দু’বছর পর 2006 সালের 16 জুন দিল্লির তিস হাজারি আদালতে বিবাহবিচ্ছেদের মামলা দায়ের করেন তিনি। বিচার চলাকালীন সংশ্লিষ্ট আদালত দু’পক্ষের জবানবন্দি রেকর্ড করে ৷ সেখাই স্ত্রী জানান, ভবিষ্যতে তিনি স্বামীর কাছে কোনও ভরণপোষণ চাইবেন না। পুত্র সাবালক না-হওয়া পর্যন্ত মায়ের কাছেই থাকবে ৷ পিতা নির্ধারিত সময়ে পুত্রের সঙ্গে দেখা করতে পারবেন। এর ভিত্তিতে 2007 সালের 20 আগস্ট ওই দম্পতির বিবাহবিচ্ছেদ হয়ে যায় ৷ দু'জনই তারপর থেকে আলাদা থাকেন ।
এর কিছুদিন পরে আবারও ওই মহিলা গৌতম বুদ্ধ নগর পারিবারিক আদালতে ভরণপোষণের মামলা দায়ের করেন ৷ সেই মামলায় পারিবারিক আদালত রায় দেয়, ছেলের খরচের জন্য প্রতি মাসে 15 হাজার টাকা দিতে হবে ওই ব্যক্তিকে। এরপর স্ত্রীও প্রাক্তন স্বামীর আয়ের 25 শতাংশ ভরণপোষণের জন্য দাবি করেন ৷ পারিবারিক আদালত তা মেনে নিয়ে ওই মহিলাকে 25 হাজার টাকা দেওয়ার নির্দেশ দেয় ৷ এই রায়কে চ্যলেঞ্জ করে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন প্রাক্তন স্বামী ৷ সেই রায়ের ভিত্তিতেই এলাহাবাদ হাইকোর্ট 25 হাজার টাকা দেওয়ার নির্দেশ খারিজ করে দেয় ৷
আরও পড়ুন: