ETV Bharat / bharat

নিখোঁজ ছিলেন চার মাস ধরে ! জেলাশাসকের বাড়ির কাছে মিলল বধূর দেহ

চার মাস ধরে নিখোঁজ ছিলেন ব্যবসায়ীর স্ত্রী ৷ পরে তাঁর দেহ মিলল জেলাশাসকের বাড়ির কাছে ৷ খুনি কী করে সেখানে পৌঁছল ? উঠছে প্রশ্ন ৷

Kanpur Murder Case
কানপুরে বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কের জেরে খুন (ইটিভি ভারত)
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Oct 27, 2024, 2:07 PM IST

কানপুর, 27 অক্টোবর: এ যেন অজয় দেবগণ অভিনীত 'দৃশ্যম' সিনেমারই বাস্তবায়ন ৷ ওই সিনেমায় এক পুলিশ আধিকারিকের ছেলেকে নির্মীয়মাণ থানার তলায় পুঁতে লুকিয়ে রেখেছিল নায়ক ৷ এ দিকে পুলিশ সারা শহর খুঁজেও তার সন্ধান পায়নি ৷ একই রকম ঘটনা ঘটেছে উত্তর প্রদেশের কানপুরে ৷ এক জিম ট্রেনার এক মহিলাকে খুন করে তাঁর দেহটি জেলাশাসকের বাড়ির কাছেই পুঁতে রেখেছিল ৷

গত চার মাস ধরে ওই মহিলার নিখোঁজ ছিলেন ৷ শনিবার রাতে এই ঘটনায় কোতোয়ালি থানার পুলিশ বিমল সোনিকে গ্রেফতার করে ৷ সে সুগার মিল খালওয়া কম্পাউন্ডের গ্রিনপার্ক স্টেডিয়ামের বাসিন্দা এবং পেশায় জিম ট্রেনার ৷ পরে জিজ্ঞাসাবাদে সে পুলিশের কাছে একতা নামের ওই বধূকে খুনের অপরাধের কথা স্বীকার করে নেয় ৷

গত 24 জুন থেকে একতাকে পাওয়া যাচ্ছিল না ৷ তিনি কোতোয়ালি থানা এলাকায় বাস করতেন ৷ ওই জিমটিতে তিনি প্রায়ই যেতেন ৷ তাঁর দুই সন্তান আছে ৷ একতার স্বামী একজন ব্যবসায়ী ৷ ওই জিমটিতে যেতে যেতেই জিম ট্রেনার বিমল সোনির সঙ্গে মহিলার আলাপ হয় ৷ আলাপ থেকেই বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন একতা ও বিমল ৷

4 মাস আগে একতা জিম থেকে বেরিয়ে হঠাৎ নিখোঁজ হয়ে যান ৷ তখন মহিলার স্বামী থানায় গিয়ে এফআইআর দায়ের করেন ৷ কোতোয়ালি থানার পুলিশ এর তদন্ত করছিল ৷ গত 4 মাসে তারা ওই মহিলাকে খুঁজে পায়নি ৷ শনিবার বিমলকে গ্রেফতার করে পুলিশ ৷ জেরার মুখে বিমল স্বীকার করে যে, সেই একতাকে খুন করেছে ৷

পুলিশ সূত্রে খবর, 24 জন একতা জিম থেকে বেরনোর পর তাঁকে নিজের গাড়িতে বসায় বিমল ৷ সে জানায় যে, তাঁর বিয়ের পাকা কথা হয়ে গিয়েছে ৷ তিলকও হয়ে গিয়েছে ৷ এনিয়ে একতার সঙ্গে বিমলের বচসা বাধে ৷ এর মাঝেই হঠাৎ বিমল একতার ঘাড়ের কাছে আঘাত করে ৷ এর ফলে গাড়িতেই মৃত্যু হয় একতার ৷ এরপর তাঁর দেহ ডিএম কম্পাউন্ডের কাছে মাটির তলায় পুঁতে দেয় বিমল ৷

ডিএম কম্পাউন্ড এলাকায় প্রশাসনিক কর্তা, বিচারকদের বসবাস ৷ প্রতিটি বাড়ির বাইরে একজন করে নিরাপত্তারক্ষী রয়েছে ৷ এলাকায় সিসি ক্যামেরাও ইনস্টল করা রয়েছে ৷ এখানে সাধারণ মানুষের যাতায়াত খুব একটা নেই ৷ এইরকম নিরাপদ ও হাইপ্রোফাইল এলাকায় জিম ট্রেনার বিমল পাঁচ ঘণ্টা ধরে একটা গর্ত খুঁড়ে সেখানে একতাকে পুঁতে দেয় ৷ অথচ তাকে কেউ দেখতে পায়নি ৷ এই অবস্থায় নিরাপত্তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে ৷

এই প্রসঙ্গে ডিসিপি (পূর্ব) এসকে সিং বলেন, "অভিযুক্ত স্বীকার করে নেয় যে সে ডিএম কম্পাউন্ড এলাকায় ওই মহিলার দেহ পুঁতে রেখেছে ৷ তখন সবার আগে সেখানে পৌঁছে আমরা মৃতদেহটি উদ্ধার করি ৷ এদিকে এই খুনের পর থেকে অভিযুক্ত হোয়্যাটসঅ্যাপ বা ফোন কিছুই ব্যবহার করছিল না ৷ এরপর বেশ কিছুদিন পঞ্জাবের একটি হোটেলেও কাজ করেছে অভিযুক্ত ৷ তার দু'টি ব্যাঙ্ক অ্য়াকাউন্টই বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ ৷"

অভিযুক্ত বিমল সোনি পুলিশকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেছিল ৷ কখনও বলেছে যে একতার দেহ সে গঙ্গায় ফেলে দিয়েছে ৷ সেখানেও পুলিশ তল্লাশি চালায় ৷ কখনও বলেছে যে জাজমুর কাছে কোথাও মৃতদেহ পুঁতে দিয়েছে ৷ পুলিশ সেখানে গিয়েও খুঁজে দেখে ৷ এরপর বিমলকে সত্যি কথা বলার জন্য চাপ দিতে থাকে পুলিশ ৷ তখনই সে স্বীকার করে নেয় যে ডিএম কম্পাউন্ডের কাছে একতার দেহ লুকিয়ে রেখেছে ৷ কিন্তু কীভাবে বিমল সোনি সবার নজর এড়িয়ে ওই হাইপ্রোফাইল এলাকায় পৌঁছল, তার জবাব দিতে পারেনি পারেনি পুলিশ ৷

এদিকে একতার স্বামী রাহুল গুপ্তা জানান, তাঁর ছোট দুই সন্তানকে দেখার কেউ নেই ৷ গত চার মাস ধরে তিনি পুলিশের কাছে স্ত্রীকে খুঁজে দেওয়ার জন্য দৌড়াদৌড়ি করেছেন ৷ পুলিশের উপর তাঁর ভরসা ছিল যে, তারা স্ত্রী একতাকে খুঁজে বের করতে পারবে ৷ এখন রাহুলের একমাত্র দাবি, খুনির ফাঁসির সাজা হোক ৷

কানপুর, 27 অক্টোবর: এ যেন অজয় দেবগণ অভিনীত 'দৃশ্যম' সিনেমারই বাস্তবায়ন ৷ ওই সিনেমায় এক পুলিশ আধিকারিকের ছেলেকে নির্মীয়মাণ থানার তলায় পুঁতে লুকিয়ে রেখেছিল নায়ক ৷ এ দিকে পুলিশ সারা শহর খুঁজেও তার সন্ধান পায়নি ৷ একই রকম ঘটনা ঘটেছে উত্তর প্রদেশের কানপুরে ৷ এক জিম ট্রেনার এক মহিলাকে খুন করে তাঁর দেহটি জেলাশাসকের বাড়ির কাছেই পুঁতে রেখেছিল ৷

গত চার মাস ধরে ওই মহিলার নিখোঁজ ছিলেন ৷ শনিবার রাতে এই ঘটনায় কোতোয়ালি থানার পুলিশ বিমল সোনিকে গ্রেফতার করে ৷ সে সুগার মিল খালওয়া কম্পাউন্ডের গ্রিনপার্ক স্টেডিয়ামের বাসিন্দা এবং পেশায় জিম ট্রেনার ৷ পরে জিজ্ঞাসাবাদে সে পুলিশের কাছে একতা নামের ওই বধূকে খুনের অপরাধের কথা স্বীকার করে নেয় ৷

গত 24 জুন থেকে একতাকে পাওয়া যাচ্ছিল না ৷ তিনি কোতোয়ালি থানা এলাকায় বাস করতেন ৷ ওই জিমটিতে তিনি প্রায়ই যেতেন ৷ তাঁর দুই সন্তান আছে ৷ একতার স্বামী একজন ব্যবসায়ী ৷ ওই জিমটিতে যেতে যেতেই জিম ট্রেনার বিমল সোনির সঙ্গে মহিলার আলাপ হয় ৷ আলাপ থেকেই বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন একতা ও বিমল ৷

4 মাস আগে একতা জিম থেকে বেরিয়ে হঠাৎ নিখোঁজ হয়ে যান ৷ তখন মহিলার স্বামী থানায় গিয়ে এফআইআর দায়ের করেন ৷ কোতোয়ালি থানার পুলিশ এর তদন্ত করছিল ৷ গত 4 মাসে তারা ওই মহিলাকে খুঁজে পায়নি ৷ শনিবার বিমলকে গ্রেফতার করে পুলিশ ৷ জেরার মুখে বিমল স্বীকার করে যে, সেই একতাকে খুন করেছে ৷

পুলিশ সূত্রে খবর, 24 জন একতা জিম থেকে বেরনোর পর তাঁকে নিজের গাড়িতে বসায় বিমল ৷ সে জানায় যে, তাঁর বিয়ের পাকা কথা হয়ে গিয়েছে ৷ তিলকও হয়ে গিয়েছে ৷ এনিয়ে একতার সঙ্গে বিমলের বচসা বাধে ৷ এর মাঝেই হঠাৎ বিমল একতার ঘাড়ের কাছে আঘাত করে ৷ এর ফলে গাড়িতেই মৃত্যু হয় একতার ৷ এরপর তাঁর দেহ ডিএম কম্পাউন্ডের কাছে মাটির তলায় পুঁতে দেয় বিমল ৷

ডিএম কম্পাউন্ড এলাকায় প্রশাসনিক কর্তা, বিচারকদের বসবাস ৷ প্রতিটি বাড়ির বাইরে একজন করে নিরাপত্তারক্ষী রয়েছে ৷ এলাকায় সিসি ক্যামেরাও ইনস্টল করা রয়েছে ৷ এখানে সাধারণ মানুষের যাতায়াত খুব একটা নেই ৷ এইরকম নিরাপদ ও হাইপ্রোফাইল এলাকায় জিম ট্রেনার বিমল পাঁচ ঘণ্টা ধরে একটা গর্ত খুঁড়ে সেখানে একতাকে পুঁতে দেয় ৷ অথচ তাকে কেউ দেখতে পায়নি ৷ এই অবস্থায় নিরাপত্তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে ৷

এই প্রসঙ্গে ডিসিপি (পূর্ব) এসকে সিং বলেন, "অভিযুক্ত স্বীকার করে নেয় যে সে ডিএম কম্পাউন্ড এলাকায় ওই মহিলার দেহ পুঁতে রেখেছে ৷ তখন সবার আগে সেখানে পৌঁছে আমরা মৃতদেহটি উদ্ধার করি ৷ এদিকে এই খুনের পর থেকে অভিযুক্ত হোয়্যাটসঅ্যাপ বা ফোন কিছুই ব্যবহার করছিল না ৷ এরপর বেশ কিছুদিন পঞ্জাবের একটি হোটেলেও কাজ করেছে অভিযুক্ত ৷ তার দু'টি ব্যাঙ্ক অ্য়াকাউন্টই বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ ৷"

অভিযুক্ত বিমল সোনি পুলিশকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেছিল ৷ কখনও বলেছে যে একতার দেহ সে গঙ্গায় ফেলে দিয়েছে ৷ সেখানেও পুলিশ তল্লাশি চালায় ৷ কখনও বলেছে যে জাজমুর কাছে কোথাও মৃতদেহ পুঁতে দিয়েছে ৷ পুলিশ সেখানে গিয়েও খুঁজে দেখে ৷ এরপর বিমলকে সত্যি কথা বলার জন্য চাপ দিতে থাকে পুলিশ ৷ তখনই সে স্বীকার করে নেয় যে ডিএম কম্পাউন্ডের কাছে একতার দেহ লুকিয়ে রেখেছে ৷ কিন্তু কীভাবে বিমল সোনি সবার নজর এড়িয়ে ওই হাইপ্রোফাইল এলাকায় পৌঁছল, তার জবাব দিতে পারেনি পারেনি পুলিশ ৷

এদিকে একতার স্বামী রাহুল গুপ্তা জানান, তাঁর ছোট দুই সন্তানকে দেখার কেউ নেই ৷ গত চার মাস ধরে তিনি পুলিশের কাছে স্ত্রীকে খুঁজে দেওয়ার জন্য দৌড়াদৌড়ি করেছেন ৷ পুলিশের উপর তাঁর ভরসা ছিল যে, তারা স্ত্রী একতাকে খুঁজে বের করতে পারবে ৷ এখন রাহুলের একমাত্র দাবি, খুনির ফাঁসির সাজা হোক ৷

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.