বেতিয়া, 1 অগস্ট: মেয়ের দেহ 6 টুকরো করিয়ে কাটাল বাবা ৷ তার প্রেম মেনে নিতে না পেরে বাবাই এমন ভয়ঙ্কর কাজ করিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে ৷ বিহারের পশ্চিম চম্পারণের বেতিয়ায় এমন ঘটনা ঘটেছে । একজন বাবা কী করে এমন কাজ করতে পারলেন ? কারণ, এই ঘটনায় মেয়ের দেহ ছয় টুকরো করে কাটিয়ে বস্তায় ভরে খালে ফেলে দিয়েছেন তিনি ! মেয়ে অবশ্য তার আগেই আত্মঘাতী করেছে বলে জানা গিয়েছে ।
ঘটনাটি ঘটেছে বেত্তিয়ার চানপাতিয়া থানা এলাকার একটি গ্রামে ৷ জানা গিয়েছে, বাড়ির অমতে ভিন রাজ্যের এক ফুচকাওয়ালার সঙ্গে প্রেম করেন বেতিয়ার এক যুবতী ৷ বিষয়টি জানাজানি হতেই মেয়েকে বকাবকি করেন বাবা ৷ এরপর আত্মহত্যা করে অভিমানী মেয়ে । মেয়ের দেহ নিশ্চিহ্ন করতে লাশ স্থানীয় মাছ বিক্রেতাকে দিয়ে ছয় টুকরো করে কাটান বাবা । এর জন্য 8,500 টাকাও দেওয়া হয় ওই মাছ বিক্রেতাকে । এই ঘটনা সামনে আসার পর পুলিশও বিস্মিত ! অভিযুক্ত বাবা ও তার সহযোগীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ৷
ঘটনাটি সামনে আসে একটি মৃতদেহ উদ্ধারের পর ৷ রবিবার সন্ধ্যায় চম্পারণের মাঝোলিয়া থানা এলাকার মোহাদ্দিপুর মীর টোলার কাছে একটি খাল থেকে এক কিশোরীর লাশ উদ্ধার করা হয় । লাশ টুকরো টুকরো করে বস্তায় ভরা ছিল ৷ লাশের ছয় টুকরো উদ্ধার হলেও, মাথা ছিল না ওই বস্তায় । পুলিশ মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে ৷
পুলিশ গোপন সূত্রে খবর পায়, দেহটি চানপাতিয়া থানার চুহাদী গ্রামের বাসিন্দা বীরেন্দ্র শাহের মেয়ের । এরপর বীরেন্দ্রকে আটক করে পুলিশ। ঘটনার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে প্রথমে কিছু না বললেও, পরবর্তীতে তদন্তের চাপে পুরো বিষয়টি স্বীকার করেন অভিযুক্ত বাবা । বীরেন্দ্র জানান, তাঁর মেয়ে আগেই আত্মহত্যা করে ৷ এরপর লাশ ফেলে দেওয়ার জন্য টুকরো টুকরো করেন তিনি । নিজে হাতে এ কাজ করতে পারবেন না বলে 8,500 টাকা দিয়ে লোক ভাড়া করেন অভিযুক্ত।
বেতিয়া সদর থানার ডিএসপি বিবেক দীপ বলেন, "মাঝৌলিয়া পুলিশ ও চাঁপাটিয়া পুলিশের সহযোগিতায় এই ঘটনাটি জানা গিয়েছে । নিহতের মাথা এখনও উদ্ধার করা যায়নি। পুলিশ খুঁজছে। পুলিশ নিহতের বাবা বীরেন্দ্র শাহ ও তার এক সহযোগী প্রভু শাহকে গ্রেফতার করেছে ।”
এই ঘটনায় অভিযুক্ত বীরেন্দ্র জানান, নভেম্বরে তার মেয়ের বিয়ে হওয়ার কথা ছিল ৷ কিন্তু তার মেয়ে উত্তরপ্রদেশের এক ফুচকা বিক্রেতার সঙ্গে প্রেম করে বসে। এ বিষয়ে তিনি তার মেয়েকে অনেক বুঝিয়েছেন ৷ কিন্তু তাতে কোনও ফল হয়নি। অভিযুক্তের বয়ান অনুযায়ী, 22 জুলাই বীরেন্দ্র তার মেয়েকে এ জন্য বকাঝকা করেছিলেন। এরপর ক্ষোভে আত্মহত্যা করে মেয়ে । অভিযুক্ত বীরেন্দ্র মেয়ের লাশ লুকিয়ে ফেলার কথা ভাবতে থাকেন, যাতে এ ঘটনায় কোনও ভাবেই তিনি অভিযুক্ত না হন ।
বীরেন্দ্র সাহের সহযোগী এই ঘটনায় গ্রেফতার হওয়া দ্বিতীয় অভিযুক্ত প্রভু শাহ জানায়, ধারালো মাছ কাটার বঁটি দিয়ে মেয়েটির দেহ ছয় টুকরো করে। এরপর বস্তায় ভরে খালে ফেলে দেয়। পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদে প্রভু শাহ জানিয়েছে, এ ঘটনায় বীরেন্দ্রর পরিবারের 6 থেকে 7 জন জড়িত, যা নিয়ে পুলিশ তদন্ত করছে ৷