চণ্ডীগড়, 6 ডিসেম্বর: হরিয়ানা ও পঞ্জাবের শম্ভু সীমান্তে বিক্ষোভকারী কৃষকরা আজ দিল্লির উদ্দেশে রওনা হবেন। কৃষক নেতাদের মতে, এবার তারা পায়ে হেঁটে দিল্লি যাবেন। আজ শুক্রবার 101 জন কৃষকের একটি দল দিল্লির দিকে এই পদযাত্রায় অংশ নেবেন বলে খবর ৷ কৃষকরা জানান, সরকারের কোনও পদক্ষেপে তারা ভীত নন। অন্যদিকে, আগামী 9 ডিসেম্বর পর্যন্ত অম্বালার কিছু অংশে মোবাইল ইন্টারনেট পরিষেবা স্থগিত করা হয়েছে। অন্যান্য ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে, বন্ধ রয়েছে স্কুল, জলকামানও মোতায়েন করা হয়েছে ৷
এদিকে দিল্লিতে কৃষকদের পদযাত্রাকে সামনে রেখে কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছে পুলিশ প্রশাসন ৷ হরিয়ানা পুলিশ এবং আধাসামরিক বাহিনীর সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছে। শম্ভু সীমান্তের নিরাপত্তাও বাড়ানো হয়েছে। নতুন করে ব্যারিকেড করা হয়েছে। নেট, ক্যামেরা এমনকি লাউডস্পিকার রাখা হয়েছে সেখানে। এছাড়াও, অম্বালা ও খনুরী সীমান্তে বিএনএস-এর 163 ধারা জারি করা হয়েছে। এখানে পাঁচ বা তার বেশি লোক জড়ো হলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে। হরিয়ানা সরকার সাফ জানিয়ে দিয়েছে, কৃষকরা অনুমতি ছাড়া দিল্লি যেতে পারবেন না। এখনও পর্যন্ত কৃষকরা দিল্লি যাওয়ার অনুমতি পাননি।
অন্যদিকে, কৃষক নেতা সারওয়ান সিং পান্ধের বলেন, "শুধুমাত্র 101 জন কৃষক পায়ে হেঁটে দিল্লির দিকে যাত্রা করবেন। তার তালিকাও প্রকাশ করা হয়েছে। হরিয়ানা সরকার হাইকোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্টে বলেছে যে, কৃষকরা ট্রাক্টর ট্রলি করে এগিয়ে যাবে। আমরা বলছি আমাদের কিছুই থাকবে না, শুধু পতাকা আর প্রয়োজনীয় জিনিস ছাড়া।" কৃষকদের দিল্লি মিছিলের ডাকে সিরসাতেও নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। কৃষকদের আটকাতে ব্যারিকেড বসিয়েছে সিরসা পুলিশ। সিরসার পুলিশ লাইনে কৃষকদের মোকাবিলা করার জন্য পুলিশ কর্মীদের আলাদা প্রশিক্ষণও দেওয়া হয়েছিল। সিরসার বিভিন্ন জায়গায় হরিয়ানা পুলিশের পাঁচ কোম্পানি মোতায়েন করা হয়েছে। বিএসএফের একটি দলও মোতায়েন করা হয়েছে।
দিল্লিতে কৃষকদের পদযাত্রার পরিপ্রেক্ষিতে পঞ্জাব-রাজস্থান সীমান্তেও পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। মুখ চক মোড়ে চার ডিএসপি এবং এক ডজন পরিদর্শক-সহ মোট 500 আধিকারিক মোতায়েন করা হয়েছে ৷ ভারতীয় কিষান একতা-এর সভাপতি লখবিন্দর সিং আউলখ জানান, কৃষকদের দাবি মেনে নেওয়ার পরিবর্তে সরকার রাজ্যে একটা ভিন্ন পরিবেশ তৈরি করছে। এতে সরকারের প্রতি কৃষকদের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছে ৷ কৃষক সংগঠনের দাবি, এমএসপিতে সব ফসল কেনার নিশ্চয়তা দিতে একটি আইন করতে হবে ৷ স্বামীনাথন কমিশনের রিপোর্ট অনুযায়ী, ফসলের দাম নির্ধারণ করতে হবে। ডিএপি সারের ঘাটতি দূর করতে হবে। কৃষক ও খেতমজুরদের ঋণ মুকুব করতে হবে এবং পেনশন দিতে হবে। ভূমি অধিগ্রহণ আইন 2013 ফের কার্যকর করতে হবে। লখিমপুর খেরি ঘটনার দোষীদের শাস্তি এবং মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি নিষিদ্ধ করা উচিত বলেও জানিয়েছে কৃষকরা।
এ ছাড়াও তাদের দাবি, কৃষক আন্দোলনে নিহত কৃষকদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ ও সরকারি চাকরি দিতে হবে। বিদ্যুৎ সংশোধনী বিল 2020 বাতিল করতে হবে ৷ নকল বীজ, কীটনাশক ও সার বিক্রয়কারী কোম্পানির বিরুদ্ধে কঠোর আইন করতে হবে। লঙ্কা, হলুদ ও অন্যান্য মসলার জন্য একটি জাতীয় কমিশন গঠন করতে হবে। আদিবাসীদের জমি লুটপাট করা বন্ধ করতে হবে।