নয়াদিল্লি, 27 জুন: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, স্পিকার ওম বিড়লার পর রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর হাত ধরে আবারও জরুরি অবস্থার প্রসঙ্গ ফিরল দেশের সংসদে। নয়া লোকসভার অধিবেশন বসার পর বৃহস্পতিবার যৌথ সভায় ভাষণ দেন রাষ্ট্রপতি। ভাষণে 1975 সালে জরুরি অবস্থা জারি করার ঘটনাকে সংবিধানের উপর সরাসরি আক্রমণের 'সবচেয়ে বড় এবং অন্ধকারতম অধ্যায়' হিসেবে বর্ণনা করেন তিনি ৷
তাঁর কথায়, "দেশ এই ধরনের অসাংবিধানিক শক্তির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে জয়ী হয়েছে।" সংসদের যৌথ সভায় ভাষণ দেওয়ার সময়, তিনি উল্লেখ করেন, সংবিধান প্রণয়নের সময়, বিশ্বের কিছু শক্তি ভারতকে ব্যর্থতার অন্ধকারে নিমজ্জিত করে রাখতে চেয়েছিল। তবে দুর্ভাগ্যজনকভাবে সংবিধান লাগু হওয়ার পরও এই সংবিধানের উপর একাধিক হামলা হয়েছে।
এদিন রাষ্ট্রপতি বলেন, "আজ 27 জুন । 1975 সালের 25 জুন জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছিল, যা সংবিধানের উপর সরাসরি আক্রমণের সবচেয়ে বড় এবং অন্ধকারময় অধ্যায় । গোটা দেশ ক্ষোভে ফেটে পড়েছিল। কিন্তু প্রজাতন্ত্রের ঐতিহ্যকে পাথেয় করে ভারত অসাংবিধানিক শক্তির বিরুদ্ধে জয়ী হয়েছে।"
তিনি জানান, তাঁর সরকার ভারতের সংবিধানকে 'শুধুমাত্র শাসনের মাধ্যম হিসাবে বিবেচনা করে না ৷ জনসচেতনতার অংশ হিসেবে কাজে লাগাতে চায়। রাষ্ট্রপতির কথায়, " সরকার 26 নভেম্বর দিনটিকে সংবিধান দিবস হিসেবে উদযাপন করা শুরু করেছে ৷" ভাষণের একটি অংশে রাষ্ট্রপতির দাবি, 370 ধারা ছিল বলে জম্মু ও কাশ্মীরে পরিস্থিতি দেশের বাকি অংশের তুলনায় একেবারে ভিন্ন ছিল ৷ বর্তমানে দেশের বাকি সব রাজ্যের মতোই জম্মু ও কাশ্মীরেও ভারতের সংবিধান সম্পূর্ণরূপে কার্যকর হয়েছে ।
রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর আগে উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা 1975 সালে জারি হওয়া জরুরি অবস্থার সমালোচনা করেছিলেন । 24 জুন অষ্টাদশ লোকসভার প্রথম অধিবেশন শুরু হওয়ার আগে সংসদ ভবনে মিডিয়ার উদ্দেশ্যে ভাষণ দেওয়ার সময়, মোদি জরুরি অবস্থাকে ভারতের সংসদীয় ইতিহাসের 'কালো দাগ' হিসেবে অভিহিত করেছিলেন ৷ তিনি উল্লেখ করেন, 1975 সালের জরুরি অবস্থা জারির সময় সংবিধান বাতিল করা হয়েছিল ৷ গোটা দেশ জেলে পরিণত হয়েছিল।
লোকসভার স্পিকার হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার পরপরই, ওম বিড়লা বুধবার অবস্থা জারির সিদ্ধান্তের নিন্দা করেন ৷ এই ঘটনায় কংগ্রেস সদস্যদের প্রতিবাদে সংসদ ভবন মুখরিত হয়ে ওঠে। ওম বিড়লা তাঁর বক্তব্যে স্মরণ করান, 26 জুন, 1975 সালে গোটা দেশ জরুরি অবস্থার নিষ্ঠুর বাস্তবের সম্মুখীন হয়েছিল ৷ কংগ্রেস সরকার বিরোধী নেতাদের জেলে পুড়েছিল ৷ মিডিয়ার উপরও নানা বিধিনিষেধ আরোপিত হয়েছিল। বিচার ব্যবস্থায় থাকা স্বায়ত্তশাসনের পথকেও আটক হয়েছিল । তাঁর সঙ্গে দেখা করে এ নিয়ে নিজের প্রতিবাদের কথা জানান রাহুল গান্ধি ৷ এর আগে বুধবার গাজিয়াবাদের একটি অনুষ্ঠানে জরুরি অবস্থা জারির বিরোধিতা করেন উপ-রাষ্ট্রপতি৷ তিনি বলেন, "কোনও পরিস্থিতিতেই ভারত জরুরি অবস্থার মতো দিন আর দেখবে না।"